Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে ‘ইটস কামিং হোম’

ছেলেরা পারেনি, পেরেছে মেয়েরা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০১ এএম

১৯৬৬ সালের পর কত কিছু হয়ে গেছে গড়িয়েছে। হয়ে গিয়েছে ফুটবলের বহু আসর। কিন্তু রোববারের আগ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ফুটবলের শোকেসে শিরোপা ছিল কেবল একটি। যেটি ৬৬’তে ববি মুরের দল জিতেছিল, ওয়েম্বলিতে জার্মানির বিপক্ষে ৪-২ গোলের জয়ে। গত পরশু নারী ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে একই ভেন্যু ও একই প্রতিপক্ষের সাথে ২-১ গোলে ফাইনাল জিতে ৫৬ বছর পর ইংল্যান্ড একটা মেজর ট্রফি জেতার মাধ্যমে ভাঙল হতাশার বৃত্ত।এই অর্জনের সাক্ষী হিসেবে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিল রেকর্ড ৮৭ হাজার ১৯২ জন দর্শক, যা নারী বা পুরুষ যেকোন আসরের ফাইনাল ম্যাচের সর্বোচ্চ। গোল শূন্য প্রথমার্ধের পর ম্যাচের ৬২ মিনিটে এলা টুনের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে লিনা ম্যাগলের গোলে সমতায় ফিরে জার্মানরা। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গেলে, ১১০তম মিনিটে ক্লোয়ি কেলি জার্মানদের জালে বল পাঠিয়ে নিশ্চিত করেন ইংল্যান্ডের নারী ফুটবলের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা। অথচ এই ভেন্যুতেই পুরুষ ইউরোর ফাইনালে ইতালির কাছে হেরে স্বপড়বভঙ্গ হয়েছে ইংলিশ পুরুষ দলের!
২০১৮ সালের বিশ্বকাপে হ্যারি কেইনরা নক আউটে ভালো করা শুরু করলে ‘ইটস কামিং হোম’ বলে রব উঠে ইংলিশ গণমাধ্যমে, কিন্তু ক্রোয়শিয়ার সাথে শেষ চারের লড়াই হারায় ভেস্তে যায় সেই আয়োজন। এরপর গেলবছর ইউরোতেও একই স্লােগাণে মুখোরিত ছিল ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে ইতালির বিপক্ষে সাউথগেটের দল টাইব্রেকারে ফাইনাল হারায় সেবারও হোমে যায়নি ট্রফি। তবে অবশেষে নিজেদের ঘরে শিরোপা নেওয়াকে সত্যে রূপান্তরিত করল ইংল্যান্ডের সিংহীরা। সেই শিরোপা জয়ের কারিগর কেলি। এই ২৪ বছর বয়সী ফুটবলারের ঘর লেনিংয়ের, যা ওয়েম্বলি থেকে বাসযোগে মিনিট আটেকের পথ। ছোত বেলায় ৯২ নম্বর বাস ধরে তিনি প্রায় চলে আসতেন ম্যাচ দেখতে। সেই ক্লেনিতেই ঘুচল ইংল্যান্ড ফুটবলের ৫৬ বছরের আক্ষেপ। গোলের পর জার্সি খুলে যে বাঁধনভাঙা উল্লাসে মাতলেন তা মনে করিয়ে দেয় ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারে শেষ শট নেওয়ার পর মার্কিন ব্যান্ডি চ্যাস্টেইনকে। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসাডেনায় ঠিক একইভাবে জার্সি উড়িয়ে শিরোপা নিশ্চিতের উল্লাসে মেতেছিলেন তিনি। জার্মানি এর আগে ৮ বার ইউরোর ফাইনালে গিয়ে প্রতিবারই শিরোপার ছোয়া পেয়েছিল। যার মাঝে আছে ২০০৯ সালে এই ইংল্যান্ডকেই ৬-২ গোলে উড়িয়ে শিরোপা জেতার ইতিহাস। সিংহীরা এর আগেও অবশ্য ইউরোর ফাইনাল খেলেছিল, সেটা ১৯৮৪ সালে। তবে সুইডেনের কাছে হেরে সেবারও স্বপড়বভঙ্গ হয় তাদের। এবারের ফাইনাল জিতার পথে সেমি তে সেই সুইডেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে এবং ফাইনালে জার্মানদের ২-১ গোলে হারিয়ে, একঅর্থে আগের দুই ফাইনাল হারার প্রতিশোধও নিল ইংল্যান্ডের মেয়েরা।
এমন জইয়ের পর রানী এলিজাবেথ এক বার্তায় জানান, ‘এই শিরোপা জয়ী ফাইনালে এবং বাকি ম্যাচগুলোতে তোমাদের পারফরম্যান্স প্রশংসা অর্জন করেছে। তবে যোগ্য হিসেবে তোমরা যে সফলতা পেয়েছ তা এই শিরোপার থেকেও মূল্যবান।’ গ্যারি লিনেকারের জার্মানদের নিয়ে করা সেই বিখ্যাত উক্তিটি নিশ্চয় মনে আছে আপনার। কিন্তু ইংলিশ নারীরা ইউরো চ্যাম্পয়ন হবার পরে এক টুইটে সেই কথাকে উল্টে তিনি লিখলেন, ‘ফুটবলটা সহজ। ২২ জন নারী ৯০ মিনিট বলের পিছে দৌঁড়ায় এবং শেষে ইংল্যান্ড জেতে।’ কেইন-স্টার্লিংরা যা পারেননি তাই অর্জন করে দেখাল ক্লোয়ি-এলারা। সারিনা ভিগমানের দল সত্যিই বিশ্বাস করত যে তারা পারবে। নিঃসন্দেহে এই অর্জন ইংলিশ ফুটবলের নব দুয়ার উন্মোচন করল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবশেষে ‘ইটস কামিং হোম’
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ