Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাতার রাজপরিবারের আভিজাত্য কল্পকথাকেও হার মানায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানি খেলাধুলার মাধ্যমে কাতারকে বিশ্বের মানচিত্রে তুলে ধরেছেন। জাতীয় অলিম্পিক কমিটির প্রধান হিসাবে তিনি ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ আয়োজনের জন্য কাতারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি প্যারিস সঁ-জাহ্মাঁ ফুটবল ক্লাব অধিগ্রহণের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ২০১০ সালে কাতারি রাজপরিবারের সদস্য শেখ আবদুল্লাহ বিন নাসের আল-থানি স্প্যানিশ ক্লাব মালাগা কিনেছিলেন। কাতারি রাজপরিবারের বিলাসিতা ও আভিজাত্য তাদের খেলাধুলার প্রতি অনুরাগের মতোই উদাহরণযোগ্য, যা কল্পকথাকেও হার মানায়।

একটি রাজপরিবার একটি অসামান্য জীবনযাপন করবে, এটাই স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু কাতারের রাজপরিবার এতটাই বিলাসী জীবনযাপন করে যে, এমনকি বিশে^র শীর্ষ ধনী এলন মাস্ক ও জেফ বেজোসের সম্পদ একত্রিত করলেও তা কাতারের রাজপরিবার সম্পদের সমপরিমাণ হবে না। কাতারের রাজপরিবার নেতৃত্বে রয়েছেন দেশটির বাদশা তামিম বিন হামাদ আল-থানি, যিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী জীবিতদের একজন। কাতারের রাজপরিবার যে অকল্পনীয় বিলাসিতায় জীবনযাপন করেন, তা বিশে^র সেরা বিলিয়নিয়াররাও কেবলমাত্র স্বপ্নেই দেখেন। অত্যাধুনিক গাড়ি বা সুপারকার থেকে শুরু করে ধনী এলাকায় তাদের রাজপ্রাসাদ, অত্যাশ্চর্য সুপারইয়ট পর্যন্ত থানি পরিবার অসাধারণ জীবনযাপনের একটি অনতিক্রম্য মানদণ্ড স্থাপন করেছে।

দোহাতে কাতারের জমকালো রাজপ্রাসাদের মোট সম্পদের দাম ৩৩ হাজার ৫ কোটি মার্কিন ডলার। দোহার প্রাসাদ ছাড়াও থানি পরিবার লন্ডনে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক। আমিরের তৃতীয় স্ত্রী শাইখাহ মোজাহ বিনতে নাসের আল মিসনেদ ৮ কোটি ডলারে একটি কর্নওয়াল টেরেস কিনেছিলেন। তারপর তিনি ২ থেকে ৩টি কর্নওয়াল টেরেসের জন্য অতিরিক্ত ৪ কোটি ডলার প্রদান করেন, যা এটিকে রিয়েল এস্টেটের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সম্পদগুলোর মধ্যে একটি করে তোলে। ২৫ কোটি ডলারের ৩৩ হাজার বর্গফুটের প্রাসাদটিতে একটি স্পা, উষ্ণ সুইমিং পুল, বিউটি সেলুন, খানসামা এবং কর্মচারী কোয়ার্টার, একটি বাচ্চাদের স্থান, গেম রুম, পাউডার রুম, ম্যাসেজ এলাকা, দুটি লিফ্ট এবং একটি জিমনেসিয়াম রয়েছে।

শুধুমাত্র রাজপ্রাসাদই কাতারের শাসকদের বিলাসিতার শেষ কথা নয়। অনেক মূল্যবান শিল্পকর্মসহ সুন্দর সব জিনিসের প্রতিও আগ্রহ রয়েছে তাদের। কাতার-আমিরের কন্যা আল-মায়াসা বিনতে হামাদ বিন খলিফা আল-থানি কাতার মিউজিয়াম অথরিটি (কিউএমএ)-এর রাজপরিবারের প্রধান এবং তাকে বর্তমান শিল্প জগতের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মহিলা বলা হয়। তার চাচাতো ভাই সউদ বিন মুহাম্মাদ আল-থানির ঐতিহ্যবাহী পাণ্ডুলিপি, কার্পেট, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি এবং মুঘলাই গয়নাগুলোর এক বিশাল সংগ্রহ রয়েছে, যা তিনি নিয়মিত যাদুঘরে দিয়ে থাকেন। শেখ সউদের বড় ভাই হাসান বিন মোহাম্মদ বিন আলী আল-থানি একজন অনুরাগী শিল্প সংগ্রাহক যিনি ৬ হাজার ৩শ’টি মূল্যবান শিল্পকর্ম নিয়ে আরব বিশ্বের সবচেয়ে বিস্তৃত সংগ্রাহক।

থানি রাজপরিবারের গাড়ির বহর মানুষ শুধুমাত্র স্বপ্নেই দেখতে পারে। শেখ খলিফা বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানিকে লন্ডনে ৬০ লাখ ডলার মূল্যের বুগাতি দিভো চালাতে দেখা গেছে। গাড়িটি ল্যাম্বরঘিনি সিয়ন এফকেপি৩৭ এবং ফেরারি মনজা এসপি২সহ লন্ডনে পাঠানো হয়েছিল। থানি পরিবারের সদস্যদের বুগাটি শিহন চালাতে দেখা গেছে। কাতারের রাজপরিবারের বিশাল গাড়ি সংগ্রহের মধ্যে আরো রয়েছে বুগাতি ভেহন ভিতেস হেমহার্ন্ত লেজেন্দ, বুগাটি সিহন গ্রে, একটি লাফেরারি অ্যাপারতা, ল্যাম্বরঘিনি সেন্টেনাহিও হোয়াইত ক্যু এবং ল্যাম্বরঘিনি সেন্টেনাহিও রোডস্তারের মতো সুপারকার। হাইপারকারের রাজকীয় বহরটিতে একটি ম্যাকলারেন পি১ও রয়েছে।
কাতারি রাজপরিবারের মালিকানায় রয়েছে ৪০ কোটি ডলার মূল্যের বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল এবং অন্যতম বৃহত্তম সুপারইয়ট কাতারা। ৭ হাজার ৯শ’ ২২ টনের ইয়টটি একটি হেলিকপ্টার ডেক, উপগ্রহ ডোম, অত্যাধুনিক তথ্য আদান-প্রদান যন্ত্র এবং জেট স্কি দিয়ে সজ্জিত। এর অনেক বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে একটি বিশাল বিচ ক্লাব, একাধিক জিম, একটি বিউটি সেলুন এবং বেশ কয়েকটি সুইমিং পুল। ভাসমান প্রাসাদটিতে প্রায় ৩৫ জন অতিথি এবং ৯০ জন ক্রু সদস্যের থাকার ব্যবস্থা আছে।

শুধু জমিতেই নয়, আকাশেও কাতারের রাজপরিবার কল্পনাতীত বিলাসিতার প্রতীক। তাদের ৬০ কোটি ডলার মূল্যের বোয়িং ৭৪৭-৮-এ রয়েছে দশটি বাথরুম, দুই তলায় ছড়িয়ে থাকা কয়েকটি লাউঞ্জ এবং একটি অত্যাশ্চর্য বেডরুম সুইট। নীল, সাদা এবং সোনালী রঙের ছোট এ উড়ন্ত প্রাসাদে ৭৬ জন যাত্রী এবং ১৮ জন ক্রু বসতে পারে, যা বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ৪শ’ ৬৭ জনকে বহন করার জন্য ডিজাইন করা। আরামের পাশাপাশি এটি একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্রে সজ্জিত। সূূত্র : লাক্সারি লঞ্চেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ