পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। ৯০% মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ। ঢাকাকে মসজিদের শহর বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে সুন্দর সুন্দর মসজিদ বানাচ্ছেন। অপরদিকে ১ম শ্রেণি থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা পাবলিক পরীক্ষা থেকে বাদ দিয়ে জাতির সাথে ধোকাবাজি করছেন। তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষীদের নীলনকশা বাস্তবায়নে সরকার ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে। পাবলিক পরীক্ষায় ধর্ম শিক্ষা পূর্বের ন্যায় বহাল, শিক্ষা সিলেবাস ঈমান-আক্বিদা বিধ্বংসী অবৈজ্ঞানিক ডারউইনের বিবর্তনবাদ বাতিল এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণমিছিল বের করে ও স্মারকলিপি প্রদান উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ সমাবেশে দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূমের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মো. আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা দক্ষিনের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারি মাসউদ, মাওলানা কে এম আতিকুর রহমান, শ্রমিক নেতা এইচ এম সিদ্দিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাকী, শহিদুল ইসলাম কবির, আরিফুল ইসলাম ও সাবেক ছাত্র নেতা কে এম শরীয়ত উল্লাহ।
পীর সাহেব চরমোনাই প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি মসজিদ বানাচ্ছেন, এই মসজিদে নামাজ কারা পড়বে, যদি ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকে। আর এদেশের মুসলমানদের ধোকা দিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নাস্তিক বানানোর জন্য ইসলামী শিক্ষাকে পরীক্ষা থেকে বাদ দেয়ার ঘটনা কোনো ভাবেই সহ্য করা হবে না। এস এস সি পরীক্ষা থেকে ইসলামী শিক্ষা বাদ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা থাকবে এটাই মূল কথা। লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা ছিনিয়ে এনেছে। এদেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা উঠিয়ে দেয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করা হয়নি। এখনো বহু মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। এখনো সরকারের বোধদয় না হলে ইসলামী শিক্ষা বহাল রাখার দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে যে আন্দোলনে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। মুসলমানের দেশে ইসলামী শিক্ষাকে সঙ্কোচন করা হবে আর এমন শিক্ষামন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবে তা’হতে দেয়া হবে না। পরে দলের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে গণমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পুরানা পল্টন মোড় হয়ে জিরো পয়েন্টের সামনে পৌঁছলে পুলিশী বাধার সম্মুখীন হয়। পরে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সচিবের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও কেএম আতিকুর রহমান।
উল্লেখ্য যে, গত ৮ অক্টোবর রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা বিষয়ক এক সেমিনার থেকে ২০ দফা দাবি এবং ৩ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই। গণমিছিল ও স্বারকলিপি পেশ কর্মসূচি সফলের জন্য দেশের সর্বস্তরের ঈমানদার জনতা, দলীয় নেতাকর্মীসহ রাজধানী ঢাকাবাসির প্রতি আহŸান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে আজানের সুরে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে, আজানের আওয়াজে ছেলে মেয়েরা ঘরে ফিরে যায়। এদেশে ইসলাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, দেশে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত চলছে। ডারইউনের বিবর্তনবাদ সম্পূর্ণ নাস্তিক্যবাদী মতবাদ, এ শিক্ষা কোনোভাবেই মুসলমানের দেশে চলতে পারে না। তিনি বলেন, মুসলমানদের তীব্র প্রতিবাদ সত্বেও সরকার নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে এদেশের ধর্মপ্রাণ জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে তা প্রতিহত করবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, আমেরিকায় প্রচলিত ডারউইনের মতবাদ এদেশের শিক্ষা সিলেবাসে চালু করে শেষ রক্ষা হবে না। আগামী প্রজন্মকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্রকে দেশবাসী প্রতিহত করবে। মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই ইসলামী শিক্ষার ওপর আঘাত হেনেছে। ড. কুদরতি খোদা শিক্ষা কমিশন জাতির কাধে চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। তিনি বলেন, সরকার সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা শিক্ষা ব্যবস্থা, দেশের অর্থনীতি, রিজার্ভ, ভোটাধিকার ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, এইচ এস সি পরীক্ষায় সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রশ্নপত্র বিলি করে চরম ধৃষ্টতার পরিচয় দেয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ ফেরাউনের মতো ধর্মীয় শিক্ষা ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারি মাসউদ শিক্ষামন্ত্রী ড. দিপু মনি’র পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বলেন, শিক্ষা সিলেবাস থেকে ইসলাম শূন্য করার ষড়যন্ত্র দেশবাসী যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে এদেশ থেকে ইসলাম বিতাড়নের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকানোর চেষ্টা করবেন না। ইসলাম শূন্য করার রিজার্ভ শূন্য করার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেনি। সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা করা হচ্ছে। মদিনার সনদের পরিবর্তে মোদির সনদে দেশ চালানোর পরিণাম শুভ হবে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, ধর্মীয় শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। এদেশের মুসলমানরা ঈমান, তাহজিব তমদ্দুন রক্ষায় প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দিতে প্রস্তুত। তবু ইসলামী শিক্ষা সঙ্কোচনের নীতি বাস্তবায়ন করতে দেবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।