Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ফরিদপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে তল্লাশি হামলা আটক ৯

আনোয়ার জাহিদ/ আবুল হাসান সোহেল ফরিদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

আগামী ১২ নভেম্বর বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের বহু নেতা-কর্মীর বাসায় অভিযানের নামে তল্লাশি, তল্লাশির কৌশলে পুলিশি হামলা ৯ জন নেতা-কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার ফরিদপুর প্রেসক্লাবে দুপুরে জেলা বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ফরিদপুর প্রেসক্লাবের হল রুমে আয়োজিত বিশাল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শতাধিক নেতা-কর্মী।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সভাপতিত্বে সভার প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং বিএনপির গণসমাবেশের প্রধান সমন্বায়ক এ জেড জাহিদ ইসলাম। আগামী ১২ নভেম্বরে ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ এই সমাবেশকে বানচাল করতে নেতা-কর্মীদের মন দুর্বল করতে জেলা উপজেলার বহু নেতা-কর্মীর বাসায় বাসায় গভীর রাতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশ তল্লাশির নামে নেতাদের বাসায় হামলা করে এ সময় বহু নেতাদের বাসায় তাণ্ডবলীলা চালায় পুলিশ। এমনকি নেতা ও কর্মীদের বাসায় না পেয়ে তাদের, মা, বোন, বিবাহযোগ্য মেয়েদের সাথেও আপত্তিমূলক ভাষা ব্যবহার করেন। এটা খুবই দুঃখজন।

জাহিদ হোসেন আরো বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর সকালে বাস শ্রমিকরা কথিত দাবি ধাওয়া করে ধর্মঘটের ডাক দিলেন, ১২ নভেম্বর বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই সকল দাবি মানাটা একটা হাস্যকর বিষয়, এটা দেশবাসী বুঝে জানেন। তাই এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে তাড়ানো যাবে না। অবৈধ ভোট চোর, খুনি সরকারকে হটিয়ে দেশের গণমানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশবাসীর মা বেগম জিয়াকে সকল মামলা থেকে মুক্তি দিতে হবে। তারুণ্য অহংকার ভবিষ্যৎ এর প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। সরকারে ষড়যন্ত্রে মিথ্যা মামলায় দেশ নায়ক তারেক রহমান দেশ থেকে আজ তিনি ১০ হাজার মাইল দুরে। খালেদা জিয়া আমার দলের সকলের মমতাময়ী মা। তারেক রহমান আমাদের ভাই। দেশে গণঅন্দোলন সৃষ্টি করে অবৈধ সরকারকে হটিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

আমার দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে গণআন্দোলনের বিকল্প নাই। আর সে আন্দোলনে অংশ নিতে গণমানুষের পক্ষে আমার এই বিনয়ী আহ্বান। জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, দেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন নেত্রী, মা-মাটি মানুষের আস্তা খালেদা জিয়াকে ২ কোটি টাকার জন্য বন্দি রাখা হয়েছে। ঐ টাকা তিনি খরচও করেননি। এ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে আজ ৮ কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে।

অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা তার বেয়াই, জামাই ও কথিত পুত্রারা, ফরিদপুরের ছাত্রলীগের একজন ছাত্রও ২ হাজার কোটি টাকা পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলার আসামি। সেই মামলায় তার মেয়ের একজন শ্বশুরও জেলে আছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার নগরকান্দার ৭ জন এবং ফরিদপুরের আরো ২ জন নেতাকে পুলিশ আটক করছেন। অনেক নেতার বাসায় পুলিশ হামলা করছেন। এটা আমরা কখনই আশা করিনি। কারণ আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিশ্বাসী।

কেন্দ্রীয় কৃষকদলের দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আওয়ামী লীগ কখনই সুস্থ রাজনীতির দল নয়। ২০১৪ সাল থেকে গুম খুনের রাজনীতি শুরু করছে এখনও করছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের ২৩ আসনে নির্বাচন করে কখনও হারেননি। সেই মাকে কারাবন্দি করে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করছেন।

কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল ইউসুফ কন্যা নায়াব ইউসুফ বলেন, এই সরকার আমার দলীয় ভাইদের হত্যাকারী। মনে রাখবেন, আওয়ামীলীগ সব সময় প্রতিশোধমূলক রাজনীতি করে, ষড়যন্ত্র করে, তারা আন্দোলনমুখী প্রতিপক্ষকে কখনই সহ্য করতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে জেলে রাখছেন, তেমনি তারেক রহমানকেও কায়দা করে মিথ্যা মামলার জালে আটকিয়ে ১০ হাজার মাইল দুরে রাখছেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয়সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দরকার মাশুক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার সময় শেষ, খালেদা জিয়া ও তারকে রহমানেরই হবে বাংলাদেশ।

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ভুঁইয়া বলেন, ফরিদপুরের এই গণসমাবেশ সারা বাংলাদেশের বিএনপির এটা ষষ্ঠ সমাবেশে। বিভিন্ন জেলায় হয়ে যাওয়া সমাবেশ দেখে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ লীগের মাথা নষ্ট। ফরিদপুরের প্রশাসন শহরে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। শহর থেকে ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার দুরত্বে সমাবেশ স্থান দিয়ে কেউ খান্ত হননি। এখন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসা বাড়িতে তল্লাশি শুরু করছে। পুলিশি অভিযানে চলছে অভিনব হামলা।

এ সময় প্রেসক্লাবের হল রুমের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বেগম জিয়ার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য আলহাজ্ব জহুরুল হক শাহজাদা মিয়া, সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল হক, সাবেক মহিলা এমপি ইয়াসমিন আরা হক, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা, মাহবুবুল হাসান ভুঁইয়া পিংকু। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেস আলী ইসা, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. জুলফিকর হোসেন জুয়েল।

গণসমাবেশের প্রধান সমন্বায়কারী এ জেড জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ফরিদপুরের মাটি প্রয়াত জননেতা কে এম ওবায়দুর রহমান ও চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের ঘাঁটি। এই মাটির মানুষ কখনই বেঈমানি করতে পারে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ