পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ ৩৪ বছর আগে ১৯৮৭ সালে নাটোরের গুরুদাসপুর থানায় হামলা চালায় চরমপন্থিরা। হামলাকারীরা এক কনস্টেবলকে খুন করে লুট করে থানায় মজুত করা অস্ত্র। এ ঘটনার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চরমপন্থি সাইফুল ওরফে মানিক (৫৬)। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ভোটার হিসেবে নিজেকে ছাত্তার নামে প্রতিষ্ঠিত করে নিজের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন মানিক। গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৮৭ সালে ২৪ ফেরুয়ারি মঙ্গলবার হাটের দিন সকাল ১১টার দিকে একদল চরমপন্থি ছদ্মবেশে লুঙ্গি, গামছা পরা অবন্থায় হাতে পোটলা নিয়ে হাটের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকেন। পোটলার মধ্যে তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র লুকানো ছিল। তাদের মধ্যে কিছু লোক অস্ত্র প্রদর্শন করে টেলিফোন অফিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেন্ট্রাল কমান্ড বিকল করে দেয়। কয়েকজন থানায় জিডি করার উদ্দেশ্যে থানায় প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে থানা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এসময়ে থানায় দায়িত্বরত কনস্টেবল হাবিবুর রহমান বাধা দিলে চরমপন্থিরা তাকে হত্যা করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। পরে থানার অস্ত্রাগার লুট করে দুটি এসএমজি, চারটি এসএলআর, ১৮টি রাইফেল ও গোলাবারুদ লুট করে থানার লকআপে বন্দি চরমপন্থি আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তারা একযোগে টেলিফোন অফিস ও থানা কম্পাউন্ডে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে তারা লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নাটোরের গুরুদাসপুর থানায় ১৯৮৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০জন আসামি গ্রেফতার করেন। গ্রেফতার আসামিদের জবানবন্দি, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৪৯জনকে আসামি করে গুরুদাসপুর থানা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০০৭ সালে মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
গ্রেফতার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মানিক ১৯৮৪ সালে চরমপন্থি নেতা তারেকের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি লাল পতাকা ওরফে সর্বহারা দলে যোগ দেয়। চরমপন্থি নেতা তারেক প্রতি সপ্তাহে চাটমোহর এলাকায় উঠতি বয়সী যুবকদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে উঠান বৈঠক করতো। এ বৈঠকে তিনি আকর্ষণীয় কথাবার্তা বলতেন। কেউ তাদের কাজে বাধা দিলে তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দিতো। যদি সরকার বা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পথে বাধা হয়ে দাড়ায় তারা পুলিশ হত্যা করে থানা ফাঁড়ি লুট করবে বলেও ঘোষণা দিতো। ১৯৮৮ সালে তারেকের নেতৃত্বে চাটমোহর থানার খোতবাড়ি এলাকায় মাঠের মধ্যে রাতে নকশালপন্থি এবং সর্বহারাদের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে নকশালপন্থির ১২জন নিহত হন। এ ঘটনার পর মানিকসহ সর্বহারা দলের সদস্যরা চলনবিলে গোসল করে যার যার বাড়িতে চলে যায়। ভোর হলে পুলিশ ১২টি লাশ উদ্ধার করে থানায় মামলা করে। ওই ঘটনায় দায়েল হওয়া মামলায় মানিক গ্রেফতার হয়। জামিনে মুক্ত হয়ে মানিকের পলাতক জীবন শুরু হয়। থানা লুট ও ১২জনকে হত্যা মামলাসহ মানিকের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।