নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইমরান মাহমুদ : জাতীয় দলে উপেক্ষিত বহুদিন। সর্বশেষ গর্বের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন গতবছর অক্টোবরের ১২ তারিখ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, চট্টগ্রামে। এর পর থেকে আর দলে ফেরা হয়নি নাসির হোসেনের। তবে থেমে নেই এই অলরাউন্ডারের ক্রিকেট জীবন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ঠিকই জ্বলে উঠেছে তার ব্যাট-বল। এবছরই ছুঁয়েছেন একটি ডাবলের মাইলফলকও। তারপরও নির্বাচকদের মন কাড়তে পারেননি একসময়ের ‘মিস্টার ফিনিশার’। তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর একটি উপলক্ষই যেন হয়ে এলো নাসিরের জন্য এবারের ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ। শুধু বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভুক্তিই মেলেনি, সহ-অধিনায়কের দায়িত্বও কাঁধে চেপেছে এই অলরাউন্ডারের। নির্বাচকদের সেই আ¯হার প্রতিদানও ব্যাটে-বলে দিচ্ছেন সমান তালে। প্রথম ম্যাচে বল হাতে ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। গতকাল কক্সবাজার দেখলো চিরচেনা মারমুখী ব্যাটসম্যান নাসিরকে। তুলে নিয়েছেন দুর্দান্ত এক অপরাজিত সেঞ্চুরি। প্রথম ম্যাচে বল হাতে জয়ের নায়ক ছিলেন মুমিনুল হকও। ৮ উইকেটে জেতা ম্যাচে ১১ রানের বিনিময়ে তিনটি শিকার ছিলো অধিনায়ক মুমিনুলও। এবারও টানা দ্বিতীয় জয়ে ব্যাট হাতে দু’জনই রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অধিনায়ক মুমিনুল পেয়েছেন অর্ধশতক। পরে রাহাতুল ফেরদৌস, সাইফউদ্দিনদের দারুণ বোলিংয়ে নেপালকে ৮৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। হংকংয়ের বিপক্ষে
জাতীয় দল যে নাসিরকে চায় সেই ফিনিশারকে দেখা গেল শেখ কামাল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুই নম্বর মাঠে। দলের বিপদের সময় নেমে শুরুতে গড়লেন প্রতিরোধ। শেষটায় তুললেন ঝড়। তাতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাজে শুরুর পরও ৯ উইকেটে ২৫৭ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ৪২ ওভার ৩ বলে ১৭৪ রানে অলআউট হয়ে যায় নেপাল।
গতকাল ১০ ওভারের মধ্যে ৩৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মুমিনুলের সঙ্গে ৭৮ রানের জুটিতে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন নাসির। ৭৮ বলে ৭টি চারে ৬১ রান করে অধিনায়ক ফিরে যাওয়ার পর প্রায় একাই খেলতে হয় নাসিরকে। তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি আফিফ হোসেন ও সাইফউদ্দিন। সহ-অধিনায়ক সঙ্গ পান আবুল হাসানের কাছ থেকে। ১০ নম্বরে খেলতে নেমে ৩০ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এই অলরাউন্ডারের সঙ্গে নাসিরের ৫৫ বল স্থায়ী নবম উইকেটে উঠে ৭৬ রান। ছক্কা হাঁকিয়ে শত রানে পৌঁছানো নাসির শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১০৯ রানে। তার ১১৫ বলের ১২টি চার ও দুটি ছক্কার ইনিংসটিতে খুঁত অবশ্য একটু আছে। ৩৭ ও ৯০ রানে দুবার জীবন পেয়েছেন তিনি। তবে কুড়িয়ে পাওয়া সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করেছেন তিনি। জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই অলরাউন্ডার বড় একটা বার্তাও দিলেন- বিপর্যয়ে দলের ত্রাতা হওয়ার অভ্যাসটায় এখনো মরচে পড়েনি তার।
পরে নাসির-মুমিনুলদের চেষ্টা বৃথা যেতে দেননি বোলাররা। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৬ রানের মধ্যে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে নেপাল। দিলিপ নাথের সঙ্গে ৯৮ রানের জুটিতে দিপেন্দ্র সিং আইরির ৯৮ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে দলটি। ২২ রানের মধ্যে দিলিপ (৪১), দিপেন্দ্র (৫৬), শারদ ও মাহবুব আলমকে ফিরিয়ে ম্যাচ পুরো বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন রাহাতুল। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি নেপাল। ৪৫ রানে ৪ উইকেট বাঁহাতি স্পিনার রাহাতুলের। পেসার সাইফউদ্দিন ৩ উইকেট নেন ২২ রানে। আরেক পেসার আবুল হাসান ৪০ রানে নেন ২ উইকেট।
আগামীকাল গ্রæপ পর্বের শেষ ম্যাচটিতে শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারিয়ে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই চট্টগ্রামে যেতে চায় বাংলাদেশ। কাজটা যে সহজ হবে না, একই দিন শেখ কামালের দ্বিতীয় মাঠে হংকংকে (৩০.১ ওভারে ৭৯/১০) ২৪৮ রানে হারিয়ে মুমিনুলদের সেটা জানিয়ে রেখেছে পাকিস্তান (৫০ ওভারে ৩২৭/৪)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৭ (নাসির ১০৯*, মুমিনুল ৬১, আবুল হাসান ২৯, আফিফ ১৪, সাইফউদ্দিন ১৩, সাইফ ৭, নাজমুল ৪, রাহাতুল ৪,নাসুম ১*; অবিনাশ ৩/৪৬, লামিছান ২/৪১)। নেপাল : ৪২.৩ ওভারে ১৭৪ (দিপেন্দ্র ৫৬, দিলীপ ৪১, বিনোদ ৩৩; রাহাতুল ৪/৪৫, সাইফউদ্দিন ৩/২২, আবুল হাসান ২/৪০)। ফল : বাংলাদেশ ৮৩ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : নাসির হোসেন (বাংলাদেশ)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।