Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাবি শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন, ছাত্রত্ব বাতিলসহ ৪ দফা সুপারিশ

রাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৫:৪৬ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে নির্যাতনের পর ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে হত্যা হুমকির ঘটনায় অভিযুক্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম ইসলাম ও যুগ্ম সম্পাদক মো. সোলাইমানের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে তদন্ত কমিটিতে উঠে এসেছে। এসময় অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিলসহ ৪ দফা সুপারিশ করেছেন তদন্ত কমিটি।

মঙ্গলবার (২৮ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন।

হল প্রাধ্যক্ষ বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটিতে থাকা সদস্যরা সকল বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তদন্ত করেই আমাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। হল প্রশাসন এ তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান তিনি।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ হলো-
১.অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতা দীর্ঘকাল হলে অবস্থান করলেও হলের আবাসিকতার জন্য কখনো আবেদন করেনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এর আগেও বহু মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি অভিযুক্ত নাইম আলী একাধিকবার হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি অবৈধভাবে হলের সিট দখল, বৈধ শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগে বাধ্য করা, হলের সিট বরাদ্দের জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণে বাধা দেওয়াসহ নানা অনৈতিক কাজে সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে।

২.কৃষ্ণ রায়ের ঘটনাটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ কালের সুনাম ও ঐতিহ্যকে ক্ষুন্ন করেছে। তাই কোনোভাবেই যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরো কঠোর ও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। একইভাবে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করছি আমরা। তা না হলে এমন আরো অনেক দুঃখজনক ঘটনা ঘটবে।

৩. অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জড়িতদের সঠিকভাবে উদঘাটন করা যায়নি ফলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা গেল না।

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি শৃঙ্খলা, সুনাম ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে অনাবাসিক এই দুই শিক্ষার্থীকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিকতা প্রদান না করার সুপারিশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য এই তদন্ত কমিটি জোর সুপারিশ করছে।

এ তদন্ত কমিটির ৪ দফা সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমরা ছাত্রলীগ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। সেখানে তদন্ত করে দেখেছি কোনো রকম মারধরের ঘটনা সেখানে ঘটেনি। হল প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৮৩ নম্বর কক্ষে কৃষ্ণ রায়কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাইম আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় কৃষ্ণ রায় ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন।##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্যাতন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ