Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনে পুতিনের হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করবেন মার্কিন গোয়েন্দারা

আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদনের একটি ডিক্লাসিফাইড ভার্সন প্রকাশ করা হবে

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনই নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আবারও দাবি করে মার্কিন গোয়েন্দারা জানিয়েছেন তারা পুতিনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করবেন এবং পরবর্তী সপ্তাহে প্রতিবেদনের একটি আনক্লাসিফায়েড ভার্সন প্রকাশ করা হবে। গত বৃহস্পতিবার সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তারা এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ উঠেছে তা এ কমিটির পক্ষ থেকেই তদন্ত করা হচ্ছে। খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার দাবি করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনই মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির কম্পিউটার হ্যাক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সিনেটে শুনানিতে তিনি এ দাবি করেন। মার্কিন শীর্ষ এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুতিন কেন এ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিলেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত আগামী সপ্তাহেই প্রকাশ হবে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এক মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ইমেইল হ্যাক করেছিল রাশিয়া। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িত যেসব ব্যক্তি উইকিলিকসের হাতে ডেমোক্রেটিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্যদের হাজার হাজার নথি তুলে দিয়েছিলেন, তাদেরও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা শনাক্ত করতে পেরেছে। আর গত ডিসেম্বরে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে যেসব হ্যাকিং হয়েছে তার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ব্যক্তিগতভাবে জড়িত বলে বিশ্বাস করেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
এই প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধানরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। বিদেশি হস্তক্ষেপ নিয়ে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। একই দিন সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সামনেও নিজেদের মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দাবি করেন, ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারানোর জন্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তা করতে মস্কো নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল। এক কংগ্রেসম্যান গোয়েন্দাদের কাছে জানতে চান, তারা পুতিনের উদ্দেশ্যের ব্যাখ্যা দেবেন কিনা। তখন গোয়েন্দারা জানান, তারা এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেবেন। ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক জেনারেল জেমস ক্ল্যাপার দাবি করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনই ডেমোক্রেটিক পার্টির ইমেইলগুলো হ্যাকিংয়ের আদেশ দিয়েছিলেন। আগামী সপ্তাহেই পুতিনের উদ্দেশ্য কী ছিল তা ব্যাখ্যা করা হবে বলেও জানান ক্ল্যাপার। ওই হ্যাকিং নিয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ব্রিফ করবেন গোয়েন্দারা। পরবর্তী সপ্তাহে প্রতিবেদনের একটি আনক্লাসিফায়েড ভার্সন প্রকাশ করা হবে।
গত ডিসেম্বরে গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে এনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হিলারির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সন্দেহমূলক সেসব হ্যাকিংয়ের কাজ শুরু করেছিলেন পুতিন। কিন্তু পরবর্তীতে তা বিশ্বের কাছে মার্কিন রাজনীতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে তুলে ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ওই দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাতে আরও জানায়, পাল্টা জবাবের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পুতিনের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপারে তদন্ত জোরালো করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্প বরাবরই রাশিয়ার হ্যাকিং সম্পর্কিত অভিযোগ খারিজ করে আসছেন। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া কোনও ধরনের হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে বলে তিনি মনে করেন না। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা এসব অভিযোগকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও উল্লেখ করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া ওই তথ্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করে উইকিলিকসের কাছে হস্তান্তর করেছে। উইকিলিকস প্রতিনিয়ত ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারিকে অপদস্থ করার জন্য তথ্য প্রকাশ করে আসছে বলে ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। অপর এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, রুশ কর্তৃপক্ষ যে উইকিলিকসের কাছে ওই হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ইমেইল তুলে দেয়, তার কোনও নিশ্চিত প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে নেই। প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে শেষ হওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ওবামা প্রশাসন সম্প্রতি মস্কোর ৩৫ জন কূটনীতিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ার ওপর নতুন করে কিছু নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। রাশিয়া অবশ্য প্রথম থেকেই হ্যাকিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কংগ্রেস সদস্যরা জেমস ক্ল্যাপারের কাছে জানতে চান, তিনি বিষয়টিতে পুতিনের প্ররোচনা ছিল বলতে চান কি না। জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমরা একে প্ররোচনা হিসেবেই বর্ণনা করব। মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারে রাশিয়া বহুমুখী প্রচারণা চালিয়েছে বলেও দাবি করেন ক্ল্যাপার। সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স, এনবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুতিন

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ