নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রথম সেশনে দুই উইকেট, শেষ সেশনে দুটি। মাঝের সেশনে কোনো উইকেট পড়েনি। পুরো দিনে উইকেট পড়ল ৪টি, রান হলো ২২৬। দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৭৩ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ, এখনো হাতে ৪ উইকেট। দলের ইনিংস ৪০০ রান পেরিয়ে গেছে। কিউই সফরে যাওয়ার আগে এমন একটি দিন কেবল দিবাস্বপ্নেই দেখা যেত। এবার সেটিই কঠিন বাস্তব। তবে এমন দিনের মিশে থাকছে ‘অল্পের’ আক্ষেপ। কারণ যে দুজনের কারণে এমন সুখময় পরিস্থিতি তারা নিজেদের ইনিংসে যে দিতে পারলেন না পূর্ণতা। লিটন দাস ও মুমিনুল হক তাই শীতের সকাল মিষ্টি রোদে রাঙালেন আবার হাহাকারও তৈরি করলেন।
মাউন্ট মাঙ্গানুই টেস্টে টানা আরেকটি দিন নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ১৫৬ ওভারে ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে গতকাল দিন শেষ করেছে মুমিনুল ব্রিগেড। মেহেদী হাসান মিরাজ ২০ ও ইয়াসির আলী ১১ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। তবে ভালোরও তো শেষ নেই! সে কারণেই হয়তো, তৃতীয় দিনের শেষে যখন পেছনে চোখ যায়, বারবার নজর আটকে যায় শেষ সেশনের ওই ২৯ বলের ব্যবধানে হারানো দুই উইকেটে। বারেবারে আরও ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখিয়ে হঠাৎই গুটিয়ে যাওয়ার গল্প তো বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন নয়, লিটন আর মুমিনুলের উইকেট দুটিও যেন সে অনুভূতিই দিয়ে গেল। দলকে শক্ত অবস্থায় এনে দেওয়ার এক কারিগর অধিনায়ক মুমিনুল থামেন ২৪৪ বলে ৮৮ রানে। চোখ ধাঁধানো ব্যাট করতে থাকা আরেক কারিগর লিটন ১৭৭ বলে ৮৬ রান করে ছুঁড়ে দেন উইকেট। আরও একটি টেস্ট শতক থেকে দুজনেই ফেরেন হাত ছোঁয়া দূরত্বে।
লিটন ছিলেন বরাবরের মতই নান্দনিক। শুরু করেন অনেকটা ওয়ানডে ঘরানায়। প্রায় বলে রানে করে নিচ্ছিলেন তিনি। চল্লিশের ঘর পেরিয়ে যাওয়ার পর একটু গুটিয়ে রাখেন নিজেকে। পঞ্চাশ পেরিয়ে ফের মেলেন ডানা। মুমিনুল শুরু থেকেই ছিল সতর্ক। দিনের প্রথম ঘন্টায় কেবল ১ রান নিয়েছিলেন তিনি। ৯ রানে ওয়েগনারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচও দিয়েছিলেন। নো বলের কারণে বেঁচে যান বাংলাদেশ কাপ্তান। দিনের শুরুটা হয় মাহমুদুল হাসান জয়ের আউটে। ৭৮ রান করা এই ওপেনার আগের দিনের মতো দৃঢ়তা আর এদিন দেখাতে পারেননি। ক্রিজে নেমেই ছটফট করছিলেন। ওয়েগনারের অনেক বাইরের বল তাড়া করে গালিয়ে ক্যাচ দিয়ে থামে তার ছটফটানি। মুশফিকুর রহিম ক্রিজে এসেও ছিলেন ধীরস্থির। থিতু হতে নেন অনেক সময়। তবে লাভ হয়নি। ৫৩ বলে ১২ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফ্লিকের মতো করতে গিয়ে লাইন মিস করে হন বোল্ড।
লাঞ্চের আগে বেশ মন্থর গতিতে খেলেছিল বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগে ২৬ ওভারে খেলে ২ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ৪৫ রান। লাঞ্চের পরের ২৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে আসে আরও ৮৭ রান। লাঞ্চের পর নেমে নিউজিল্যান্ড পেসাররা বেশ কিছু আলগা বল দেন, পুরো ফায়দা তুলে নেয় বাংলাদেশ। ক্রিজে নেমেই স্বভাবসুলভ গতিতে দ্রুত রান আনতে থাকেন লিটন। শম্ভুক গতি ভেঙ্গে মুমিনুলও বাড়ান রানের গতি।
দ্বিতীয় সেশন শেষে নিউজিল্যান্ড থেকে ২১ রান পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। চা-বিরতির পর সেই রান চলে আসে দ্রুত। লিটন-মুমিনুল যেভাবে খেলছিলেন মনে হচ্ছিল না আর কোন উইকেটই পড়বে। বিরামহীন একের পর এক স্পেলে বল করেও তাদের টলাতে পারছিলেন না ওয়েগনার। একাধিক স্পেলে বল করেও বিফল হন টিম সাউদি। বোল্ট প্রথম স্পেলে উইকেট পেলেও পরে তিনিও সুবিধা করতে পারছিলেন না। তবে দিনের শেষ ভাগে কাজের কাজ করলেন এই বাঁহাতিই। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৫৮ রান আসার পর বোল্টের ভেতরে ঢোকা বলে পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। লিটন অবশ্য ফেরেন বাজে শটে। বোল্টের অনেক বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। প্রথম সেশনের মতো শেষ সেশনেও ওই দুই উইকেট। সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩১ রান এনেছেন ইয়াসির আলি রাব্বি ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ইয়াসির ১১ আর মিরাজ খেলছেন ২০ রান নিয়ে। অন্তত দেড়শো রানের লিড এনে দিতে চতুর্থ দিন সকালে এই দুজনের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। আর ৪ ওভার পরই তৃতীয় নতুন বল পাবে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের বড় লিড নেওয়ার আশার পথে সেটিও যে চোখ রাঙিয়ে তাকায়!
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৩২৮।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৫৬ ওভারে ৪০১/৬ (সাদমান ২২, জয় ৭৮, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮৮ মুশফিক ১২, লিটন ৮৬, ইয়াসির ১১*, মিরাজ ২০*; সাউদি ০/৯৪, বোল্ট ৩/৬১, জেমিসন ০/৭২, ওয়াগনার ৩/৯৮, রবীন্দ্র ০/৬৪) তৃতীয় দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।