Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রান পাহাড়ে চাপা পড়ার শঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ভারত ১ম ইনিংস : ৩৫৬/৩ (৯০.০ ওভার)
(১ম দিন শেষে)
১৬ বছর ২ মাস ২৯ দিন পর ভারতের মাটিতে টেস্টে আতিথ্য পেয়ে এমনিতেই শিহরিত বাংলাদেশ দল। টেস্টে আতিথ্য পেতে দীর্ঘ দিনের এই উপেক্ষার জবাবটা ভারতকে দিয়েছিল বাংলাদেশ দিনের শুরুতেই। দিনের শুরুটা ছিল প্রত্যাশার চেয়েও ভাল। টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে দিনের ৪র্থ বলে তাসকিনের লেন্থ বলে   লোকেশ রাহুলের মিডল স্ট্যাম্পে আঘাত ভারতের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট মনে হলেও এমন দিনে ভারতের বুঁক ঝাঁঝরা করে দিতে পারেনি বাংলাদেশ বোলাররা। বরং প্রথম ওভারের ধাক্কা সামাল দিয়ে দিনের অবশিষ্ট ৮৯ ওভার ছড়ি ঘুরিয়ে ভারত ব্যাটসম্যানরা! ওয়েলিংটন টেস্টে সবুজ পীচে একদিনে সাড়ে তিনশ’ প্লাস রান তোলায় একদিন আগে বাংলাদেশের প্রশংসা ঝরেছে কোহলীর মুখে, নিজেদের মাটিতে সেই কাজটিই করে দেখিয়েছে হায়দারাবাদ টেস্টের প্রথম দিনে ভারত। প্রথম সেশনে যে দলটি সন্তুষ্ট থেকেছে ৮৭ রানে, সেই দলটিই প্রথম দিনটি শেষ করেছে ৩৫৬/৩ এ! ১১ রানের মাথায় রাব্বীর বলে চেতশ্বর পুজারাকে উইকেটের পেছনে ফিরিয়ে দিতে না পারার কষ্টটি দিনশেষে ভারী করেছেন ৩৫ রানের মাথায় মুরালী বিজয়কে মিরাজ রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করায়। এই ২টি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হায়দারাদ টেস্টে দিনের দ্বিতীয় সেশনে ১২০ এবং শেষ সেশনে কোহলীর ওয়ানডে স্টাইল ব্যাটিংয়ে ১৫০ যোগ করে রান পাহাড়ে বাংলাদেশকে চাপা দেয়ার পথই করেছে প্রশস্ত ভারত।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকটা রাঙিয়েছিলেন ৫ উইকেটে, এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও ১৪০ কিলোমিটার পার করেছেন গতিতে। ৫-০-১১-১, তার প্রথম স্পেলটি সত্যিই মনে রাখার মতো। তবে নিউজিল্যান্ড সফরে বোলিংয়ে সুনাম কুড়ানো রাব্বী এদিন করেছেন অনিয়ন্ত্রিত বোলিং। দিয়েছেন শর্ট বল এবং হাফভলির ছড়াছড়ি। তাতেই ব্যাটিংয়ে ছন্দ পেয়েছে ভারত। ১৭৮,৫৪ এবং অবিচ্ছিন্ন ১২২ রানের তিনটি পার্টনারশিপ বাংলাদেশকে ফেলে দিয়েছে বেকায়দায়।
ডিআরএস থাকতে নেয়নি তার আপীল করেনি ২ দলের কেউ। বাংলাদেশ দলের আপীলগুলোও ছিল না জোরালো। তিন সেশনে নামতা গুণে একটি করে উইকেট নিতেই গলদঘর্ম দশা বাংলাদেশ দলের। নির্বিঘেœ ব্যাটিংয়ে পার করে ওভারপ্রতি ৩.৯৫ হারে রান তুলেছে ভারত স্বাচ্ছন্দে। এমন একটি দিনে  মিরাজের শিকারে পরিণত হওয়ার আগেই একটি বিরল রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন ভারতের  টপ অর্ডার চেতশ্বর পুজারা। চলমান মওশুমে (২০১৬-১৭) রেকর্ড ১৬০৫ রানে ছাড়িয়ে গেছেন  ১৯৬৪-৬৫ মওশুমে তিনি চান্দু বোর্দের সংগ্রহকে (১৬০৪ রান)। শুধু এক মওশুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানে ভারতের রেকর্ডই করেননি, এক মওশুমে পুঁজারা-মুরালী বিজয়ের সেঞ্চুরি পার্টনারশিপের সংখ্যাও গড়েছে ভারতীয় রেকর্ড। ১৯৪৮-৪৯ মওশুমে বিজয় হাজারে-মোদির পার্টনারশিপ থেকে এসেছিল ৪টি সেঞ্চুরি। গতকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে এই জুটির ১৭৮ রানে সংখ্যাটা উন্নীত হয়েছে ৫ এ! একদিনে সেঞ্চুরি হয়েছে ২টি। টেস্টে মুরারী বিজয়ের ৯ম সেঞ্চুরির দিনে (১০৮) অধিনায়ক কোহলী করেছেন ১৬ তম সেঞ্চুরি উদযাপন। ২ বছর আগে ফতুল্লায় বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে  জুবায়েরের গুগলি ডেলিভারিতে হতভম্ব হয়ে মাত্র ১৪ রানে ফিরে গেছেন। সেই দুঃখ ভুলতে গতকাল মিরাজকে লং অনের উপর দিয়ে বাউন্ডারিতে টেস্টে ১৬তম সেঞ্চুরি উদযাপনের ইনিংসটি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম। হায়দারাবাদ টেস্টের প্রথম দিন শেষে ১১১  রানে অবিচ্ছিন্ন থাকা কোহলীর সামনে হাতছানি দিচ্ছে বিশ্বরেকর্ডের। এক মওশুমে সর্বাধিক টেস্ট রানের রেকর্ডটি এখনো ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দ্র শেভাগের। ২০০৪-৫ মওশুমে  তার ১১০৫ রানের রেকর্ড ভেঙে ফেলতে এখন কোহলীর দরকার  ৩১টি রান! তাইজুলকে ফিরিয়ে আনা টেস্টে স্পিন ত্রয়ীর মধ্যে সাকিব প্রথম দিন খালি হাতে ফিরেছেন, ১৭৮ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে দিয়েছেন মিরাজ পুজারাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে। সুইপ শটে মুরালী বিজয়কে প্রলুদ্ধ করে বোল্ড আউটে বাহাবা পেয়েছেন তাইজুল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রান


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ