পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ ৩ ডিসেম্বর হলেও আজ থেকে অচল হচ্ছে রাজশাহী। আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। নগরীতে চলাচলের অন্যতম বাহন অটোরিকশা আর ইজিবাইকও চলবে না। হোটেল-রেস্তরাঁ এমনকি আবাসিক হোটেলও অঘোষিতভাবে বন্ধ থাকবে। কোনো পক্ষ এমন বন্ধের কথা স্বীকার না করলেও মুখেমুখে চাউর হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি খাবার হোটেলে কথা বললে তারা জানান, মালিক সমিতি রয়েছে, সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটা প্রকাশ্যে হোক অপ্রকাশ্যে হোক তা মানতে বাধ্য। আবাসিক হোটেলগুলোর এমন বক্তব্য। রাজশাহীর মেডিকেলপাড়াখ্যাত লক্ষীপুর এলাকার তিনটি হোটেলে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা জানান, আমাদের বলে দেয়া হয়েছে হোটেলে রোগী ও তার স্বজনদের কাছে যেন অন্য কেউ না থাকে। সাধারণের গণপরিবহন বন্ধ থাকলে স্থানীয় হাট বাজারে স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়বে। পণ্য সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়বে। চাপ পড়বে সাধারণ ক্রেতাদের। অটোচালক মোটর শ্রমিকদের কথা হলো, একদিন গাড়ির চাকা না ঘুরলে আমাদের পেটের চাকাও ঘোরে না। এ কথাটা যাদের বোঝার কথা তারা বোঝে না। যত কষ্ট হয় আমাদের মত গরীব মানুষের।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে বিএনপির প্রচার মিছিল পথসভা হচ্ছে। এসব সভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপির চেয়াারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী অ্যাড. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হারুনার রশিদ এমপি, বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, অ্যাড. শফিকুল হক মিলন, নগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. এরশাদ আলী ঈশা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, নজরুল হুদাসহ নেতৃবৃন্দ। এসব সভায় বিএনপির নেতারা বলছেন যত রকম ষড়যন্ত্র করা হোক সকল বাধা ও চোখ রাঙানিকে উপক্ষো করে সমাবেশ সফল করা হবে। প্রয়োজনে নেতারাই আগে জীবন দেবে।
বসে নেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারাও বিএনপির অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করছে। সমাবেশের প্রধান অতিথি থাকছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। থাকছেন নগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সেক্রেটারি ডাবলু সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, আহসানুল হক পিন্টু, মীর ইশতিয়াক লিমন, অ্যাড. আসলাম সরকারসহ দলের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সেখান থেকে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলা হচ্ছে রাজশাহীতে সমাবেশের নামে বিএনপি কোনো বিশৃঙ্খলা করলে তা বরদাস্ত করা হবে না। যেখানে তারা অনুমতি পাবে সেখনে তারা সমাবেশ করুক। কিন্তু কোন অশালীন কথা, অরাজনৈতিক যেন কথা না বলে। কোন ভাঙচুর, জানমালের কোনো ক্ষয়ক্ষতি করার কোনো বাজে চিন্তা না করে।
এদিকে মাদরাসা মাঠে গণসমাবেশের অনুমতি জেলা প্রশাসক দিলেও শেষ পর্যন্ত ১২টি শর্তে মিলেছে পুলিশের অনুমতি। পুলিশ সূত্র জানায়, তাদের অনুমতি পেতে হলে ১২টি শর্ত মানতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে জানমালের ক্ষতি না করা, বেলাদুটো থেকে পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করা, সমাবেশ স্থলের বাইরে মাইক না লাগানো, আজানের সময় বন্ধ। এমন সব শর্ত সব বিভাগীয় সমাবেশে দেয়া হয়েছে। এদিকে মাদরাসা ময়দান এলাকা ঘুরে দেখা যায় সমাবেশস্থল ঘিরে পুলিশ সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছে। সমাবেশ ঘিরে তাদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, রাসিক সাবেক মেয়র ও এমপি মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, রাজশাহীতে গণসমাবেশ হোক এটা সরকার চায় না। কারণ রাজশাহী বিএনপি’র ঘাঁটি। অন্যান্য জেলায় শত বাধা সত্ত্বেও সমাবেশস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিলো। এ দেখে সরকার ভয় পেয়ে রাজশাহীর সমাবেশ বানচাল করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। মাঠের অনুমতি নিয়েও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নানাভাবে কালক্ষেপণ করে, অনেক র্শত আরোপ করে আংশিক অনুমতি দিয়েছে। অথচ তিনি স্বাক্ষর করে দুইমাস পূর্বে অনুমতিপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দিলেও তারা অনুমতি দেয়নি।
রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের আর মাত্র দুইদিন বাকি। আগামী ৩ ডিসেম্বর বিএনপি’র রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবেশকে ঘিরে সরকার নানা টালবাহানা শুরু করেছে। এই সমাবেশ উপলক্ষে বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশি হয়রানি, মামলা, হামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্মরণকালের সব থেকে বড় সমাবেশ হবে এটা। সমাবেশস্থলে ব্যানার, ফেস্টুন টানানোর বাঁশগুলো খুলে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও পাশের মাঠে থাকার জন্য তাঁবু টানাতে গেলে পুলিশ বাধা দিয়ে তা উচ্ছেদ করে দেয়। এখনো পুরো মাঠে পুলিশ টহল দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সমাবেশে যেন লোক না আসেত পারে তারজন্য সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে। সেইসাথে বিনা কারণে, বিনা ওয়ারেন্টে শুধু হয়রানি নয় সমাবেশে যেন লোক সমাগম কম হয় সেজন্য বিএনপি নেতৃবৃন্দের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ রাতের অন্ধকারে হয়রানি এবং আটক করছে।
অসহনীয় দ্রব্যমূল্য, লাগাতার লোডশেডিং, দুর্নীতি-দুঃশাসন, গুম, হত্যা, মামলা-হামলা, ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চান। এরজন্য আইনশৃংখাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সেইসাথে মাঠে কাজ করতে আর যেন কোনো প্রকার বাধা প্রদান না করা হয় তার ব্যবস্থা করতে কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান মিনু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।