নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস আউট হতেই বাংলাদেশের ফিল্ডাররা খানিকটা উদযাপন শেষে ঘিরে ধরলেন তাকে। তার সঙ্গে করমর্দন করলেন, পিঠ চাপড়ে দিলেন সবাই। শিকারি নাঈম হাসানও ছুটে গিয়ে অভিনন্দন জানালেন শিকারকে। কিন্তু ম্যাথিউসের কী তখন আর এসবে মন ভেজার ‘মুড’ আছে! সুবাস পেয়েও হারিয়ে ফেললেন ডাবল সেঞ্চুরি। নিজের ওপর রাগ, আফসোস, হতাশা সবকিছুই চেপে বসার কথা তার।
ক্রিকেট কখনও কখনও এমনই নির্মম। ৫৭৮ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে কখনও কখনও আক্ষেপ হয় আরেকটু সময় থাকতে না পারার। ১৯৯ রান করার তৃপ্তির চেয়েও বড় হয়ে ওঠে ১ রান করতে না পারার আক্ষেপ। সেই অম্ল-মধুর স্বাদই পেলেন ম্যাথিউস। একটি জায়গায় তিনি হয়ে গেলেন প্রথম। বাংলাদেশের মাঠে এই প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান আউট হলেন ১৯৯ রানে। তার ‘প্রথম’ হওয়ার যন্ত্রণা শেষ নয় এখানেই। ২০০৯ সালে ভারতের বিপক্ষে মুম্বাই টেস্টে ৯৯ রানে রান আউট হয়েছিলেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৫ বছরের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান, যিনি আউট হয়েছেন ৯৯ ও ১৯৯ রানে! তবে এমন ‘প্রথম’ নিশ্চয়ই চাননি ম্যাথিউস!
শ্রীলঙ্কার শেষ জুটি তখন উইকেটে, নাঈম হাসানের ওভারের শেষ বল। ১৯৯ রানে থাকা ম্যাথিউসের সিঙ্গেল আটকাতে মিড অন, মিড অফ, পয়েন্ট ফিল্ডার বৃত্তের ভেতরে আনলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মুমিনুল হক দাঁড়ালেন শর্ট মিড উইকেটে আর মিড উইকেট থেকে থেকে সাকিব আল হাসানকে দাঁড় করালেন স্কয়ার লেগে। ওই বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগেই সহজ ক্যাচ দিলেন ম্যাথিউস। টেস্টে একটি ডাবল সেঞ্চুরি তার আছে। তবে যত ডাবল সেঞ্চুরিই থাকুক, ১ রান দূরে থমকে গেলে সেই বেদনার জ্বালা মনকে পোড়ায় তীব্রভাবেই।
বাংলাদেশে ম্যাথিউস প্রথম হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে আগে আরেকজন পেয়েছেন ১৯৯ রানে আউট হওয়ার স্বাদ। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে ডিন এলগার এই রানে আউট হয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানের বলে। সব মিলিয়ে টেস্ট ইতিহাসে ১৯৯ রানে থমকে যাওয়া ব্যাটসম্যান এখন ১৪ জন। এর মধ্যে আউট হয়েছেন ১২ জন। ১৯৯ রানে অপরাজিত থাকার স্বাদ পেতে হয়েছে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার ও কুমার সাঙ্গাকারাকে। ১৯৯ রানে আউট হওয়া প্রথম ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের মুদাসসর নজর, ১৯৮৪ সালে ভারতের বিপক্ষে ফয়সালাবাদে। ম্যাথিউসের আগে সবশেষ ছিলেন ফাফ দু প্লেসি, ২০২০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়নে। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১৯৯ রানে আউট হয়ছেন ম্যাথিউসের আগে কেবল সনাৎ জয়াসুরিয়া, ভারতের বিপক্ষে ১৯৯৭ সালে।
এই টেস্টেই ম্যাথিউসের সঙ্গে প্রথম দিন ভালো জুটি গড়া কুসল মেন্ডিসেরও বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রায় এরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে দুই দফায়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে গলে তিনি আউট হন ১৯৪ রানে, ২০১৮ সালে এই চট্টগ্রামেই আউট হন ১৯৬ রানে! ১৯০ ছুঁয়েও বাংলাদেশের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি না করতে পারা ব্যাটসম্যান আছেন আর কেবল দুজন, ২০০৫ সালে লর্ডসে ১৯৫ করে আউট হন ইংল্যান্ডের মার্কাস ট্রেসকোথিক, ২০১১ সালে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন ব্রাভো বিদায় নেন ১৯৫ রানে।
রানের দিক থেকে আক্ষেপে পুড়লেও একটি জায়গায় অবশ্য গর্ব করতেই পারেন ম্যাথিউস। ৫৭৮ মিনিট ক্রিজে কাটিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে মিনিটের হিসেবে এর চেয়ে লম্বা ইনিংস আছে কেবল আর দুটি। গত বছর পাল্লেকেলেতে ২৪৪ রানের ইনিংসের পথে শ্রীলঙ্কারই দিমুথ করুনারত্নে ব্যাট করেছিলেন ৬৯৮ মিনিট। ২০১২ সালে খুলনায় ২৬০ রানের ইনিংসের পথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলস ক্রিজে ছিলেন ৬১৮ মিনিট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।