Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ড্রোন হামলার জবাবেই ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা : পুতিন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২২, ৯:৩৮ এএম

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ক্রিমিয়ায় মস্কোর নৌবহরে ড্রোন হামলার জবাবে ইউক্রেনের অবকাঠামোর ওপর রুশ হামলা এবং কৃষ্ণ সাগরের শস্য রপ্তানি কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মস্কোর জাহাজে ওই হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন তিনি।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন বলেন, ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলো সমুদ্রের এমন এলাকায় হামলার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে শস্যবাহী জাহাজগুলো চলাচল করে থাকে। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।
এর মধ্যে সম্প্রতি অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলার দায় ইউক্রেনের ওপর চাপিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্যশস্য রপ্তানির বিষয়ে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত খাদ্যশস্য চুক্তি স্থগিত করে রাশিয়া।
এরপর সোমবার ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়। এতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং অন্যান্য শহরে ব্যাপক বিদ্যুৎ ও পানির সংকট দেখা দেয়। সোমবারের এই হামলার পর দেশটির বিভিন্ন শহরের লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুবিহীন এবং কিয়েভের প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দা পানির সংকটে পড়েন।
ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ ফেসবুকে এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ান বাহিনী সোমবার অন্তত ছয়টি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের অবকাঠামোতে গোলাবর্ষণ করেছে।
ওই হামলার পর সোমবার টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘আমরা যা করতে পারি এটা পুরোপুরি তা নয়’ ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ইউক্রেনে হামলায় আরও পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রুশ হামলায় পানিবিদ্যুৎ বাঁধসহ জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ, তাপ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ সিনহুবভ টেলিগ্রামে বলেছেন, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ হামলার পর প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ৫০টি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৪৪টি গুলি করে ভূপাতিত করেছে। কিন্তু বাকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর হামলার কারণে কিয়েভের ৮০ শতাংশ এলাকা পানিবিহীন হয়ে পড়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ইউক্রেনের পুলিশ জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল বলেছেন, সোমবার ইউক্রেনের ১০টি অঞ্চলের ১৮টি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়। হামলার শিকার স্থাপনাগুলোর বেশিরভাগই জ্বালানি অবকাঠামো।
এসব হামলার মাধ্যমে রাশিয়া কার্যত নিজেদের জন্য নিরাপত্তা খুঁজছে। সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনকে অবশ্যই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, বেসামরিক জাহাজ বা রাশিয়ান খাদ্যশস্য সরবরাহকারী জাহাজের জন্য কোনো ধরনের হামলার হুমকি থাকবে না।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন-রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ