মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : পূর্ব জেরুজালেমের ফিলিস্তিনি অধিবাসীরাই নতুন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। পূর্ব জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করতে বাধ্য করছে তেল আবিব। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা তা কোনোভাবেই মানতে রাজি নয়। কারণ এতে করে একজন ফিলিস্তিনি শিশু ইসরাইলি মন-মেজাজ নিয়ে বড় হবে। ফিলিস্তিনের চেয়ে ইসরাইলকেই সে বড় করে দেখবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কখনোই চায় না তাদের শিশুরা ইসরাইলের অন্যায়কে ভুলভাবে ন্যায় হিসেবে বুঝতে শিখুক। এজন্য তারা পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনের যে পাঠ্যক্রম আছে, তা অনুসরণ করার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। ফিলিস্তিনের শিক্ষামন্ত্রী সাবরি সাইদাম বলেন, ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলি পাঠ্যক্রম অনুসরণে বাধ্য করার মানে হলো, নিজেদের পরিচয়ের বিরুদ্ধেই সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করা। বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্যক্রম অনুসরণ করানোর মাধ্যমে ইসরাইল তাদের অবৈধ দখলদারিত্বকে যৌক্তিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চায়। এর আগে ১৯৬৭ সালেও ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেমে তাদের পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাসের আন্দোলন-বিক্ষোভের পর সেবার পিছু হটে তেল আবিব। তখনকার মতো এবারও ইসরাইলি পাঠ্যক্রম আরোপের বিরোধিতা করেছেন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। হাতেম খেইস নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘আল-আকসা ফিলিস্তিনিদের পবিত্র ভূমি নয় এ ধরনের কোনো শিক্ষা আমরা শিশুদের দিতে চাই না। ফিলিস্তিনের পতাকাকে অস্বীকারকারী কোনো শিক্ষা আমরা চাই না। আমরা চাই না কোনো ফিলিস্তিনি শিশু অ্যারিয়েল শ্যারনকে বীর হিসেবে জেনে বেড়ে ওঠুক। চাই না আমাদের শিশুরা ফিলিস্তিনের বদলে ইসরাইলি ইতিহাস-ঐতিহ্য জেনে বড় হোক। এদিকে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের পাঠ্যক্রম এরইমধ্যে অনুসরণ করেছে বলে দাবি করেছেন ইসরাইলি এক শিক্ষাবিষয়ক কর্মকর্তা। ২০১৫ সালে প্রায় ১৯০০ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী এই পাঠ্যক্রম অনুসরণ করেছে বলে দাবি তার। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি এ রকম হওয়ার কথা ছিল না বলে মনে করেন ফিলিস্তিনি শিক্ষামন্ত্রী সাইদাম। চুক্তি অনুসারে, ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিদের ওপর কোনো পাঠ্যক্রম ইচ্ছামতো আরোপ করতে পারবে না। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করেই এমনটা করছে ইসরাইলিরা। বিষয়টি স্বীকার করেছেন ইসরাইলি শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেটও। তিনি বলেন, ‘আমি চাই পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলি পাঠ্যক্রম অনুসরণ করা হোক। যা ইসরাইলিকরণকে সহায়তা করবে। অপরদিকে পূর্ব জেরুজালেমের পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, এর মাধ্যমে পূর্ব জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের দূরত্ব সৃষ্টি হবে। এতে নতুন করে সংঘাত আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন আল-জাজিরার বিশ্লেষক জোনাথন কুক। তার মতে, এতে কিছুদিন আগে ফিলিস্তিনিরা ছুরিকাহত করে যেভাবে ইসরাইলিদের হতাহত করেছিল, তা আবারও ফিরে আসতে পারে। আবার জাকারিয়া ওদেহ নামে সিভিক কোয়ালিশনের ডিরেক্টর বলেন, ‘ইসরাইলের পাঠ্যক্রম অনুসরণের বিষয়টি ফিলিস্তিনি শিশুদের মধ্যে ইসরাইলি মানসিকতার বিস্তার ঘটাবে। যা পরবর্তী সময়ে নতুন করে হতাশা এবং সহিংসতার সূত্রপাতও ঘটাবে।’ কারণ ইসরাইল দিনের পর দিন ফিলিস্তিনিদের যেভাবে পরিচয় সংকটের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে, তা তারা কখনোই মেনে নেবে না। এর আগে পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীদের কাছে বই পাঠানোও ইসরাইলিরা ঠেকিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী সাইদাম। কেননা ইসরাইল মনে করে, ফিলিস্তিনি বই পূর্ব জেরুজালেমে সরবরাহ বন্ধ করতে পারলেই তাদের পাঠ্যক্রম পড়তে বাধ্য করানো যাবে। এই চিন্তা থেকেই বই সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছিল। যা পক্ষান্তরে ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলিকরণেই ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এমন কূটকৌশল খাটিয়ে এবং প্রচারণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের এই ইসরাইলিকরণ প্রক্রিয়া ওই অঞ্চলকে আরও বেশি অস্থিতিশীল করবে বলে মনে করেন জোনাথন কুক। যা মধ্যপ্রাচ্য সংকটকে আরও বেশি জাগিয়ে তুলবে। কারণ ইসরাইল-ফিলিস্তিন অস্থিতিশীল থাকলে তাকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে বিভেদের সৃষ্টি হবে। যে বিভেদ থেকে আবারও ফিলিস্তিনিদের চোরাগোপ্তা হামলা এবং ইসরাইলিদের আগ্রাসন চালাতে সহায়ক হবে। এজন্য পাঠ্যক্রম আরোপের মাধ্যমে পূর্ব জেরুজালেমের ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলিকরণে নতুন সহিংসতা সৃষ্টির পাঁয়তারা হিসেবেও দেখছেন অনেকে। আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।