Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার করলো ছাত্রলীগ, কিন্ত ‍কিভাবে?

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:৫৮ এএম

ছাত্রদলের কমিটির সদস্য পদে থাকা এক নেতাকে বিভাগীয় কমিটিতে পদায়নের পর বহিষ্কার করেছে শাখা ছাত্রলীগ। এমন ঘটনা ঘটেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি)। আব্দুল কাদের সাফায়েত নামে ওই শিক্ষার্থীকে সদ্য ঘোষিত ব্যবস্থাপনা বিভাগের কমিটিতে ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রেখেছিল শাখা ছাত্রলীগ।

গতকাল শনিবার রাতে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করায় ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় ব্যবস্থাপনা বিভাগ শাখা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আ. কাদের সাফায়েতকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হল।

জানা যায়, চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের অনুমোদনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আব্দুল কাদের সাফায়েতকে সদস্য পদ দেওয়া হয়। এরপর চলতি মাসের ৩ ডিসেম্বর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবস্থাপনা বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।

সাফায়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রপুর থানার সাফায়েত এলাকায় কোনো দলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ৭ মাস পরই পেয়ে যান শাখা ছাত্রদলের সদস্য পদ, এর এক মাস পরই শাখা ছাত্রলীগের ব্যবস্থাপনা বিভাগ ইউনিটের ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক।

শাখা ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাফায়েত শাখা ছাত্রলীগে সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজীর ও ছাত্রদলে সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলামের অনুসারী।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, ‘আদর্শ পরিপন্থী কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংগঠন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত প্রমাণ পেয়েছি, তাই তাকে আমরা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করেছি। তার মোবাইলে ছাত্রদল সম্পর্কিত প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই আমরা সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেই। সে সিভি জমা দিয়েছে, রেফারেন্স হিসেবে তার বাবা শিক্ষক আবার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তও না। সে আবার ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ নিয়া প্রতিনিয়ত পোস্ট করে। আমরা বুঝতেই পারিনি সে এসব বিষয়ে সম্পৃক্ত।’

শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ‘আব্দুল কাদের সাফায়েত আমাদের কমিটির সদস্য। ছাত্রলীগের কমিটিতেও ওর নাম এসেছে। ছাত্রলীগ ওকে বহিষ্কার করেছে কিনা জানি না। আমাকে ফোন দিয়ে সে বলেছে—তার ছাত্রদলের আদর্শ পছন্দ, সে ছাত্রদলই করবে, তাকে জোর করে পদায়ন করেছে ছাত্রলীগ।’

এ বিষয়ে সাফায়েত বলেন, ‘আমার গ্রামের একজন ভাই আছে, তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি আমাকে মাঝে মধ্যে ফোন দিতেন, চা খাওয়ার জন্য ডাকতেন। এক পর্যায়ে সিভি দিতে বললে আমি সিভি দিয়ে দেই। তারপরে দেখি যে—আমাকে শাখা ছাত্রদলের সদস্য পদ দিয়ে দেওয়া হয়। পরে আমি সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম ভাইয়ের রাজনীতি করি। আমি আজকেই ছাত্রদল থেকে অব্যাহতি নিতাম, কিন্তু তার আগেই আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

সাফায়েত কার রাজনীতি করতো বা কীভাবে পদ পেলো এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যবস্থাপনা বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাদি হাসান সিজান বলেন, ‘আমি আসলে জানি না সে কীভাবে পদ পেয়েছে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বহিষ্কার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ