Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথম ইনিংসের অর্জন ম্লান

| প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ওয়েলিংটনে প্রথম তিন দিনের অবিশ্বাস্য কৃতিতে শেষ রাত নির্ঘুম কাটিয়েও দারুণ ভালোলাগা অনুভূতি ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রেমীদের চোখে-মুখে। চতুর্থ দিন থেকে স্রোতটা উল্টো বইতে শুরু করেছে। শেষ বিকেলে ইমরুল কায়েসের ক্রীজের উপর পড়ে যাওয়ায় সেই যে অশনি সংকেত, তামীম, মাহামুদুল্লাহ এবং মিরাজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসায় ফিকে হতে থাকা স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রূপ দিয়েছে বাংলাদেশ দল! খুব কঠিন কোন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। চতুর্থ দিন শেষে ১২২ রানের লিডকে শেষ ৭টি পার্টনারশিপ কতো বড় করতে পারে, নিউজিল্যান্ডকে চতুর্থ ইনিংসে কেমন চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে বাংলাদেশ দলÑসেদিকেই তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশের কোটি কোটি চোখ। অথচ, ঘুম ভেঙে ৫ম দিনের ৮ম বলে সাকিবের অমার্জনীয় শটে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ায় ওয়েলিংটনের ফর্সা আকাশটাও যেনো হয়ে গেল বাংলাদেশের সামনে ঘন কালো! মাত্র ৯৪ রানে শেষ ৭ উইকেট! প্রথম ইনিংসে সাকিব-মুশফিকুরের ৩৫৯ রানের পার্টনারশিপ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর (৫৯৫/৮ডি.) সব জলাঞ্জলি দিল বাংলাদেশ! প্রথম ইনিংসের পারফরমেন্সে যে দলটির পক্ষে অন্ততঃ বাজি ধরার সাহস পেয়েছেন যারা, তারাই দেখলেন সেই দলটির করুন আত্মসমর্পন। চতুর্থ ইনিংসে মাত্র ২১৭ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে ৭ উইকেটে হারের লজ্জাটা আবার গণ্য হলো বিশ্বরেকর্ডে। প্রথম ইনিংসে ৫৯৫/৮ডি. করে হারÑ১৪০ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এটাই যে অগৌরবের বিশ্বরেকর্ড।
কি হয়নি এই দিনে? ৬৬/৩ থেকে স্কোর থেমেছে ১৬০ এ। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ২৯ রানের লিডের ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ স্কোরেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশÑ টেস্ট অভিষেকে অফ স্পিনার সোহাগ গাজীর দূর্দান্ত বোলিংয়ে চতুর্থ ইনিংসে ২৪৫ রানের সমীকরন মেলাতে পারেনি বাংলাদেশÑঢাকা টেস্টে হেরে গেছে মুশফিকুররা ৭৭ রানে। অগৌরবের সেই অতীতটাও যে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ দল! খুব দরকার না পড়লে ব্যাটিংয়ে নামবেন না বলেও নামতে হলো মুশফিকুর, ইমরুল কায়েসকে ইনজুরি নিয়ে। সাউদীর বাউন্সারে পীচের উপর লুটিয়ে পড়ে মাঠ ছাড়তে হলো মুশফিকুরকে (৫), ইমরুল অনন্যোপায় হয়ে কোনমতে দাঁড়িয়ে মারলেন তিনটি বাউন্ডারি (১২)। প্রথম ইনিংসের মতো পার্টনারের অভাবে ফিফটি পেয়ে ছাড়লেন সাব্বির (৫০)। ওভারপ্রতি ৩ এর অল্প কিছু বেশি লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করা মোটেও দুরুহ হওয়ার কথা নয়। এমন এক পরিস্থিতিতে দাঁড়ানো নিউজিল্যান্ডকে সহজে রানের সুযোগটা তৈরি করে দিয়েছেন তাসকিন, শুভাশিষরা অনিয়ন্ত্রিত বোলিং করে। মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৯ রানের মধ্যে ২ ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়েও দলকে ফেরাতে পারেননি ম্যাচে। চতুর্থ ইনিংসে উইলিয়ামসন এবং রস টেলরের ১৬৩ রানের পার্টনারশিপটি এসেছে ওভারপ্রতি ৬.৪৩ রানে। যা চতুর্থ ইনিংসে দেড়শ’ প্লাস পার্টনারশিপে দ্রæততম বিশ্বরেকর্ড। চেজ করতে নেমে ওভারপ্রতি ৫.৪৭ হারে রান তুলে দ্বিতীয় বিশ্বরেকর্ডটি করেছে নিউজিল্যান্ড। জয় ত্বরান্বিত করতে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ৮৯ বলে সেঞ্চুরি করে (১০৪) টেস্ট ইতিহাসে চেজিংয়ে চতুর্থ দ্রæততম ইনিংসে দলকে পৌছে দিয়েছেন জয়ের বন্দরে। বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানো ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরির কৃতিত্ব মøান করা সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে ০ রানে ফিরে অগৌরবের রেকর্ডটাও ভারী করেছেন! টেস্টে প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে ০ রানÑএমন বৈপরিত্য আছে তাকে নিয়ে মাত্র ৬ জনের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রথম


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ