পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নানামুখী প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে ব্যাপক শোডাউন দেখিয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বিশেষ করে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গোলাপবাগের গণসমাবেশ ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনার পর সেটি সফলভাবে সম্পন্ন করার পর বিরোধী দলের আন্দোলনে টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই সমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবি এবং এসব দাবি আদায়ে ২৪ ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হিসেবে গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তবে একই দিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন থাকায় এবং রংপুরে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে ঢাকা ও রংপুর ছাড়া সকল মহানগর ও জেলায় গণমিছিল এবং সমাবেশ করেছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল বের করবে বিএনপি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। যুগপৎ আন্দোলনের এই কর্মসূচিতে ১০ ডিসেম্বরের মতোই ব্যাপক শোডাউন করার পরিকল্পনা করেছে এসব দলের নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ২৪ ডিসেম্বর পুলিশ সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির গণমিছিলে বাধা দিয়েছে। পঞ্চগড়ে আবদুর রশিদ নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। তবুও কিন্তু গণমিছিল ঠেকাতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল সফল হবে। সফলতা দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে জনগণ বিদায় করবে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হওয়ায় ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিলেও ১০ ডিসেম্বরের মতো সরকারকে একটি বার্তা দিতে চায় দলটি। দলের নেতাকর্মী-সমর্থক ছাড়াও এই মিছিলে যাতে সাধারণ মানুষের ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ থাকে সেজন্য কাজ করছে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মীরা। গণমিছিল সফল করতে প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি সভা ও আলোচনা করছেন। নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে থানা ও ওয়ার্ড নেতাদেরকে।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ঢাকায় গণমিছিল নয়াপল্টন থেকে শুরু হবে। আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ।
বিএনপির পাশাপাশি একই দিনে পৃথক পৃথকভাবে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) নেতৃত্বে ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা ঐক্যজোট’ নামে আরেকটি জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ অন্যান্য সরকার বিরোধী অন্তত ৩০টি রাজনৈতিক দল। এই কর্মসূচি সফল করা ছাড়াও আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি, কর্মপন্থা নির্ধারণসহ নীতি নির্ধারণে বিএনপি, এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যসহ বেশ কয়েকটি দল ও জোট লিঁয়াজো কমিটি গঠন করেছেন। এসব কমিটিই আলোচনার মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণ করবেন।
৩০ ডিসেম্বর বিএনপির গণমিছিল শুরু হবে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে। এরপর কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর-মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজার হয়ে বাংলামোটর গিয়ে শেষ হবে। ওইদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গণমিছিল হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কে আমাদের শান্তিপূর্ণ গণমিছিলের বিষয়ে অবহিত করেছি। আমরা যেন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিটি শেষ করতে পারে সেজন্য সার্বিকভাবে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছি। গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারের কাছে আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপিতে গিয়ে গণমিছিলের কর্মসূচি অবহিত করে চিঠি দিয়েছে।
এলডিপি বিকেল ৩টায় রাজধানীর পান্থপথ থেকে গণমিছিল বের করবে। গণমিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে দলটির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, আসুন সবাই মিলে এই নিশিরাতের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করি। বিজয় কেউ এনে দিবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
তিনি আরও জানান, এলডিপি ৩০ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় তেজগাঁওয়ের পূর্বপান্থপথস্থ এলডিপি কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল বের করবে। মিছিলটি মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপনের জন্য সুশৃঙ্খল ভাবে, নিয়মনীতি আইন মেনে মিছিলে অংশ নিতে হবে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর গণমিছিলে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। গতকাল গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় জোটের নেতৃবৃন্দ এ সিদ্ধান্ত নেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল) এর সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম ও পিডিপি’র মহাসচিব হারুন আল রশীদ খাঁন।
সভায় গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য নেতৃবৃন্দ দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখার সাথে একমত পোষণ করে যুগপৎ আন্দোলন-সংগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেন।
সভায় জোটের পক্ষ থেকে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ জোরদার করতে একটি লিঁয়াজো কমিটি গঠন করা হয়। লিয়াজো কমিটির আহ্বায়ক-বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল) এর সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, সদস্য-সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা আবুল কালাম আজাদ, সদস্য-সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম ও সদস্য-পিডিপি’র মহাসচিব হারুন আল রশীদ খাঁন।
নবগঠিত ১২ দলীয় জোট বিজয়নগরে, সাতদলীয় জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল বের করবে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা দুটি স্পটে মিছিল করবে। তবে কোন কোন স্পটে হবে তা এখনো চূড়ান্ত করেনি দলটি। বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটের শরিকদের নিয়ে ইতোমধ্যে আত্মপ্রকাশ হয়েছে ১২ দলীয় জোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির নেতৃত্বে ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা ঐক্যজোট’ নামে আরও একটি জোটের আজ আত্মপ্রকাশ হবে। এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, অন্তত ১০টি রাজনৈতিক দল নিয়ে হবে এ জোট। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে। আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকব। শুক্রবার রাজধানীর একটি স্পট থেকে গণমিছিল বের করব। স্পটের নাম সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।