নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইমরান মাহমুদ : মাত্র ১৬ বছর বয়সে কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিলো মুশফিকুর রহিমের। গুটি গুটি পায়ে পেরিয়ে গেছেন ১২ টি বছর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের গÐিতে ক্রমাগত ছুটে বেড়িয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। ক্যারিয়ারের প্রতিটি বছর যায়নি সমান তালে। উত্থান-পতন ছিল অন্যসবার মতই। কিন্তু ক্যারিয়ারের এই সময়ে এসে তিনিই এখন বাংলাদেশ দলের নির্ভরতার প্রতীক ২৮৫ ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে এখনো ৯ সেঞ্চুরি আর ৪২ হাফ সেঞ্চুরির মালিক।মাশরাফির পর দেশের হয়ে একটানা একযুগেরও বেশি সময় খেলা ক্রিকেটার তিনি।
২০১১ সালে সব ধরণের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবার ভার পান মুশফিক। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পরিবর্তিত হলেও মুশফিকুর সাদা পোশাকে এখনও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। টেস্টে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ ৩০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক। তার নেতৃত্বেই শ্রীলঙ্কায় নিজেদের শততম টেস্ট খেলে বাংলাদেশ।
গত একযুগে দেশের হয়ে অনেক রেকর্ডের মালিকও বনে গেছেন এই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। ২০১৩ সালে গল টেষ্টে তার হাত ধরেই আসে দেশের হয়ে প্রথম টেষ্ট ডাবল সেঞ্চুরি। দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশী টেষ্টে নেতৃত্ব দেওয়ার মালিকও তিনি। তার ক্যারিয়ারের ৫৪ টেষ্টের ৩০ টিতেই অধিনায়ক ছিলেন তিনি নিজেই। ৫৪ টেষ্টে ৩৫.৪৮ গড়ে তার রান ৩২৬৫! সেঞ্চুরি ৫ টি আর হাফ-সেঞ্চুরি ১৭ টি।
ওয়ানডেতে ১৭২ ম্যাচে ৩১.৮৪ গড়ে তার রান ৪২৩৫! চার সেঞ্চুরির সাথে রয়েছে ২৪ হাফ-সেঞ্চুরি। ২০১৪ সালে ভারতের সাথে খেলেছেন ১১৭ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। টি২০ ক্যারিয়ারে যদিও বলার কিছু নাই। ৫৯ ম্যাচে ১৭.২৮ গড়ে ৭২৬ রান করেছেন মুশফিক। ৫৪ টেষ্টে তার ৮৯ ক্যাচের সাথে রয়েছে ১২ টি স্ট্যাম্পিং। বাংলাদেশী কোন উইকেট কিপারের সর্বোচ্চ। ওয়ানডেতেও ১৭২ ম্যাচে ১৮০ ডিসমিসাল নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে গেছেন নিজেকে।
যেখানে ক্যারিয়ারের শুরু, কাকতালীয়ভাবে এক যুগ পূর্তির দিনেও সেই ইংল্যান্ডেই অবস্থান করছেন টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক। এমন দিনে ভক্তদের অভিবাদন জানাতে গিয়ে কথা বলেছেন ১২ বছর পূর্তি সম্পর্কে, ‘সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। আমার পরিবার, বন্ধু-সতীর্থরা, বিশেষকরে বাংলাদেশ ক্রিকেটভক্তদের। যেভাবে সবাই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, আমি মুগ্ধ। এই দিনটা অবশ্যই আমার জন্য বিশেষ কিছু। এই মাসটাই আমার জন্য বিশেষ কিছু। এই মাসে আমার জন্ম, এই মাসেই আমার জাতীয় দলে টেস্ট অভিষেক।’
হঠাৎ ডাক পড়লো দলে
২০০৫ সালের ঐ সময়ে অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে ছিলেন ১৬ বছর বয়সী মুশফিকুর রহিম। কোচ এসে জানিয়েছিলেন ইংল্যান্ড থেকে জাতীয় দলের হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার ডাক এসেছে। স্বপ্নেও ভাবেননি ইংল্যান্ডেই এতো অল্প বয়সে অভিষেক হয়ে যাবে। তবে সেটাই হয়েছিলো। লর্ডসে ১৬ বছর বয়সী মুশফিক সাদা পোশাকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
ভুলে যাবার মতো অভিষেক
প্রথম ইনিংসে ম্যাথু হ্যাগার্ডের বলে বোল্ড হয়েছিলেন ১৯ রান করার পর। দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ ৩ রান করা মুশফিককে দেখিয়েছিলেন সাজঘরের পথ। মুশফিকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের ম্যাচে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছিলো ইনিংস ও ২৬১ রানে।
শতক পেতে ৫ বছরের অপেক্ষা
২০০৫ সালে সাদা পোশাকে অভিষেক হবার পর ২০০৬ সালেই ওয়ানডে (৬ আগস্ট, ২০০৬) ও টি-টোয়েন্টি (২৮শে নভেম্বর, ২০০৬) অভিষেক হয় মুশফিকের। তবে সব ব্যাটসম্যানের আরাধ্য শতকের দেখা মিলেছিলো ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে। চট্টগ্রামে ১০১ রানের ইনিংস খেলে নিজের প্রথম শতকের দেখা পান মুশফিকুর রহিম। এরপর টেস্টে আরো চারবার এবং ওয়ানডেতে চারবার শতক ছুঁয়ে ব্যাট উঁচিয়ে ধরেছেন মুশফিক।
হাতে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী
২০১১ সালে সব ধরণের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবার ভার পান মুশফিক। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পরিবর্তিত হলেও মুশফিকুর রহিম সাদা পোশাকে এখনও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। টেস্টে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ ৩০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক।
গলে গড়লেন ইতিহাস
২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার গলে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০০ রান করেন মুশফিক। ৪৩৭ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩২১ বলে ২২টি চার ও ১টি ছয়ে ঠিক ২০০ রান করে আউট হন মুশফিক।
নড়বড়ে থেকে নির্ভরযোগ্য
১৯, ৩, ২, ০, ৯, ৮০, ১১*, ১, ৭, ৬- প্রথম ১০ টেস্ট ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের রান। প্রথম ১০ ওয়ানডে ইনিংসে (ব্যাট করেছেন এমন) মুশফিকের রান ১৮*, ৬, ১, ২৭, ৪২, ৫৭, ৫৬*, ৬, ২* ও ০। শুরুর দিকে বেশ নড়বড়ে থাকা ব্যাটসম্যান মুশফিক আজ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইনআপের সবচেয়ে বড় নির্ভরতার নাম। ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ তকমাটা গায়ে লেগেছে অনেকদিন হলো। সবধরণের ওয়ানডেতে মুশির সর্বশেষ ৯ ইনিংস- ৪৫*, ৩*, ৫৫, ১৩, ৪১, ৪৪, ১৬, ১৩৪ ও ৭৫*।
ডিসমিসালে সবার উপরে
টেস্ট (১০০), ওয়ানডে (১৭৮), টি-টোয়েন্টি (৪৬), সব ধরণের ক্রিকেটেই বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ডিসমিসালের মালিক মুশফিকুর রহিম। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ক্যাচ, স্টাম্পিং সবকিছুতেই ছাড়িয়েছেন খালেদ মাসুদ পাইলটদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।