নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : লিওনেল মেসির নিষেধাজ্ঞায় তোলপাড় বিশ্ব ক্রিড়াঙ্গন। তার শাস্তির বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার কোচ, ক্লাব, সতীর্থ, দেশের ফুটবল কর্তাসহ সাবেকরাও। প্রত্যেকেরই একই অভিমত লঘু পাপে গুরুদন্ড দেওয়া হয়েছে মেসিকে। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া মিলছিল না আর্জেন্টাইন ফুটবল গ্রেট ডিয়েগো ম্যারাডোরার কাছ থেকে। মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন মেসিও। অবশেষে মুখ খুললেন দু’জনই।
আর্জেন্টিনা অধিনায়কের দাবি, তিনি রেফারিকে গালি দেননি। হতাশা থেকে স্বগতোক্তি করেছেন মাত্র। আর্জেন্টাইন দৈনিক লা ন্যাসিওন মেসির উদ্ধৃতি দিয়ে এমনটিই দাবি করেছে। তাদের ভাষ্যমতে মেসি বলেছেন, ‘আমার মন্তব্য কখনোই রেফারিকে উদ্দেশ করে ছিল না। আমার মন্তব্যগুলো আমি নিজে নিজেই আওড়াচ্ছিলাম উদ্দেশহীনভাবে।’
মেসির সাবেক গুরু ও ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী নায়ক ম্যারাডোনা মুখ খুলেছেন বলতে গেলে বাধ্য হয়েই। ফিফার বর্তমান সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে তার বন্ধুত্বের কথা সবারই জানা। সেই সুবাদে বিশ্ব ফুটবল কর্তাসংস্থায় শুভেচ্ছাদূতের একটা চাকরিও মিলেছে তার। গণমাধ্যমে এমন খবরও ভেসে বেড়াচ্ছে, ম্যারাডোনার কারসাজিতেই নাকি এত গুরুদন্ড হয়েছে মেসির।
শুনে চোখ কপালে উঠলেও এ নিয়ে কথা বলেছেন ম্যারাডোনা নিজেও। তবে এমন অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। মেসির শাস্তিকে ‘ভীতিকর’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মেসির শাস্তিটা অতিরঞ্জিত। আমেরিকান ফুটবলে খেলোয়াড়রা কথা বলার সময় মুখের সামনে হাত দিয়ে কথা বলেন। মেসির সাথে লাইন্সম্যানের যা ঘটেছে তা দেখা গেছে।’ আর্জেন্টিার দৈনিক লা ওরাল ডিপোর্তিভাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে একথা বলেন ম্যারাডোনা।
বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে মেসির নিষেধাজ্ঞার বার্তা পায় আর্জেন্টিনা ফুটবল কতৃপক্ষ। লা অলবিসেলেস্তেরা ম্যাচও হারে ২-০ গোলে। দলে মেসির অনুপস্থিতির অনুমিত ফলই এটি। মেসিহীন ৮ ম্যাচে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার অর্জন ৭ পয়েন্ট, মেসি খেলেছেন এমন ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে আর্জেন্টিনা।
এ কথা স্মরণ করেই ম্যারাডোনা বলেন, ‘মেসির অনুপস্থিতিই ছিল বলিভিয়ায় হারের আসল কারণ। ঠিক যেমন ক্রিশ্চিয়ানোকে (রোনালদো) ছাড়া পর্তুগাল।’ তিনি বলেন, ‘এটা আমাকে ব্যথা দেয় যখন তারা বলে যে মেসির চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় নাকি আমার হাত ছিল। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কসম করে আমি বলছি, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ নিয়ে আমি তদন্ত শুরু করেছি যেন মেসি আবার কনমেবলে খেলা চালিয়ে যেতে পারে। আমি (ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি) ইনফান্তিনোর সাথে এটা নিয়ে কথা বলব কারণ এটা ভীতিকর।’ এরপর মেসির বিরুদ্ধে একটা অনুযোগও প্রকাশ করেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, ‘আমি মেসিকে অনেকবার ফোন দিয়েছি, কিন্তু সে তাতে সাড়া দেয়নি। মেসি এমন একজন যে কোনো ব্যাপারে কখনোই অভিযোগ করে না। সতীর্থদের কাছে সে টেডি বিয়ারের মতো।’
তো কি ঘটেছিল সেদিন চিলির বিপক্ষে সেই ম্যাচে। রেফারিকে নাকি স্প্যানিশ ভাষায় গালি দিয়েছিলেন মেসি। চিলি ফুটবল কতৃপক্ষের কাছ থেকে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শুধুমাত্র ভিডিও ফুটজ দেখেই মেসিকে ৪ ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ ও দশ হাজার সুইজ ফ্রাঁ জরিমানা করে ফিফা। অথচ ম্যাচ শেষে প্রধান রেফারি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই আনেননি। যে রেফারিকে মেসি গালি দিয়েছিল বলে অভিযোগ তিনিও কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে কোন নালিশ করেননি। মেসির কথা নাকি তিনি শুনতেই পাননি। এরপরও এমন গুরুদন্ড দেয়া হল পাঁচ বারের বর্ষসেরা ফুটবল নক্ষত্রকে। যে ঘটনায় ২০১৮সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ শঙ্কায় পড়ে গেছে আর্জেন্টিনার।
উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা ও পেরুর বিপক্ষে খেলতে পারবেন না মেসি। আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থা (এএফএ) অবশ্য ফিফার রায়ের বিপক্ষে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থাটির জাতীয় দল কমিটির প্রধান মার্সেলো তিনেল্লি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করব, কারণ এটা অন্যায্য, অযৌক্তিক। মেসি আগে কখনোই এমনটা করিনি। আমরা এএফএর আইনজীবী ও ক্রিড়া আইনের বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেছি। এই রায়ে আমরা সবাই বিস্মিত।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।