নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মোঃ আলতাফ হোসেন : প্রিয় শিক্ষার্থীরা শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। আর সেই খেলাধুলা যদি হয় মার্শাল আর্ট তা হলেই তো আর কোনো কথাই নেই। কারাতে বা মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের পূর্বে কিছু ব্যায়াম করে নিলে ভালো হয়। কারণ যে কোনো খেলাধুলার পূর্বেই ওয়ার্মআপ এবং ব্যায়াম করার প্রয়োজন হয়। অনেকেই ব্যায়াম শুরু করার আগে ওয়ার্মআপ করেন না। কিন্তু এটি শরীরের জন্যে খুবই ক্ষতিকর বা বিপজ্জনক। কারণ ব্যায়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ওয়ার্মআপ। ওয়ার্মআপের মাধ্যমে শরীর ও মন দুটোকেই ব্যায়ামের জন্যে তৈরী করা হয়। যারা স্বাস্থ্য সচেতন তাদের জন্য আমাদের নিয়মিত আয়োজন ‘আত্মরক্ষায় কারাতে। অনিবার্য কারণবশতঃ আজকের ধারাবাহিকটি খেলাধূলা ফিচার পাতায় না দিয়ে নিয়মিত পাতায় দেয়া হলো। ধারাবাহিক প্রতিবেদনে গত সপ্তাহে নবম পর্বে আমরা শিখেছিলাম উল্কাগিরী অর্থাৎ সাইড কিক। আজ দশম পর্বে শিখবো মাউশিগিরী।
মাউশিগিরী.......
মাউশিগিরী শুরু করার পূর্বে আগের লেসনগুলো করে নিলে ভাল হয়। আগের লেসন শেষ হলে মাউশিগিরীর জন্য প্রস্তুত হবে প্রশিক্ষণার্থী। ঠিক আগের মতই যে কোন লেসন শুরু করার পূর্বে কিবাডাসি পজিশনে থাকতে হবে। আর কিবাডাসি পজিশনে আসার পূর্বে সালাম, বো করে তারপর কিবাডাসি পজিশনে আসতে হবে প্রশিক্ষাণার্থীকে। দুই হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় কোমরে থাকবে দুই হাটুর উপর ভর করে। হাটু দুটি ভাঙা অবস্থায় পরিমাণ মতো একটু ফাঁক করে দাঁড়াতে হবে, যাতে শরীর সোজা অবস্থায় থাকে এবং হাটুর উপর শরীরের ভারসাম্য থাকে। এ অবস্থাকে কিবাডাসি পজিশন বলে। প্রথমে ডান পায়ে মাউশিগিরী মারার সময় কোমরে থাকা মুষ্টিবদ্ধ হাত দুটি ক্রস করে ঠিক সায়মন সখি পজিশনে থাকবে সেই সঙ্গে ডান পা’টি বাম পায়ে স্পর্শ করে পিছনের দিকে চলে যাবে। বাম হাতটি বাম হাটুর উপর এবং ডান হাতটি ডান কোমড়ে থাকবে। এখান থেকে হোইস শব্দের মাধ্যমে মাউশিগিরী মারতে হবে। মাউশিগিরী মারার সময় প্রশিক্ষণার্থীর হাত দুটো আর্টফুল অবস্থায় থাকবে। অর্থাৎ বাম হাতের উপরে থাকবে বøক অবস্থায়। একই সঙ্গে ডান পায়ের পাতা দিয়ে সজোরে কিক বা লাথি মারতে হবে। আর এভাবে কিবাডাসি থেকে সরাসরি ঘুরিয়ে লাথি বা কিক করাকে মাউশিগিরী বলে। মাউশিগিরী কিক বা লাথির মধ্যে এটা চতুর্থ। ইতোপূর্বে কিঙ্গারী, উসাঠাকিরী ও উল্কাগিরী আমরা শিখেছি। এই পর্বে শিখছি মাউশিগিরী। প্রথামে ডান পায়ে মাউশিগিরী করা হয়েছিল এবার বাম পায়ে একি কায়দায় মারতে হবে মাউশিগিরী। মারার পূর্বে সায়মন সখি পজিশন থেকে আবার কিবাডাসি পজিশনে আসতে হবে। কিবাডাসি পজিশন থেকে এবার বাম পা’টি ডান পায়ে টাচ করে সোজা পিছনের দিকে চলে যাবে একই সঙ্গে ডান হাতটি থাকবে হাটু ভাঙ্গা ডান পায়ের উপর এবং বাম হাতটি থাকবে বাম কোমড়ে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় অর্থাৎ সায়মন সখি পজিশনে। এবার বাম পায়ে মাউশিগিরী ঠিক ডান পায়ে যে ভাবে মারা হয়েছিল একই কায়দায় মারতে হবে। মাউশিগিরী মারার সময় অবশ্যই প্রশিক্ষণার্থীকে হোইস শব্দ করে মারতে হবে। এবার মারার সময় বাম হাতটি ডান হাতের উপরে আর্টফুল অবস্থায় অর্থাৎ বøক অবস্থায় থাকবে একই সাথে বা পা’টি ঘুরিয়ে সজোরে পায়ের পাতা দিয়ে কিক বা লাথি মারতে হবে। শিক্ষার্থীকে মনে রাখতে হবে যে, যতবার মাউশিগিরী মারবে ডান পা অথবা বাম পা ততোবারই হোইস শব্দের মাধ্যমে মারতে হবে এবং শরীর ও পায়ের পাতা আর্টফুল অবস্থায় একই সমান্তরাল ভাবে থাকবে। এভাবে পা বদল করে একাধিক বার মাউশিগিরী করে নিলে ভাল হয়। কারণ যত বেশি অনুশীলন করবে শিক্ষার্থী ততো বেশী পারফেক্ট হবে তার প্রতিটি লেসন। মাউশিগিরী অনুশীলনের মাধ্যমে হাত ও পায়ের কৌশল রপ্ত হয় এবং বিশেষ করে পায়ের শক্তি বৃদ্ধিতে মাউশিগিরীর জুরি নেই। সেই সঙ্গে একজন প্রতিযোগী মাউশিগিরী ব্যবহারের মাধ্যমে তার প্রতিপক্ষকে অতি সহজেই ঘায়েল করতে পারবে। হাতের চেয়ে পায়ের শক্তি কয়েকগুণ বেশি। শুধু তাই নয় হাতের চেয়ে পা দ্বারা আঘাত করলে অর্থাৎ মাউশিগিরী মারলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা সহজ হয়। কারণ মাউশিগিরীর মাধ্যমে বেশ দূরত্ব নিয়ে প্রতিপক্ষকে কিক বা লাথি মারা যায়, যা হাতের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ হাতের চেয়ে পায়ের শক্তিই শুধু বেশি নয় দূরুত্বের দিক থেকে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম মাউশিগিরী অনুশীলনের মাধ্যমে।
লেখক : সাবেক জাতীয় ক্রীড়াবিদ, কারাতে কোচ ও
চেয়ারম্যান, মানিকগঞ্জ গ্রীণ ক্লাব
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।