গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
হাসান সোহেল : বছর ঘুরে আবার আসছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। বছরজুড়ে মাসব্যাপী এ মেলার অপেক্ষায় থাকেন নগরবাসী। বছরের শুরুতেই রাজধানীর মানুষের কেনা-কাটাসহ আনন্দের অনুষঙ্গ হিসেবে উপস্থাপিত হয় এই আয়োজন। আর মাত্র ৪ দিন পরই ১ জানুয়ারি পর্দা উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার। তাই শেষ সময়ের নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ নিয়ে ব্যস্ত মেলা সংশ্লিষ্টরা। আয়োজক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো জানিয়েছে, এবারে ১৩ ক্যাটাগরিতে ৫৬৮টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। এর মধ্যে ৫৪টি বিদেশি স্টল। আগের মতোই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মেলার ২২তম আয়োজন করা হচ্ছে। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে রপ্তানি বাণিজ্যকে। একই সঙ্গে দেশি পণ্যের ভোক্তা বাড়াতেও নেয়া হচ্ছে বিশেষ কৌশল। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রসহ অংশ নিচ্ছে ২০ দেশ। এবারের মেলায় থাকছে ভিন্ন আয়োজনও। মেলা প্রাঙ্গণের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে গত বারের মতো মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন নামে একটি দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন থাকছে। এ ছাড়া ইকোপার্ক ও শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক। এছাড়া মেলায় এবারও থাকছে মা ও শিশু কেন্দ্র, এটিএম বুথ, রেডিমেট গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিক্স পণ্য, হস্তশিল্পজাত, পাট ও পাটজাত, গৃহস্থালী ও উপহার সামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ক্রোকারেজ, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হার্বাল ও প্রসাধন সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার স্টল।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, মেলায় দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য থাকবে তিনটি গেট। এ ছাড়া ভিআইপিদের আসা-যাওয়ার জন্য পৃথক গেট রাখা হবে। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার দর্শনার্থী মেলায় যাবেন বলে আশা করছে আয়োজকরা। মেলার প্রবেশ ফি হিসেবে প্রাপ্তবয়স্কদের ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের ২০ টাকা দিতে হবে। এদিকে মেলার গুরুত্ব বিবেচনায় গতবারের মতো বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা।
সরেজমিনে আগারগাঁওয়ে মেলার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মেলার প্যাভিলিয়ন ও স্টল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ শেষ সময়ে দ্রæততার সঙ্গে চলছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। নিয়মিত অগ্রগতি তদারক করছেন ইপিবির কর্মকর্তারা। মেলায় অংশ নিচ্ছে দেশি-বিদেশি অনেক নামি-দামি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান নিজেদের প্যাভেলিয়ন ও স্টল সাজাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। প্যাভেলিয়নগুলো এমনভাবে তৈরি হচ্ছে যা দর্শনার্থীদের দেখেই ভালো লাগবে। একই সঙ্গে সূর্যাস্তের পরই ছড়াবে আলাদা দ্যুতি। যা বাণিজ্য মেলার আলাদা আকর্ষণ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন স্টল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে প্যাভিলিয়ন সম্পর্কে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
মেলায় ১৫ হাজার বর্গফুটের তিনতলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন মেগা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করছে দেশের ইলেক্ট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন গ্রুপ। মেলায় আগত সেলফিপ্রেমী দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে আকর্ষণীয় সেলফি কর্নার। একই সঙ্গে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে থাকছে অত্যাধুনিক সুপরিসর লিফট। প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে ওয়ালটনের আকাশ-ছোঁয়ার আকাক্সক্ষার সঙ্গে মিল রেখেই তৈরি করা হচ্ছে প্যাভিলিয়নটি। ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য মেলায় নতুন নতুন পণ্যসামগ্রী উপস্থাপন এবং দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন স্থাপনের মাধ্যমে ওয়ালটন বরাবরই দর্শনার্থীদের চমক দিয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় দর্শনার্থীদের জন্য বাণিজ্য মেলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ প্যাভিলিয়ন স্থাপন করছে ওয়ালটন। নতুন বছরের শুরুতে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নতুন কিছু উপহার দিতেই ওয়ালটনের এই বিশেষ উদ্যোগ।
এদিকে বাণিজ্য মেলায় যমুনা গ্রæপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেক্ট্রনিক্সের প্যাভিলিয়নও আলাদা বৈশিষ্ট্যমÐিত। মেলায় এবারের যমুনা ইলেক্ট্রনিক্সের প্যাভিলিয়ন দু’তলা বিশিষ্ট। প্যাভিলিয়ন নং ২২। এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ব্রান্ড ম্যানেজার সুমন বলেন, মেলায় আমাদের প্যাভিলিয়নটি হবে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এর আগেও মেলায় আমরা অংশ নিয়েছি। কিন্তু এবার আনা হয়েছে আলাদা বৈচিত্র্য। যা দেখেই দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হবেন।
অপরদিকে এবারের মেলায় একেবারেই আলাদা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন প্যাভিলিয়ন নিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম খ্যাতনামা ইলেক্ট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান মাইওয়ান। দেশীয় এই প্রতিষ্ঠানটি হবে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। অনেকটা হেরিটেজ টাইপের।
মাইওয়ান ইলেক্ট্রনিক্স ও মিনিস্টার হাইটেক পার্কের ব্রান্ড ম্যানেজার কেএমজি কিবরিয়া বলেন, এবারের বাণিজ্য মেলায় আমাদের প্যাভিলয়ন হবে সম্পূর্ণ ইকো ফ্রেন্ডলি। আমরা দেশীয় ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ নিয়ে গর্ব করি। মেলায় লাল-সবুজের আদলে এই প্যাভিলিয়ন হবে একেবারেই ব্যতিক্রম। যা দেখে মুগ্ধ হবেন যে কোনো দর্শনার্থী।
এছাড়া আকতার ফার্নিচার, ফিউচার গ্রুপ, ইগলু আইসক্রিম, ব্র্যাক ও নাবিস্কো বিস্কুটের প্যাভিলিয়ন অত্যন্ত আকর্ষণীয় হবে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।