রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে। এই বৈঠক থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষে প্রস্তাবিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের কাঠামো এবং কর্মক্ষমতাবিষয়ক টার্মস অব রেফারেন্স (টিওআর) চূড়ান্ত হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির স্থায়ী সচিব মিন্ট থোয়ে।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছান।
সূত্র জানায়, গত রবিবার জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপ গঠনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশের তরফে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠকে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের টার্মস অব রেফারেন্স কী হবে এবং এর কর্মক্ষমতাইবা কী হবে সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্রমতে, সচিব পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তার যৌথ নেতৃত্বে উভয় পক্ষের ২৪ বা ২৬ কর্মকর্তাকে নিয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপটি গঠনে প্রাথমিকভাবে সম্মত ঢাকা ও নেপিদো। তবে সেটি স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র না দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে হবে, তা আজকের আলোচনায় চূড়ান্ত হবে। যদি মিয়ানমারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের নেতৃত্বে রাখা হয়, তবে বাংলাদেশেরও পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে গঠন হবে। যদি মহাপরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে মিয়ানমার, তবে বাংলাদেশও মহাপরিচালকেই নেতৃত্বে রাখবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় কী হবে, তা নিয়ে মতবিরোধ আছে। বাংলাদেশ সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী ‘জোরপূর্বক বাস্তুহারা মিয়ানমারের নাগরিক’ এ শব্দটির ওপর জোর দিচ্ছে। আর চুক্তিতেও এ কথাটি উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং তৈরি হতে যাওয়া ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ এ পরিচয় সংক্রান্ত এ কথাগুলো চায়। তবে মিয়ানমার এসব রোহিঙ্গার ‘রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত নাগরিক’ হিসেবে পরিচয় দিতে চায়।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ চাইছে, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ পূর্ণ ক্ষমতাপ্রাপ্ত হোক। বাংলাদেশ মনে করে, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ যদি পূর্ণক্ষমতাপ্রাপ্ত না হয়, তা হলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত ও সময়সাপেক্ষ হবে। বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে চায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সব বিষয়ের ক্ষমতার অধিকারী হোক। বিশেষ করে নীতিগত, কৌশলগত এবং বাস্তবায়ন পর্যায়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ যেন স্বাধীনভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে। তা না হলে প্রত্যাবাসান প্রক্রিয়া বিলম্বিত ও ঝুলে যেতে পারে।