নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু দক্ষিণ কোরিয়ার দলের খেলোয়াড়দের গতি ও দ্রুত স্থান বদল করে খেলার কৌশল আটকানোর ব্যাপারে বলেছিলেন, ‘নিজেদের গোলমুখ আগলে রাখার কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে ফাইনালে যাওয়ার একটি সুযোগ আছে। ওরা যখন আক্রমণে উঠে তখন এদের দুই উইংয়ের খেলোয়াড় একই লাইনে থাকে। ওরা মাঠজুড়ে খেলে। হঠাৎ অবস্থান বদলায়। মাঝমাঠেও অনবরত রুটেশন করে।’ এইসব কৌশলগুলো চিহ্নিত করে প্রতিপক্ষকে আটকানোর পরিকল্পনাও করেছিলেন স্বাগতিক দলের কোচ। কিন্তু দলের খেলোয়াড়রা তা মাঠে কাজে লাগাতে পারেনি। এ কারণে দক্ষিণ কোরিয়ানদের কাছে ২-১ গোলে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীকে। বিজয়ী দলের পক্ষে গোল দু’টি করেন ফরোয়ার্ড জ্যাং ইয়ং ও মিডফিল্ডার পার্ক সিউং এবং আবাহনীর মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া গোল করেন। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে কোরিয়ার বদলি খেলোয়াড় কিম চ্যান লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়েন।
ম্যাচ শেষে স্বাগতিক দলের কোচ সাইফুল বারী টিটু আবারও আগের কথাই যেন স্মরণ করিয়ে দিলেন। ‘আমরা যোগ্য প্রতিপক্ষের সঙ্গেই হেরেছি। মাঠে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারেনি আমাদের খেলোয়াড়রা। বিশেষ করে ডিফেন্সের দুর্বলতা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা কাজে লাগিয়েছে। দ্বিতীয় গোলটি হজম করতে হয়েছে ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতায়। তাছাড়া এই ধরনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার মতো স্কিল ও ফিটনেস ছিল না খেলোয়াড়দের।’
২৩ মিনিটে আবাহনীর অধিনায়ক মামুনুলের কর্নার কিকে পেনাল্টি বক্সের জটলায় দাঁড়ানো কৌশলী মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া হেড করে দলকে এগিয়ে নেন ১-০। এ সময় উল্লাসে ফেটে পড়ে এমএ আজিজের গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকরা। ২৯ মিনিটে ডি-বক্সের সামনে থেকে মিডফিল্ডার সিওন হিউন গোলমুখে জোরালো শট নেন। পাঞ্চ করে চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলকিপার রানা দলকে বিপদমুক্ত করেন। দু’মিনিট পর আবাহনীর বিপদ সীমানায় দাঁড়ানো মিডফিল্ডার পার্ক সিউং যে চমৎকার ব্যাকভলি শটটি নেন তা অসাধারণ দক্ষতায় প্রতিহত করে দলকে নিশ্চিত গোল হজম করা থেকে রক্ষা করেন গোলকিপার রানা। ৪২ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর আবাহনীর ডিফেন্ডার মোফতা লয়েল দক্ষিণ কোরিয়ার মিডফিল্ডার পার্ক সিউংকে ফাউল করেন। চাইনিজ রেফারি চুনহান পেনাল্টির নির্দেশ দেন। রেফারির এই সিদ্ধান্তে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হন মামুনুলরা। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি শটে গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন পচেয়ন ক্লাব দলের ফরোয়ার্ড জ্যাং ইয়ং ১-১।
৪৬ মিনিটে বামপ্রান্ত থেকে ফ্রি-কিক নেন পচেয়নের ডিফেন্ডার লি সিয়ং। ডি-বক্সের জটলায় বল পেয়ে মিডফিল্ডার পার্ক সিউং কোনো ভুল না করে আলতো টোকায় জালে জড়িয়ে দেন ২-১। মুহূর্তেই গ্যালারি নিশ্চুপ হয়ে যায়। ৫৯ মিনিটে আবারও দক্ষিণ কোরিয়ানদের আক্রমণ। ডানপ্রান্ত থেকে ডি-বক্সে ফ্রি-কিক নেন মিডফিল্ডার ডিউক। উড়ন্ত বলে হেড করেছিলেন ম্যাচের দুর্দান্ত পারফরমার ফরোয়ার্ড জ্যাং ইয়ং। কিন্তু সেটি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পাঁচ মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে যায় আবাহনী। অধিনায়ক মামুনুলের ফ্রি-কিক থেকে ডি-বক্সে বল পেয়ে যে শট নেন মিডফিল্ডার সিলভা সেটি জালের ঠিকানা খোঁজে পায়নি। ম্যাচের ৭২ মিনিটে সমতাসূচক গোল থেকে বঞ্চিত করেন চাইনিজ রেফারি চুনহান। আবাহনীর একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ পেনাল্টি বক্সে পচেয়নের এক খেলোয়াড় বল ক্লিয়ার করার সময় তার হাতে লেগে যায়। আবাহনীর খেলোয়াড়রা পেনাল্টির দাবি জানালেও রেফারি তা উপেক্ষা করেন। ৮৬ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার বদলি খেলোয়াড় কিম চ্যান আবাহনীর এক খেলোয়াড়কে ধাক্কা দিলে রেফারি তাকে লালকার্ড দেখান। ১০ জনে পরিণত হওয়া পচেয়ন দলকে বেশ চেপে ধরেছিল স্বাগতিকরা। ইনজুরি টাইমে উপরে উঠে আসা আবাহনীর ডিফেন্ডার মোফতার নেয়া জোরাল শট কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন পচেয়নের গোলকিপার সিয়ং।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।