Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনায় গণসমাবেশ শেষেও পুলিশ ও আ.লীগের তাণ্ডব অব্যাহত

অভিযোগ বিএনপির

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাধা, হামলা, প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে খুলনায় ব্যাপক জমায়েতের মাধ্যমে গণসমাবেশে করেছে বিএনপি। গত শনিবার খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে দুই লক্ষাধিক নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশ শুরুর আগে নেতা কর্মীদের আসতে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। সরকার সমর্থিত মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে ধর্মঘট ডেকে বন্ধ করে দেয়া হয় সড়ক ও নৌ যোগাযোগ। সমাবেশে আসার পথে স্থানে স্থানে হামলা চালানো হয়। বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে শাসক দলের হামলায় কমপক্ষে ৩০০ নেতা কর্মী আহত হয়েছেন। একজন নদীতে পড়ে নিঁখোজ রয়েছেন। তবে সমাবেশ শেষে এখনোও তাণ্ডব চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। তাদের হামালায় বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে মহানগর বিএনপির সদস্য খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিকসহ ১৩৭ জনকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি প্রদান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হচ্ছে। তছনছ করা হয়েছে মৎস্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান আছিয়া সী ফুড। দুটি বিএনপি অফিস আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রেল স্টেশনে ভাংচুর চালানোর অভিযোগ এনে জিআরপি থানায় এবং সংঘর্ষের অভিযোগে দৌলতপুর থানায় দুটি মামলা হয়েছে।

গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ আনেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা। তিনি বলেন, কর্মসূচি সফল করতে আমরা সমাবেশের আগেই একাধিক দফায় পুলিশ প্রশাসনের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সহায়তা চেয়েছিলাম। পুলিশ কমিশনার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্ত তারা প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে। লঞ্চ চলাচল, ট্রলার চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। খুলনা আসার পথে নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে। অনেক স্থানে পুলিশও বিএনপি কর্মীদের সাথে সংঘাতে জড়িয়েছে।

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, খুলনা মহানগরীর সকল থানায় আওয়ামী তান্ডবলীলা চলেছে। দিনভর সশস্ত্র অবস্থায় মোটরসাইকেল মহড়া ও অশালিন, কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ দিয়ে শ্লোগান দিয়েছে তারা। আগে থেকেই গণপরিবহন বন্ধ ছিল। প্রায় অচল নগরীতে জরুরী প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছিলেন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মহড়ায় তারাও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছেন। আওয়ামী ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তাকিুল ইসলাম জহিরের মালিকানাধিন আছিয়া সী ফুড। সাবেক কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির সদস্য কে.এম হুমায়ুন কবিরের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে কাউন্সিরর হাফিজুর রহমান মনির বাসভবনেও। খানজাহান আলী থানা বিএনপি নেতৃবৃন্দ নদীপথে খুলনায় আসছিলেন। খালিশপুরের আলমনগর ও পরবর্তীতে তারা ট্রলার ঘুরিয়ে বিএল কলেজ ঘাটে নেমে নতুন রাস্তা ধরে মিছিল করে খুলনায় আসার পথে দ্বিতীয় দফায় বিডিআর ক্যাম্পের সামনে তাদের ওপর হামলা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম মনা বলেন, বাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল গফফার বিশ্বাস জানিয়েছেন, কোন পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে তা আমরা জানিনা। আর মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেছে, শ্রমিক ইউনিয়ন কোন ধর্মঘট ডাকেনি। মূলত সরকারের চাপে বিএনপির গণসমাবেশকে বানচাল করতে এ্ই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়।

গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনা বিভাগ জুড়ে চালানো পুলিশ ও শাসক দলীয় ক্যাডারদের সহিংসতার সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টায় কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
এ সময় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তারিকুল ইসলাম জহির, আবু হোসেন বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ