বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাছিম উল আলম : অবশেষে লোকসান এড়াতে সম্প্রতি সংগৃহীত যাত্রীবাহী নৌযান ‘এমভি বাঙালী’ পর্যটক পরিবহনে ভাড়া দিল বিআইডবিøউটিসি। প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এমভি বাঙালী ও এমভি মধুমতি নৌযান দুটির যাত্রীবহন ক্ষমতা ৮০বছরের পুরনো প্যাডেল জাহাজগুলোর তুলনায় কম এবং জ্বালানী ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশী হওয়ায় তা ইতোমধ্যেই সংস্থাটির গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে। তবে এর পরেও সংস্থাটির কারিগরি ও মেরিন বিভাগের একটি মহল ব্যয়সাশ্রয়ী প্যাডেল জাহাজগুলোর পরিবর্তে ব্যয় বহুল শ্বেতহস্তি নৌযান দু’টি পরিচালনে অতিমাত্রায় আগ্রহী বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমভি বাঙালী জাহাজটিতে ভ্রমণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছিলেন।
২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল ‘এমভি বাঙালী’ ও ২০১৫-এর ১৪ জুলাই ‘এমভি মধুমতি’ যাত্রী পরিবহনে আসার পরে গত বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৫ কোটি টাকা পরিচালন লোকসান গুনেছে। এর সাথে দুটি নৌযানের ৭০ জন ক্রু’র বেতন-ভাতা বাবদ আরো প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে সংস্থাটির কোষাগার থেকে। গত ৭ মাসে নৌযান দুটির পেছনে আরো অন্তত ১ কোটি টাকা সংস্থার কোষাগার থেকে ব্যয় হয়েছে। ফলে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সংগৃহীত এ দু’টি নৌযান চালু হবার পর থেকে সংস্থার নিট লোকসানের পরিমাণ ইতোমধ্যে প্রায় ৮ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। জুলাই পরবর্তী মাসগুলোতে এ দু’টি নৌযানের ক্রুদের পেছনে সংস্থার আরো প্রায় ৬০ লাখ টাকা নগদ অর্থ ব্যয় হয়েছে। এসব নৌযানের জ্বালানী ব্যয়সহ পরিচালন ব্যয় প্যাডেল নৌযানগুলোর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশী। কারিগরি বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব নৌযান স্বল্প দূরত্বে অধিক যাত্রী বহনে নিয়োজিত করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
কিন্তু সে বিষয়টিও বিবেচনায় না নিয়ে সংস্থা ‘এমভি মধুমতি’কে আরো দূরত্বের ঢাকা-খুলনা রুটে চালাচ্ছে। ফলে প্রতিট্রিপে শুধু পরিচালন লোকসান হচ্ছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। আর এমভি বাঙালী জাহাজটি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পরিচালন-এর জন্য একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে মাসে ১২ লাখ টাকায় ভাড়া দেয়া হয়েছে। তবে ১২ লাখ টাকা আয় হলেও নৌযানটির ৩৭ জন ক্রু’র বেতন-ভাতা বাবদই ব্যয় হবে অন্তত ৫ লাখ টাকা। তবে ঐ রুটেও বাঙালী আগামী ১৫ মার্চের পারে চলতে পারবে না। কারন ১৫মার্চ থেকে অশান্ত মওসুমে শুরু হওয়ায় অভ্যন্তরীণ রুটের কোন নৌযান ঐ নৌপথের সাগর পাড়ি দেয়ার বিধান নেই। এমনকি এমভি বাঙালী ভাড়া দেয়া হলেও এর ইজারাদার এখনো নৌযানটি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পরিচালনায় সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের অনুমোদন লাভ করেনি। অনুমোদন লাভ না করা পর্যন্ত ইজারাদার সংস্থাটি থেকে নৌযানটি বুঝে নিচ্ছে না। ভাড়াও দেবে না।
ইতোপূর্বে সংস্থাটি রেলওয়ে থেকে সংগ্রহ করা ‘এমভি সোনারগাঁ’ নামের একটি যাত্রীবাহী নৌযান সংগ্রহ করে তার মেরামত ও পুনর্বাসনে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয় করার পরে তাও পাঁচ বছরের জন্য ইজারা দিয়েছে। ইজারাদার নৌযানটি যাত্রী পরিবহনের পরিবর্তে ঢাকার শ্যামপুরের কাছে রেখে ভাসমান রেস্তোরাঁ হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ যাত্রী পরিবহনের জন্য পুনর্বাসনকৃত ঐ নৌযানটির পুরনো ইঞ্জিন মেরামতে যে প্রায় সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে, সে অর্থেই নতুন ইঞ্জিন সংগ্রহ করে নৌযানটি সদ্য সংগৃহীত দুটি শ্বেতহস্তির চেয়ে অনেক ভালভাবে পরিচালন করা সম্ভব ছিল বলে কারিগরি বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন।
এসব বিষয়ে গতকাল সংস্থার পরিচালক-বাণিজ্য জানান, ‘পিএস মাহসুদ যাত্রী পরিবহনে ফিরলে আমরা যতদ্রæত সম্ভব একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরী করে ব্যয় সাশ্রয়ী নৌযানের সাহায্যে রকেট স্টিমার সার্ভিসটি পরিচলনা করব’। তিনি অতি দ্রæত পিএস অস্ট্রিচ-এর মেরামত ও ডকিং-এর বিষয়টির প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।