মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের শূন্য-কোভিড নীতি প্রমাণ করছে যে, নেপালের সঙ্গে দ্বিমুখী বাণিজ্য পুনরায় আরম্ভের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা। করোনার কারণে সীমান্ত বন্ধের ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশটিতে নেপালের রপ্তানি তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
চীন তার সীমান্ত শক্তভাবে বন্ধ করে রেখেছে, যেখানে গত এক বছরে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই সীমান্ত ফের খুলে দিয়েছে। ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া কিছু চেকপয়েন্টে ট্রাক এবং পচা ফলের ঢিবি আটকে গেছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাসুওয়াগাধি-গিরং এবং তাতোপানি-ঝাংমুতে দুটি প্রধান ক্রসিংসহ চীনের সঙ্গে নেপালের ১ হাজার ৩৮৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত গত দুই বছর ধরে দেশটির রপ্তানিকারকদের জন্য বন্ধ রয়েছে। যদিও চীনা পণ্যের একটি সরবরাহ অন্য পথে যেতে দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেপালের বেশিরভাগ রপ্তানি ভারত বন্ধ করে দিয়েছে। তাই চীনা বাজারকে সংকটপূর্ণ বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু সীমান্ত বিধিনিষেধগুলো দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে, ব্যবসায়িক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। আদিবাসী সম্প্রদায় এবং কৃষকদের প্রভাবিত করেছে, যারা তাদের জীবিকার জন্য আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করে।
ডেনমার্কে নেপালের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং সেন্টার ফর সোশ্যাল ইনক্লুশন অ্যান্ড ফেডারেলিজমের (সিইএসআইএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান বিজয় কান্ত কর্ণ বলেন, ‘কোভিডের আগে নেপালে ৮০-৯০টি কন্টেইনার আসত, কিন্তু এখন রাসুওয়াগাধিতে দিনে মাত্র তিন থেকে সাতটি আসে এবং ১৪টির বেশি নয়।’
তাতোপানি চেকপয়েন্টে প্রতিদিন পাঁচ থেকে দশটি কন্টেইনার নেপালে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কর্ণ বলেন, যিনি দুই সপ্তাহ আগে গ্রামে গিয়েছিলেন এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ‘এটি চীনা কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করে’, বলেন তিনি।
নেপালি রপ্তানিকারকরা সীমান্ত বিধিনিষেধের অধীনে আরও খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। নেপাল ট্রেড ইনফরমেশন পোর্টাল অনুসারে, ২০১৮ সালে চীনে নেপালের চালানের মূল্য ছিল ২.৪ বিলিয়ন নেপালি রুপি (১৮.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। কিন্তু গত বছরের শেষ নাগাদ তা ৯৯৪ মিলিয়ন নেপালি রুপিতে নেমে এসেছে।
নেপালের রপ্তানিতে চীনের অংশ ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে ২.৮৪ শতাংশ থেকে ২০২১-২২এ ০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থনীতিবিদ এবং সাউথ এশিয়া ওয়াচ অন ট্রেড ইকোনমিক্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের চেয়ারম্যান পশ রাজ পান্ডে বলেছেন, ২০১৭-১৮ সালে চীনে নেপালের রপ্তানির প্রায় ৫০ শতাংশ রাসুওয়াগধি সীমান্ত দিয়ে পার হয়েছে। কিন্তু সেই সংখ্যা এখন শূন্য।
কাঠমান্ডু এ মাসের শুরুতে বলেছিল যে বেইজিং দ্বিমুখী বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাসুওয়াগাধি এবং তাতোপানি চেকপয়েন্টগুলো খুলতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু পরে বেইজিংয়ের প্রকাশিত বিবৃতিতে সেই আশ্বাস ছিল না।
নেপালের সীমান্তবর্তী তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে চীন দুটি চেকপয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। নেপাল ফরেন ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুনীল কুমার ধানুকা বলেন, সস্তা দামের কারণে ব্যবসায়ীরা সাধারণত চীন থেকে খাবার, কাপড় এবং অন্যান্য উত্সব সামগ্রী আমদানি করে। তিনি বলেন, চীন এখনও তার শূন্য-কোভিড কৌশল নিয়ে অটল রয়েছে। তাই কাস্টমস পয়েন্ট কখন খুলবে তা কেউ বলতে পারে না।
তাতোপানিত সীমান্ত ২০১৯ সালের মে মাসে শুধুমাত্র বাণিজ্যের জন্য খোলা হয়েছিল। ভূমিকম্পে আঘাত পাওয়ার চার বছর পর আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যরা যারা ঐতিহ্যগতভাবে তিব্বতে ভেষজ এবং ঔষধি গাছ রপ্তানি করে আসছেন, তারা আর তা করতে পারবেন না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত কর্ণ বলেন, হাজার হাজার লোক চাকরি হারিয়েছে। পরিবহনকারী, শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দা, স্থানীয় রেস্তোরাঁ, হোটেল সবকিছুই প্রভাবিত হয়। সীমান্তে বাণিজ্য কমে যাওয়ার পর পুরুষরা আবার কাজের সন্ধানে রাজধানী কাঠমান্ডুর মতো অন্যান্য শহরে পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, আগে এটি একটি প্রাণবন্ত শহর ছিল। সম্প্রতি যখন আমি পরিদর্শন করেছি, তখন আমি ভেবেছিলাম এটি একটি মৃত শহর। সেখানে কিছুই নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।