Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক ঋণ বাতিল করেছিল, তার প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে এই মামলার তিন আসামিকে আদালত খালাস দিয়েছে বলে কানাডিয়ান পত্রিকা দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল জানিয়েছে।
গত শুক্রবার তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফোনে আড়ি পেতে সংগ্রহ করা যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রসিকিউশন মামলা সাজিয়েছিল তাকে গালগল্প ও গুজব বলে ছুড়ে ফেলেছেন বিচারক। পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ তদারকির পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ যোগাড়ে ফোনে আড়ি পাতা তথ্য (ওয়্যার ট্যাপস) ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ২০১১ সালে তিনটি আবেদন করে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)।
অন্টারিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার আদেশে বলেন, ওই তিন আবেদনের বিষয়ে তার ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। এগুলোতে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে সেগুলো ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’ বলে মূল্যায়ন তার।
বিচারক নরডেইমার গত জানুয়ারিতে এই সিদ্ধান্ত দিলেও গত শুক্রবার পর্যন্ত তা প্রকাশে বাধা ছিল বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
‘ওই গুজব বা অনুমানকে সমর্থন করে এমন ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি বা তার তদন্ত হয়নি। যে তথ্য সরাবরাহ করা হয়েছে তা শোনা কথা, যা আরও শোনা কথা হাজির করেছে,’ -বলেন বিচারক।
এই রায়ের ফলে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়া এই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন।
দুর্নীতির এ অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার। দুর্নীতির ওই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন সেই সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। অভিযোগ ছিল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দুদকের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়।
বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে নিজেরা তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে (আরসিএমপি) অনুরোধ জানায়।
ওই অনুরোধে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় এসএনসি লাভালিনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রমেশ শাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১২ সালে টরোন্টোর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে এসএনসি-লাভালিনে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস ও ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়াকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় রমেশ শাহের কাছ থেকে কানাডীয় পুলিশের জব্দ করা একটি ডায়েরি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়, যাতে ‘বাংলাদেশের কাকে কতো শতাংশ ঘুষ দেয়া হবে’ তার সাঙ্কেতিক বিবরণ ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়।
এদিকে বিশ্ব ব্যাংকের চাপে ‘ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে দুদক ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় একটি মামলা করলেও ২২ মাস পর তদন্তকারীরা বলেন, অভিযোগের কোনো প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি। দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা দুর্নীতি মামলার অবসান ঘটে, তখনকার সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাত আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেয় আদালত। সূত্র : বিডিনিউজ ও দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল।



 

Show all comments
  • ইমরান ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১১:১৮ এএম says : 0
    তাহলে কিসের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে এই অপবাদ দিয়েছিলো?
    Total Reply(0) Reply
  • Rifat ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:২৩ পিএম says : 0
    ai bepare World Bank er ki boler ase, seta e amra jante chai
    Total Reply(0) Reply
  • Nazim ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:২৪ পিএম says : 1
    durniti na korle proman pabe kotha theke
    Total Reply(0) Reply
  • Sujon ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:২৮ পিএম says : 0
    bisoy akhono amar kase alomelo lagse
    Total Reply(0) Reply
  • আর্পিতা ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:২৯ পিএম says : 0
    তাহলে এত দিন সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছিলো সেটাই কী সঠিক ?
    Total Reply(0) Reply
  • জোবায়ের ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩০ পিএম says : 0
    সত্যের পক্ষে রায় দেয়ায় কানাডার আদালতকে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • মাহফুজ আলম ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩১ পিএম says : 0
    অবশেষে আমরা অপরাদ থেকে মুক্ত হলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • Kasem ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩২ পিএম says : 0
    যে কলঙ্কের দাগ আমাদের গায়ে লেগেছে তার দায় কে নিবে ?
    Total Reply(1) Reply
    • Mahmud ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৫:০৬ পিএম says : 4
      তাহলে তখন সৈয়দ আবুল হোসেন সাহেবকে কেন মন্ত্রীত্ব থেকে অপসারন করা হলো?

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
৪ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ