Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ফ্রান্সের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর অসামান্য প্রেমকাহিনী

এ যুগের রহিম বাদশাহ-রূপবান

| প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : প্রেম মানে না কোন ধর্ম, নীতিকথা। প্রেমের টানে মানুষ ঘর ছাড়ে, ভুলে যায় জাত-পাত, বয়সের ব্যবধান, এমনই এক অনবদ্য প্রেম কাহিনীর বাস্তব রূপ ফ্রান্সের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
বয়সে ২৫ বছরের ব্যবধান, শিক্ষিকা ব্রিজিত থনিওর প্রেমে পড়েন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ১৭ বছরের কিশোর ম্যাক্রোঁ সাহস করে তার মনের কথা জানিয়ে দেয় শিক্ষিকাকে। খানিকটা অবাক হলেও ছাত্রের কিশোর বয়সের আবেগ মনে করে কথাটি হেসে উড়িয়ে দেন ব্রিজিত। কিন্তু ম্যাক্রোঁ ছিলো অনড়। ২০০৭ সালে ঠিকই তিনি ব্রিজিতকে বিয়ে করেন। এসময় ছাত্র ম্যাক্রোঁর বয়স ছিল ২৯, আর ব্রিজিতের ৫৪। ব্রিজিতের বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়ার পর তার তিন সন্তানকে সম্মতিতে এনেই বিয়ে করেছেন ম্যাক্রোঁ। অসম বয়সের জুটি হিসেবে গ্রামবাংলার জনপ্রিয় যাত্রাপালা ‘রহিম বাদশাহ ও রূপবান’-এর সেই ব্যতিক্রমী কাহিনীর সঙ্গেও যেন এর খানিকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
বর্তমানে ৩৯ বছর বয়সী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্ভবত ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। আর সে ক্ষেত্রে ফার্স্ট লেডি হবেন তারই সেই শিক্ষিকা ব্রিজিত থনিও, বয়স এখন যার ৬৪ বছর। এই দম্পতির অসম প্রেমের গল্প তুলে ধরেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
গত রোববার অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়েছেন ১১ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মধ্যপন্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ২১ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে এর পরের অবস্থানে কট্টর ডানপন্থী নেতা মারি লে পেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দু’জনের কেউই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফার ভোটযুদ্ধে নামতে হচ্ছে তাদের। আগামী ৭ মে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে।
ম্যাক্রোঁ-ব্রিজিতের অসম প্রেমকাহিনী নিয়ে ম্যাক্রোঁ পরিবারে ওই সময় বেশ অশান্তি হয়েছিল। সেসব কথা উঠে এসেছে অ্যান ফোলদার লেখা ‘ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ : অ্যা পারফেক্ট ইয়ং ম্যান’ বইতে। সেখানে বলা হয়েছে, ম্যাক্রোঁর মা-বাবা ছেলের এই সম্পর্ক মেনে নেননি। কারণ, ব্রিজিত তখন বিবাহিত আর তিন সন্তানের জননী। ছেলের বয়স ১৮ না হওয়া পর্যন্ত তার কাছ থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন বাবা। ব্রিজিত কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে তাকে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমি আপনাকে কোনো প্রতিশ্রæতি দিতে পারছি না।’
তবে কবে একতরফা প্রেম দু’জনের হয়ে ওঠে, তা স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে ব্রিজিতের বক্তব্য, ‘কেউ কোনো দিন জানবে না, কখন থেকে আমাদের গল্প একটি প্রেমের গল্পে পরিণত হয়েছে। এটা শুধুই আমাদের। আর এটাই আমাদের গোপন রহস্য’।
ব্রিজিতের বড় মেয়ে অজি যেমনটা বলছিলেন, ‘বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আমাদের বাড়ি আসেন। বলেন, তোমাদের মাকে আমি বিয়ে করতে চাই। এটা বলা খুবই কঠিন ব্যাপার ছিল। আমরা মেনে নেব কি না, সে ঝুঁকি তো ছিলই। তবে তিনি আমাদের না জানিয়ে কিছু করতে চাননি; বরং আমাদের সমর্থন চেয়েছিলেন।’
বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সে নারীর চেয়ে পুরুষ বড়, সমাজের চোখে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু নারী যখন পুরুষের চেয়ে বয়সে বড় হন, তখন সেটা নিয়ে নানা কথা হয়। এই সমস্যায় পড়তে হয়েছে ম্যাক্রোঁ-ব্রিজিত দম্পতিকেও। ফিলিপ বেঁসন নামে এই দম্পতির এক বন্ধু বলেন, বিয়ের পর অনেক বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের; এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও। তবে তারা দমে যাননি। এভাবেই চলেছ তাদের অনবদ্য প্রেমকাহিনী।



 

Show all comments
  • রাসেল ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:৫৩ এএম says : 0
    দু'জনের প্রতি রইলো অসংখ্য শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ