মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনে গত শনি-রোববার কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভগুলো ঝিমিয়ে পড়ছে। বেইজিং সাংহাই ও উহানের মত বেশ কিছু শহরে হওয়া ওই বিক্ষোভে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছিল। এসব বিক্ষোভে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেয়া হয় – যা চীনে অত্যন্ত বিরল ঘটনা।
বিক্ষোভের অবসান ঘটাতে কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। বিক্ষোভে যারা অংশ নিয়েছিলেন – তাদের অনেকে বলছেন যে তারা পুলিশের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন। রাজধানী বেইজিংএর বেশ কয়েকজন বলেছেন, পুলিশ তাদেরকে ফোন করে তারা কোথায় আছেন সে ব্যাপারে তথ্য চাইছে। কীভাবে পুলিশ তাদের পরিচয় জানতে পারলো তা স্পষ্ট নয়। শহরগুলিতে পুলিশ উপস্থিতি অনেকগুণ বেড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে দিয়েছে যেন তারা আইন না ভাঙে।
বিক্ষোভ এর মধ্যেই স্তিমিত হয়ে আসছে। সোমবার বেইজিংএ যে বিক্ষোভ হবার কথা ছিল – তা সমাবেশস্থলটি পুলিশ ঘিরে রাখার কারণে হতে পারেনি। সাংহাই শহরে বিক্ষোভকারীদের ব্যবহৃত প্রধান সড়কটির পাশে বড় বড় প্রতিবন্ধক বসানো হয়। মঙ্গলবার সকালে বেইজিং এবং সাংহাই শহরের এমন কিছু জায়গায় পুলিশকে টহল দিতে দেখা যায় যেখানে টেলিগ্রাম -অ্যাপভিত্তিক কিছু গ্রুপ লোকজনকে জড়ো হবার আহ্বান জানিয়েছিল।
সোমবার রাতে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাংজু শহরে একটি ছোট আকারের বিক্ষোভ শুরু হবার কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে থামিয়ে দেয় এবং কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। খবরে বলা হয়, পুলিশ অনেক লোকের ফোন পরীক্ষা করে দেখছে যে সেখানে ভিপিএন আছে কিনা, টেলিগ্রাম বা টুইটারের মত অ্যাপ আছে কিনা – যা চীনে নিষিদ্ধ। গত দু দিনে বেশ কিছু লোককে আটকও করা হয় - যার মধ্যে এমন লোকও আছেন যারা রাস্তায় ছবি তোলার জন্য থেমেছিলেন।
চীনা সরকারের একজন মুখপাত্র এই বিক্ষোভের জন্য এমন কিছু শক্তিকে দায়ী করেন যাদের অসাধু উদ্দেশ্য ছিল – তবে তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আইনের শাসনের ব্যাপারে দেশটির অবস্থান একক এবং নাগরিকদের সব অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষিত, তবে সেগুলো অবশ্যই আইনের কাঠামোর মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে।
গত সপ্তাহান্তে চীনের বেশ ক’টি শহরে বিক্ষোভের ওপর চীনা নেতৃত্বের দিকে থেকে এটিই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর বিবৃতি। গত বৃহস্পতিবার পশ্চিম চীনের উরুমচিতে একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগে ১০ জনের মৃত্যুর পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। অনেক চীনাই মনে করেন, কোভিড বিধিনিষেধ না থাকলে এ মৃত্যু এড়ানো যেতো। তবে কর্তৃপক্ষ একথা অস্বীকার করছে।
একজন কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে এ বিক্ষোভের কারণে 'জিরো কোভিড' নীতিতে পরিবর্তন আনা হবে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, চীন এসব বিধিনিষেধে পরিমার্জন-পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে। চীনা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দেশের টিকাদান কর্মসূচিকে ত্বরান্বিত করার ঘোষণা করেছেন এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকাদানের ওপর জোর দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের এলাকায় কোভিড-১৯এর উপস্থিতি শনাক্ত হওয়া মাত্রই কঠোর লকডাউন আরোপ করার সুপারিশ করেছে। চীনে গত তিন বছর ধরে একের পর এক লকডাউন এবং গণহারে কোভিড পরীক্ষার জেরে মানুষের ধৈর্য সহ্যের চরম সীমায় পৌঁছেছে। সাংহাই এবং রাজধানী বেইজিংয়ের মত বড় বড় শহরে গত ক’দিনের বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেয়।
ক্লান্ত এবং বিপর্যস্ত চীনারা এখন খোলাখুলি প্রশ্ন করছে, আর কতদিন তাদেরকে শি জিন পিংয়ের এই জিরো-কোভিড নীতি সহ্য করতে হবে? প্রেসিডেন্ট শি এবং চীনা কম্যুনিস্ট পার্টিকে বড় এক রাজনৈতিক পরীক্ষার মুখোমুখি করেছে এই বিক্ষোভ। তাদেরকে এখন একইসাথে এই জনরোষ এবং কোভিড মহামারি সামলানোর একটা পথ খুঁজতে হবে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।