নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা, হায়দারাবাদ (ভারত) থেকে : ঘরের মাঠে ভারত সেরা, সর্বশেষ ১৮টি টেস্টে নেই তাদের একটিতেও হার। টেস্টের নাম্বার ওয়ান সেই দলকে এখন উল্টো পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। পঞ্চম দিনে নাটকীয় কিছুর মঞ্চ তৈরি হয়েছে প্রস্তুত হায়দারাবাদে। চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের দরকার ৯০ ওভার পার, যেখানে ভারতের দরকার সাত উইকেট। চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের স্কোর ১০৩/৩। টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে ১২৫ ওভার ব্যাটিংয়ের টার্গেট দিয়েছে ভারত। যে টার্গেটের এক চতুর্থাংশ পাড়ি দিতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। টেস্টে এমন পরিস্থিতিতে পড়ে একবার মাত্র চতুর্থ ইনিংসের পরীক্ষা দিতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। তা একযুগ আগে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ম্যাচ বাঁচিয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজের ট্রফি জিততে ওই ম্যাচে ১৪২ ওভার পাড়ি দিয়ে ম্যাচটি করতে পেরেছে হাবিবুল বাশার সুমনের দল। ভারতের মাটিতে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসের পরীক্ষায় ১৩৫ ওভার ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর অতীত শুধু নিউজিল্যান্ডের, ১৯৯৯ সালে মোহালীতে।
সে কারণেই ম্যাচের পঞ্চম দিনের প্রথম আধ ঘণ্টার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং পরামর্শক সামারাবীরাÑ‘এই মুহূর্তে বেশ কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। কারণ, তারা তিনটি ভালো বলে তিনটি উইকেট নিয়েছে। তারা বেশ কিছু ভালো বলও করেছে। এই কন্ডিশনে তারা কোন মানের স্পিনার, তা বুঝতে হবে। আমাদের কাছে তাই গুরুত্বপূর্ণ হলো আগামীকালকের প্রথম আধ ঘণ্টা।’ নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়েলিংটন টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রান করেও বাংলাদেশ হেরেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায়, ক্রাইস্টচার্চ টেস্টেও তারই কার্বন কপি দেখেছেন সামারাবীরা। এখানেই ভয় পাচ্ছেন এই শ্রীলঙ্কানÑ‘দ্বিতীয় ইনিংস নিয়ে আমি একটু ভয়ে আছি। একটি রান আউটে ১০০ রানে ৪ উইকেট হারালাম,তখন বল যথেষ্ট রিভার্স সুইং পাচ্ছিল। সকালে উমেষ যাদবের কঠিন স্পেলে যে কোনো কিছুই ঘটতে পারতো। কিন্তু রিয়াদ এবং সাকিব ওই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। এমন একটা ঘটনা টেস্ট ক্রিকেটে কখনোই ছয় ঘণ্টা ঘটবে না, বড়জোর এক ঘণ্টা ঘটবে। তা ইতোমধ্যে পাড়ি দিয়েছি আমরা।’
চতুর্থ দিনের শেষ দিকে এসে মুমিনুলকে হারানোয় ধাক্কা খেয়েছেন তিনিÑ ‘মুমিনুলের আউট হওয়াটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। ভালো একটি বলে আউট হয়েছে সে। তিন নম্বরে গত দুই তিন বছর ধরে দারুণ খেলছে সে।’ তামীম, সৌম্য, মুমিনুল ফিরে গেলেও উপরের সারির অবশিষ্ট ব্যাটসম্যানদের উপর রাখছেন ভরসা সামারাবীরাÑ ‘উপরের সারির সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে যে কেউ নোঙর ধরতে পারবে। এখনো আমাদের হাতে চার থেকে পাঁচ ব্যাটসম্যান আছে। একজন ব্যাটসম্যানের দিকে তাকিয়ে থাকতে চাই না, একটা দল হিসেবে ৬০ থেকে ৭০ এর ঘরে বেশ ক’টি পার্টনারশিপ চাই।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে মাহামুদুল্লাহ’র ব্যাটে নেই রান। দলের ক্রান্তিকালে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন মাহামুদুল্লাহ, এমন আশার বাণীই শুনিয়েছেন সামারাবীরাÑ ‘মাহামুদুল্লাকে নিয়ে কিছু কাজ করেছি। এই মুহূর্তে সে কিছুটা চাপে আছে। আশা করছি, পরবর্তী দিনের প্রথম আধ ঘণ্টা ভালোভাবে কাটাবে সে।’ কঠিন সময়ে দলের ব্যাটিংয়ে হাল ধরায় অনন্য মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ম্যাচ টেনে নিতে পেরেছে পঞ্চম দিনে, তার এই ব্যাটিংই বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে স্বপ্ন, এমনটাই জানিয়েছেন সামারাবীরাÑ ‘এই মুহূর্তে সে আমাদের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান। সলিড গেম প্লান নিয়ে খেলে সে। দারুণ ফর্মে আছে সে। চট্টগ্রামে চেজ করতে এসে গ্যারেথ বেটির একটি অবিশ্বাস্য ডেলিভারিতে আউট হয়েছিল।’
তবে পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ ম্যাচ টেনে নিলেও জয়ের আশায় হাল ছাড়ছেন না ভারতের টপ অর্ডার চেতশ্বর পুজারা। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে উইকেটে ধরেছে টার্ন, তাতেই বাংলাদেশকে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনিÑ ‘বল এখন টার্ন পেতে শুরু করেছে। আশা করছি, আগামীকাল (আজ) স্পিনাররা এই উইকেটে সহায়তা পাবে। আশা করেছিলাম, তৃতীয় দিন থেকে টার্ন ধরবে, কিন্তু চতুর্থ দিন থেকে টার্ন দেখতে পাচ্ছি। উইকেটটি সহজ নয়, তবে আমাদের বোলিং ইউনিটটা অনেক ভালো, এখন তাদেরকে ধৈর্য নিয়ে বল করতে হবে। আশা করছি, যতো দ্রæত সম্ভব আমরা সাত উইকেট নিয়ে নিব। তারা প্রথম ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করেছে। প্রথম ইনিংসে আমাদের বোলাররাও বল করেছে কঠিন কন্ডিশনের মধ্যে। আশা করছি, পরবর্তী ক’সেশনের মধ্যে ওই সাতটি উইকেট নিয়ে নিতে পারব।’ আজকের প্রথম ঘণ্টাকেই ক্রুশিয়াল মনে করছেন চেতশ্বরÑ ‘এখন পর্যন্ত এই পিচটা ভালো বলেই মনে হচ্ছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ হলো আগামীকালের প্রথম ঘণ্টাটি। কারণ যদি এই এক ঘণ্টায় তাদেরকে ছন্দ দেয়া হয়, তাহলে আমরা বিপদে পড়ব।’
বাংলাদেশকে ফলোঅনে ফেলে দিয়েও বাংলাদেশ দলকে ব্যাটিংয়ে বাধ্য না করে ভারত কেন দ্বিতীয়বার নামল ব্যাটিংয়ে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন চেতশ্বরÑ ‘বোলাররা ১০০ ওভারের বেশি বল করেছে, আমরা ১০০ ওভারের বেশি ফিল্ডিং করেছি। তাই বোলারদের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে একটা ব্রেক সেশন দরকার ছিল। আমরা যখন দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমেছি, তখন লক্ষ্য ছিল যত দ্রæত সম্ভব বেশি বেশি রান তোলা। আমরা চেয়েছি দেড়শ’ থেকে ২০০ রান স্কোরবোর্ডে তুলতে।’
চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা ইনিংস (কমপক্ষে ১০০ ওভার)
ওভার প্রতিপক্ষ ভেন্যু স্কোর ফল সাল
১৪২.০ জিম্বাবুয়ে বঙ্গবন্ধু ২৮৫/৫ ড্র’ ২০০৫
১২৬.২ শ্রীলঙ্কা মিরপুর ৪১৩ হার ২০০৮-৯
১২৪.০ ইংল্যান্ড চট্টগ্রাম ৩৩৩ হার ২০১০
ভারতের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে প্রতিপক্ষের সর্বোচ্চ স্কোর (পাঁচটি)
ওভার দেশ ভেন্যু ফল সাল
১৪৩.১ দ.আফ্রিকা দিল্লি হার ২০১৫
১৩৫.০ নিউজিল্যান্ড মোহালী ড্র’ ১৯৯৯
১৩৪.০ ইংল্যান্ড মুম্বাই ড্র’ ১৯৬৪
১১৭.০ নিউজিল্যান্ড নাগপুর ড্র’ ১৯৭৬
১১৬.২ ইংল্যান্ড কলকাতা হার ১৯৬১
১০৭.০ নিউজিল্যান্ড আহমেদাবাদ ড্র’ ২০০৩
১০৫.১ উইন্ডিজ কলকাতা ড্র’ ১৯৭৮
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।