গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে যৌথ অভিযান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও ঢাকা ওয়াসা যৌথভাবে এ অভিযান চালাবে। ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার দুপুর ১২টায় নন্দীপাড়া-ত্রিমোহনী খালের নন্দীপাড়া কালভার্ট থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর পর্যায়ক্রমে ত্রিমোহনী ব্রিজ পর্যন্ত খালের দুই পাড়ে থাকা সব অবৈধ দোকানপাট ও ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হবে।
রাজধানী শহর ঢাকা একসময় ছিল নদীবিধৌত। অসংখ্য খাল-বিল ঢাকার পরিবেশ রক্ষায় ভ‚মিকা রাখত। কালের পরিক্রমায় রাজধানীর জৌলুস ও সীমানা বাড়ার সাথে সাথে হারিয়ে যেতে থাকে এ খালগুলো। খাল-বিল দখল করে গড়ে উঠতে থাকে বহুতল আবাসিক ভবন। এ কারণে বর্তমানে বেশকিছু খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আর যেগুলো কোনোরকমে টিকে আছে, তাও দখল-দূষণে বিপর্যস্ত অবস্থা। সরু নালায় পরিণত হয়েছে খালগুলো। বর্ষা মৌসুমে নগরীতে জমা হওয়া পানি ধারণ করতে পারছে না প্রাকৃতিক এ আধারগুলো। সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে পানিবদ্ধতা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে রাজধানীর খালগুলো আবারো স্বরূপে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রাথমিকভাবে একটি খালকে বিশেষ টার্গেট করেছে সংস্থাটি। নগরীর একেবারে পূর্বে থাকা নন্দীপাড়া-ত্রিমোহনী খালটিকে অন্তত সম্পূর্ণ দখল মুক্ত করতে চায় সংস্থাটি।
দখলমুক্ত করার সাথে সেটি ধরে রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ। সেটিও করতে চায় ডিএসসিসি। এজন্য শুধু একদিন অভিযান করেই শেষ করবে না তারা। এ অভিযান চলবে অব্যাহতভাবে। খালের সাথে জড়িয়ে আছে জেলা প্রশাসন ও ঢাকা ওয়াসার কর্মকাÐও। জেলা প্রশাসন আইনি সূত্রে খালের মালিক। আর ঢাকা ওয়াসা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব পালন করে। মেয়র তাদেরকে সাথে নিয়েই এই খালটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে চান।
সরেজমিন নন্দীপাড়া-ত্রিমোহনী খাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, অবৈধ দখলের কারণে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে খালটি। দু’পাড়ের বাসিন্দারা ক্রমেই গ্রাস করে নিচ্ছে খালের সীমানা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা খাল ও সড়কের জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছে দোকান, গ্যারেজ, বাড়িসহ নানা স্থাপনা। এমনকি জেলা প্রশাসনও খাল দখল করে গড়ে তুলেছে মার্কেট। এক সময় যে খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলত সেটি এখন পরিণত হয়েছে সরু নালায়। ময়লা আবর্জনা আর কচুরিপানায় ভর্তি খালের অবশিষ্টাংশে পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর। যতটুকু পানি আছে তাও দূষিত। কালো রঙের দুর্গন্ধময় পানিতে আর দেখা মেলে না দেশি মাছের।
নন্দীপাড়া থেকে ত্রিমোহনী বাজার পর্যন্ত প্রায় পুরো সড়ক জুড়েই খালের পাশে দোকান তৈরি করা হয়েছে। খালের মধ্যে বাঁশের খুঁটি পুতে এসব দোকান তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার বিপরীত পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু বহুতল বাড়ি। এসব বাড়িতে যাতায়াতের জন্য নিজেরাই ব্রিজ তৈরি করে নিয়েছেন। এগুলোর কোনোটা বাঁশের, আবার কোনোটি কাঠ বা লোহার তৈরি। এ ব্রিজগুলো সুরক্ষিত রাখতে তৈরি করা হয়েছে গেটও। ত্রিমোহনী বাজার পর্যন্ত এভাবে অনেকগুলো ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে।
গত ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসন ও ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন রাজধানীর পানিবদ্ধতা নিরসনে ৬ ফেব্রয়ারি নন্দীপাড়া-ত্রিমোহিনী খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি শুধুম উচ্ছেদ অভিযানই নয়, সেটি যাতে ধরে রাখা যায়; সে ব্যবস্থা নেয়ারও ঘোষণা দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।