Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ

থানাহাজতে নির্যাতন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

নগরীতে এক যুবককে গ্রেফতারের পর থানা হেফাজতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা এ আদেশ দেন বলে আদালতের প্রশাসিনক কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

মামলার আরজিতে পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগকারী সৈয়দ মোহাম্মদ মুনতাকিম ওরফে মোস্তাকিমের (২৩) বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালত নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনের ৫ (১) (ক) ধারায় মোস্তাকিমের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করার আদেশ দেন। অভিযুক্তদের পদমর্যাদা বিবেচনায় পুলিশ সুপারের নিচে নয় এমন কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত সম্পন্ন করে ২৭ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে একজন নিবন্ধিত চিকিৎসকের মাধ্যমে মোস্তাকিমের শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ভুক্তভোগী মোস্তাকিমের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে মোস্তাকিম ও তার পরিবারের নিরাপত্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন আদেশ দেয়া হবে না, তা জানাতে অভিযুক্তদের ১৪ দিন সময় দিয়েছেন আদালত।
মামলার আরজিতে বলা হয়, গত সাত বছর ধরে মোস্তাকিমের মা চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস করে আসছেন। গত জানুয়ারিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি করে। এর প্রতিবাদে রোগী ও তাদের স্বজনরা আন্দোলনে নামে। গত ১০ জানুয়ারি চমেক হাসপাতালের প্রধান গেটে মানববন্ধনের একপর্যায়ে ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। ওসি নাজিম মোস্তাকিমকে আটক করে প্রথমে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঢুকিয়ে মারধর করেন। পরবর্তী থানায় নিয়ে তাকে আবারও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এরপর মোস্তাকিমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন পাঁচলাইশ থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান। ওই মামলায় পাঁচদিন কারাভোগের পর ১৫ জানুয়ারি তিনি জামিনে মুক্ত হন। মামলার আবেদনের পর আদালত মোস্তাকিমের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদার নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সেদিন মেডিকেলের সামনে যে ঘটনা হয়েছিল, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সব সংরক্ষিত আছে। পুলিশের ওপর বিক্ষোভকারীরা চড়াও হয়েছিলেন। মামলায় যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সবই ভিত্তিহীন।
উল্লেখ্য, জামিনে বেরিয়ে আসার পর মোস্তাকিম তার উপর থানাহাজতে বর্বরোচিত নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। এ ঘটনায় তার পাশে দাঁড়ায় মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কর্মীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: থানাহাজতে নির্যাতন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ