নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : লক্ষ্যটা মাত্র ২৩৪। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ফর্মে তাকা মুমিনুল শেষ ১০ ওভারে ৬ উইকেট হাতে থাকা বাংলাদেশের সেটা নেমে এলো ৫৫ রানে। সেখান থেকে শেষ দুই ওভারে জয়ের আরো কাছে মুমিনুলের দল, দরকার মাত্র ১৪। শেষ ওভারে সেটি নেমে এলো মাত্র ৭ রানে। কানায় কানায় পূর্ণ কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ছোট্ট গ্যালারিটা তখন শ্বাসরুদ্ধকর অপেক্ষায়। জয়ের জন্য শেষ পর্যন্ত ১ বলে ২ রানের সমীকরণটা কি মেলাতে পারবেন সাইফ উদ্দিন? গোলাম মুদাসসরের ফুল টসটা চালাতে পারতেন এই টেলএন্ডার। কিন্তু তিনি দেখে-শুনে নিলেন ১ রান! ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে রোমাঞ্চকর আর উত্তেজনায় ঠাসা বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচটা হলো টাই! আর যেন জয়োল্লাসে ফেটে পড়লো গোটা পাক শিবির। গতকাল সবদিক থেকেই এক বিন্দুতে মিলেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ ও পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩। ওভার, উইকেট, রান, সবই সমান। দুই দলই ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৩। তবে সমান ৫ পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে এগিয়ে থাকায় গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চারে উঠল পাকিস্তান। বাংলাদেশ সেমিতে উঠল গ্রæপে দ্বিতীয় হয়ে। আগামীকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বি-গ্রæপ রানার্স আপ স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেমিফাইনালে মাঠে নামবে এ-গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা। একই দিন চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বি-গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান লড়বে এ-গ্রæপ রানার্স আপ আফগানিস্তানের।
কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকালে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। নতুন বলে সাইফ উদ্দিন ফিরিয়ে দেন পাকিস্তানের দুই ওপেনারকে। আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ওপেনার ইমাম-উল-হককে ১৩ রানে এলবিডবøু করে সাইফ উদ্দিন। দ্রæত সাফল্য পান দুই স্পিনার নাসুম আহমেদ ও নাঈম হাসানও। ৩৫ রানে পাকিস্তান হারায় ৪ উইকেট। সেখান থেকে পাকিস্তানকে টানেন হারিস সোহেল ও হাম্মাদ আজম। হাম্মাদকে (৩০) ফিরিয়ে ৮৬ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙেন আবুল হাসান। দুটি করে চার ও ছক্কায় সোহেল করেন ৬৩। তবে পাকিস্তান দুশ’ ছাড়াতে পারে মূলত হুসাইন তালাতের ব্যাটে। সাতে নেমে ৪৬ বলে ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার। নয়ে নেমে ২২ রানের ইনিংসে শেষ দিকে সঙ্গ দেন জাফর গোহার। শুরুটা যেমন ছিল, তাতে শেষ পর্যন্ত ২৩৩ রান নিশ্চয়ই ছিল পাকিস্তানের প্রত্যাশার বেশি।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ছিল বাজে। ২৪ রানের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার। দলকে এগিয়ে নেয়ার ভার নিজের কাঁধে নেন মুমিনুল হক। তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হাসান শান্তকে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল। ৩০ রান করে শান্ত আউট হওয়ার পর নাসির হোসেন ফেরেন মাত্র ৬ রানেই। তবে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে আবার দলকে পথে ফেরান মুমিনুল। শেষ ১০ ওভারে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৫৫ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু মুমিনুলকে হারিয়ে পথ হারানোর শুরু। ব্যাট হাতে ভোগানো তালাত বল হাতেও বাংলোদেশকে বড় ধাক্কা দেন মুমিনুলকে ৭৫ রানে বোল্ড করে। ভাঙে ৭৩ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। এরপর আফিফ হোসেন ফেরেন দ্রæতই। পঞ্চাশ পেরিয়ে আউট হয়ে যান মিঠুনও। দু’জনই জাফর গোহারের বাঁহাতি স্পিনের শিকার। পরে পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি আবুল হাসান। সাইফ উদ্দিন টিকে ছিলেন। কিন্তু ২৪ বল খেলেও মারতে পারেননি বাউন্ডারি। পারলেন না শেষ বলে ২ রান নিতেও। জিতলো না কেউই, ম্যাচ হলো টাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ : ৫০ ওভারে ২৩৩/৮ (ইমাম ২৩, সোহেল ৬৩, রিজওয়ান ১২, হাম্মাদ ৩০, তালাত ৫৭*, বিলাল ১১, গোহার ২২, উসামা ১*; সাইফ উদ্দিন ৩/৫৪, আবুল হাসান ২/৪০, নাঈম ১/৩০, নাসুম ২/৫৭, নাসির ০/৪৭)। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩: ৫০ ওভারে ২৩৩/৮ (সাইফ ১০, আজমির ১২, মুমিনুল ৭৫, শান্ত ৩০, নাসির ৬, মিঠুন ৫৩, আফিফ ১, সাইফ উদ্দিন ১৮*, আবুল হাসান ৯, নাঈম ৪*; তালাত ২/৪১, মুদাসসর ১/৩০, বিলাল ১/৩০, গোহার ২/৪০, উসামা ২/৫৮, সোহেল ০/১৬)।
ফল : ম্যাচ টাই। ম্যাচ সেরা : হুসাইন তালাত (পাকিস্তান)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।