পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে সমমনা দলগুলোর সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনগগুলো। এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো যে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে, তাতে জনগণ সাড়া দেয়নি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তারা বলেন, দেশবিরোধী কোনও শক্তি আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। মাথাচাড়া দিলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৫৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল ৫৪টি ঘোড়ার ডিম পেড়েছে। স্বাধীনতার বিরোধী পক্ষ বিএনপি যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে দেশের গণতন্ত্রের বস্ত্রহানি ঘটবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, মিরপুরে শাহ আলী ঈদগাহ মাঠ, ফার্মগেট এলাকাসহ কয়েকটি কয়েকটি স্থানে সমাবেশ করে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এসব সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তৃতা করেন। তবে এবার গত ১০ ডিসেম্বরের মতো রাজধানীর মোড়ে মোড়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের লাঠি নিয়ে মিছিল বা পাহারা দিতে দেখা যায়নি।
ঢাকা দক্ষিণ : বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সমাবেশের আয়োজন করে। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ১২ দলীয় জোট দেখলাম বিজয় নগরে সমাবেশ করছে, সব মিলিয়ে ২৪ দল। ৭ দলীয় জোট প্রেসক্লাবের সামনে চেয়ার পেতে বসে আছে, মঞ্চে ২০ জন সামনে সাংবাদিকসহ আরো ১৫ জন। ১টা পর্যন্ত ৩ দল উপস্থিত ছিল চার দল নেই। ৭ দলীয় ঐক্যজোট তারপর সমমনা ১২ দল বিএনপির সমমনারা দেখলাম। তারা বসে আছে ফুটপাতের উপর। মঞ্চও সেটা স্রোতাও সেখানেই, সবাই ফুটপাত কেন্দ্রিক। তারপর এলডিপি দেখলাম সেই দৃশ্যপট, কয়েকজন হাতেগোনা বসে আছে। ৫৪ দল এখন একজন শেখ হাসিনার বিরেুদ্ধে। কী হবে? ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪ টা ঘোড়ার ডিম পাড়বে, ৫৪টি ঘোড়ার ডিম পাড়বে ৫৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। ভুয়া...ভুয়া... ভুয়া... এটা গরুর হাট। তিনি আরো বলেন, বিএনপিকে বাংলার মাটিতে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যেতে পারে না। বিএনপি রাষ্ট্রকে মেরামত করবে? রাষ্ট্রকে আবার ক্ষমতা পেলে তারা ধ্বংস করবে। এই দেশের গণতন্ত্র বাঁচবে না, তারা ক্ষমতায় আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঁচবে না। তারা ক্ষমতায় আসলে স্বাধীনতার আদর্শ বাঁচবে না। তারা ক্ষমতায় আসলে গণতন্ত্রের বস্ত্রহানি ঘটবে। এ অপশক্তি জঙ্গিবাদের পৃষ্টপোষক, সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্টপোষক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নামক এ অপশক্তিকে বাংলার মাটিতে ক্ষমতা আমরা তুলে দিতে পারি না। বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কি দেখাবেন আপনারা? মুখে মিথ্যাচার আর বিশোদগার। আপনাদের নেই মেট্রোরেল, নেই পদ্মাসেতু, নেই বঙ্গবন্ধু টানেল, নেই উড়াল সেতু, নেই আন্ডারপাস, নেই এক দিনে শত সেতু, কে করেছে? শেখ হাসিনা।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা স্বাধীনতাকে নিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে তাদের রাজপথে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে পঞ্চমবারের মতো শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবো। কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি অনির্বাচিত সরকার চায়। তাদের প্রতিহত করা হবে। তারা নির্বাচনে এলে ভালো। না এলে কোনও আন্দোলন করে লাভ হবে না, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
আবদুর রহমান বলেন, বিএনপির সঙ্গে দেশের জনগণ নেই, তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা হলো সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী শক্তি আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। কেউ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে আমরা তাদের কঠোরভাবে দমন করবো। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন আবার দলটি ষড়যন্ত্র শুরু করছে।
২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের অগ্নিসন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে দাবি করে দীপু মনি বলেন, আসুন জাতির পিতার সোনার বাংলার স্বপ্নকে বুকে নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে অপশক্তিকে প্রতিহত করি। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।
ঢাকা উত্তর : মিরপুরে শাহ আলী ঈদগাহ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বরে তারা (বিএনপি) ধাক্কা দিয়ে আওয়ামী লীগকে ফেলে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু নিজেরাই ধাক্কা খেয়ে পল্টন থেকে গরুর হাটে চলে গেছে। আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিতে গিয়ে নিজেদেরই কোমর ভেঙে গেছে। এখনও সময় আছে ধাক্কাধাক্কি না করে সঠিক পথে আসেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বলে এই শীতে নাকি ঠান্ডা বেশি, আমরা আগামী শীতে রাজপথে নামব। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার রাজপথ ছাড়ে নাই। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। রাজপথে থেকেই আমরা আন্দোলন করে যাব। তিনি বলেন, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে নিজ দেশের মাটিতে পা রাখার মাধ্যমেই আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করেছিল। বাংলাদেশের জনগণের জন্য যে দূরদর্শিতা তিনি দেখিয়েছেন তা স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা স্পর্শ করতে পারিনি। তিনি ধ্বংস প্রায় একটি দেশকে গড়ে তুলতে যে পরিকল্পনা করেছেন তা দেশের মানুষের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। অথচ স্বাধীনতা বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি করে দিয়ে গেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী জিডিপির তালিকাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩৫তম। এটি আমাদের দেশের জন্য অনেক বড় একটি প্রাপ্তি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে অর্থনীতিতে আমাদের অবস্থান ছিল ৬০তম। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে সেই অবস্থানকে এগিয়ে নিয়ে এসে ৩৫তম অবস্থানে নিয়ে এসেছে। বৈশ্বিকভাবে অর্থনীতির এমন বিরুপ অবস্থাতেও সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে গেছে।
সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আগা খান মিন্টু এমপি, সাদেক খান এমপি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
যুবলীগ : রাজধানীর ফার্মগেটে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ সমাবেশের আয়োজন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে না পারলে মির্জা ফখরুলকে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার ওয়াদা করতে হবে। মির্জা ফখরুল সাহেব কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে বলেছেন, সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরবেন না। সরকারের পতন হবে না। কারণ এ সরকার জনগণের সরকার। এ সরকার শান্তির পক্ষের সরকার, এ সরকার উন্নয়নের সরকার; এ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আপনি বলুন (মির্জা ফখরুল) যদি এই সরকারের পতন ঘটাতে না পারেন তাহলে ওই নয়াপল্টনে কান ধরে উঠবস করে রাজনীতি থেকে বিদায় নেবেন। সেই ওয়াদা বাংলার জনগণের কাছে করতে হবে। একই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারে, যারা জাতির পিতার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করতে পারে। যারা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করতে পারে। তারা আর যাই হোক এ দেশের মঙ্গল কামনা করতে পারে না। ওরা খুনি। বিএনপিকে মোকাবিলার জন্য আওয়ামী যুবলীগই যথেষ্ট। যুবলীগ যদি মাঠে নামে দেশবাসী তাদের সাথে থাকবে।
মির্জা আজম বলেন, বিএনপি কর্মসূচি পালন করে সরকার হটানোর জন্য। তারা ক্ষমতায় থাকার সময়েও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অনেক অত্যাচার করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের চেহারা পরিবর্তন করে দিয়েছে। তারা আবারও যদি রাস্তায় নামতে চায় প্রতিহত করা হবে। শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, অপরাধের দায়ে বিএনপি-জামায়াতকে মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যুবলীগ তাদের অনেক ছাড় দিয়েছে, সামনে ছাড় দেওয়া হবে না। আরেকবার মানুষের গায়ে হাত দিলে যুবলীগ সমুচিত জবাব দিবে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ নাঈমসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।