Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এমপি রাজুর আশীর্বাদে রায়পুরার নিলক্ষারচরের লাঠিয়াল সর্দার হলো জেলা পরিষদ মেম্বার

| প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : মাত্র ১ ভোটের ব্যবধানে নরসিংদী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়েছে রায়পুরার নিলক্ষারচরের বহুল আলোচিত লাঠিয়াল সর্দার রাজীব আহমেদ। দোকান কর্মচারী থেকে পল্লী বিদ্যুতের পিয়ন, পল্লী বিদ্যুতের পিয়ন থেকে ঠিকাদারদের দালাল এবং দালালী করে অবৈধ পথে কোটিপতি, কোটিপতি থেকে সাবেক মন্ত্রী রাজুর আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে একেবারে জেলা পরিষদ সদস্য হয়ে গেছেন এই লাঠিয়াল সর্দার রাজীব। আর এই ঘটনা সারা রায়পুরা তথা নরসিংদীর মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। টক অব দি টাউনে পরিনত হয়েছে এই ঘটনাটি।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, রায়পুরার নিলক্ষারচরের বীরগাঁও কান্দাপাড়া গ্রামের শওকত আলীর পুত্র এই রাজীব আহমেদ অভাবের কারণে মাধবদীতে এক কাপড়ের দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকুরী নেয়। সেখান থেকে পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তার সাথে পরিচয় সূত্রে নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১’র পিয়ন চাকুরি খুঁজে নেয়। এই চাকুরির সুবাদে পরিচয় ঘটে পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারদের সাথে। সে ঠিকাদারদের দালাল হয়ে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে মিটারের কন্ট্রাক্ট নিয়ে এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে নিয়ে কয়েক বছরে কোটিপতি হয়ে যায়।
দেশের বাড়িতে আলীশান বাড়ি নির্মাণ করে। নরসিংদীর একটি ডেভেলপার কোম্পানির নিকট থেকে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ফ্লাট ক্রয় করে। কিছুদিন পূর্বে ক্রয় করে ৩৯ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি দামি গাড়ি। গাড়ি-বাড়ির মালিক ও কোটিপতি হয়ে যাবার পর তার পরিচয় ঘটে রায়পুরার এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর সাথে। গত ইউপি নির্বাচনে সে নিলক্ষা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দাবি করে। কিন্তু স্থানীয় শহীদ মেম্বার তাকে সমর্থন না করায় সে মনোনয়ন পায়নি। এতে সে শহীদ মেম্বারের সাথে জিদ করে এলাকায় লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তুলে। তার এই লাঠিয়াল বাহিনী গোটা নিলক্ষা ইউনিয়নকে অশান্ত করে রেখেছে। গ্রাম্য দাঙ্গা সৃষ্টি করে গত ১৪ নভেম্বর রাজীব প্রতিপক্ষের ৩টি মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় ৩টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
কিন্তু এমপি রাজুর লোক বলে থানা পুলিশ ৩টি হত্যা মামলাই ঝুলিয়ে রেখেছে। সে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে বলে তার প্রচার-প্রচারণায় বিঘœ সৃষ্টি হবে বলে পুলিশ মামলাগুলো রুজু করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কিছুদিন পূর্বে এমপি রাজু স্বয়ং রাজীবের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য নিলক্ষা চরে গিয়ে ঘন্টাকাল অবরুদ্ধ থাকেন। এরপরও পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেননি। এমপি রাজুর সাথে থাকা সত্তে¡ও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। এরপর ৩টি লাশের ছবির সাথে লাঠিয়াল সর্দার রাজীবের ছবি দিয়ে জনগণ এলাকায় ব্যাপকভাবে পোস্টারিং করেছে। কিন্তু পুলিশ কর্ণপাত করছে না। এরই মধ্যে গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাত্র ১ ভোটের ব্যবধানে সদস্য নির্বাচিত হয়ে যায় রাজীব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেম্বার

৩১ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ