Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সংখ্যালঘুরা কেন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?

১৪ দফা কর্মসূচি দিয়ে এরশাদের প্রশ্ন

| প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ২৬ বছর থেকে ধুঁকে ধুঁকে টিকে আছি এ অভিমত ব্যক্ত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ দেশবাসীর প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। কেনো আজ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে? কেনো পুরোহিত, পাদ্রি, ভিক্ষুরা হামলার শিকার হচ্ছে? কেনো নীরিহ মানুষদের জঙ্গিদের হাতে প্রাণ দিতে হচ্ছে? কেনো সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর লুট হচ্ছে? কেনো তাদের জায়গা-জমি বে-দখল হচ্ছে? এসব তো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন হতে পারে না। আমি দ্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই- যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে, তাদের সম্পদ লুট করছে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে এসবের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। গতকাল দলের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন। সমাবেশে নিজের বঞ্চনার ফিরিস্তি দিয়ে ১৩ দফা কর্মসূচি দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি। কতদিন আর বাঁচব...। আমাকে বাঁচাতে হলে জাতীয় পার্টিকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। আমাকে নতুন জীবন দাও।
মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের গৃহপালিত বিরোধী দলীয় নেতা দলের কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, এমএ সাত্তার, সাহিদুর রহমান টেপা, মসিউর রহমান রাঙ্গা, ফখরুল ইমাম,  মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, নাসরিন জাহান রতœা, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, সালমা ইসলাম এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন প্রমুখ।
সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ বলেন, দেশের আজ কী পরিস্থিতি? আমরা ২৬ বছর আগে যখন ক্ষমতা ছেড়ে দিড়েছিÑ তখন মানুষ যতটুকু শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে বাস করতে পেরেছে এখন কী সেভাবে পাচ্ছে? আমরা যে সু-শাসন উন্নয়নের ধারা প্রবর্তন করেছিলাম তা-কি এখনও বহাল আছে? থাকতে পারছে? এখন আমরা দেশে কী দেখতে পাচ্ছি। আমরা খবরের কাগজ খুললেই প্রতিদিন দেখতে পাই- খুন-গুম, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, যৌতুকের বলি, এসিড সন্ত্রাস, ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, দলীয় কোন্দলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এই ধরনের সব খবর। এই দৃশ্য দেখার জন্যই কী জনগণ দেশকে স্বাধীন করেছিল? তিনি আরো বলেন, গত ২৬ বছর ধরে আমরা কঠিন সময় অতিক্রম করে চলছি। এখনও আমরা এক কঠিন সময়ের মধ্যে আছি। আগামীদিনে আমরা কী করতে চাই, কোন রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবো সে ব্যাপারে আপনাদের সামনে আমি কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। সাংবিধানিকভাবে আগামী নির্বাচন ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে হবে। এই নির্বাচন হবে আমাদের বাঁচা-মরার লড়াই। আমরা ২৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে ধুঁকে ধুঁকে টিকে আছি। আগামী নির্বাচনে আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে- সেই লক্ষ্য নিয়ে আজ থেকে পথ চলা শুরু করতে হবে।
এককভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলে ১৩ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন, নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা চালু, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা এবং সারাদেশে গ্যাস সরবরাহ, প্রত্যেক কর্মক্ষম যুবকের কর্মের সংস্থান এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, প্রত্যেক ইউনিয়নে অন্ততঃ একটা গুচ্ছগ্রাম, পথকলি ট্রাস্ট পুনর্গঠন, বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংসদীয় কোটা, চাকরিতে কোটা, উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ আইন প্রণয়ন, সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধান এবং সুরক্ষা আইন প্রণয়ণ, ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন, চাঁদাবাজী-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, বাল্যবিবাহ রোধ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে- মহাসড়কে ডিভাইডার নির্মাণ এবং সড়ক প্রশস্তকরণ।



 

Show all comments
  • এস, আনোয়ার ৭ মার্চ, ২০১৭, ৬:৫১ পিএম says : 0
    নয় মণ ঘি-ও মিলবে না, রাধাও নাচবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এরশাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ