মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী কার্বন ডাই অক্সাইড সবচেয়ে বেশি নিঃসরণ করে চীন। অথচ দেশটি কার্বন নিঃসরণ কমানোর চেষ্টা তো করছেই না, উল্টো গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যে যুগান্তকারী জলবায়ু আইন পাস করেছে, তা নিয়ে উপহাস করছে বেইজিং। দেশটির এমন আচরণে হতাশ প্রশান্ত মহাসাগরী অঞ্চলের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো।
সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু আইনটি পাশের পর গত ১৭ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক ব্যঙ্গাত্মক টুইটে বলে, ‘শুনে ভালো লাগলো! তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো: যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারনে কি না!' ওই টুইটের প্রতিক্রিয়ায় চীনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নস জানিয়েছেন, 'বাজি ধরতে পারেন, আমেরিকা তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।'
দ্য হংকং পোস্ট জানিয়েছে- রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নস স্থগিত জলবায়ু আলোচনা পুনরায় শুরু করতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জলবায়ু ইস্যুটি একক কোন দেশের নয়, বরং বৈশ্বিক ইভেন্ট। তাই কোন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে জলবায়ু কাকর্যক্রম থেকে বের হয়ে যাওয়া মানে পুরো বিশ্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া।
এর আগে, আগস্টের শুরুর দিকে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জলবায়ু আলোচনা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় চীন।
সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০০৬ সালে চীন বার্ষিক কার্বন নির্গমনে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যায় এবং তখন থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নির্গমনকারী বেইজিং। ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চীনের কার্বন নির্গমন তিনগুণ বেড়েছে। এদিকে, প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, গত দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্বন নিঃসরণ কিছুটা কমেছে।
গতবছর গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনের সময় প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে- চীন কার্বন ডাই অক্সাইডের বৃহত্তম নির্গমনকারী। মানব ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে বিশ্বে উৎপাদিত কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রায় ৩০ শতাংশই নিঃসরণ করছে দেশটি। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনও কার্বন ডাই অক্সাইডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিঃসরণকারী দেশ, তবে এই হতাশাজনক রেকর্ডের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি অ্যাজেন্সি'র তথ্য বলছে-২০১৯ সালে চীন ৯.৯ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করেছে। একই বছর যুক্তরাষ্ট্রের নির্গমন ছিলো ৪.৭ বিলিয়ন টন। আর গ্লোবাল কার্বন অ্যাটলাস বলছে- ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ৫.২ বিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ করেছে সেখানে চীন করেছে প্রায় দ্বিগুণ অর্থাৎ ১০.৫ বিলিয়ন টন!
হংকং পোস্ট জানিয়েছে- কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য রাখতে দরকার বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দেশ- চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি কার্বণ নিঃসরণ করে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনের পিছু হটা জলবায়ু পদক্ষেপকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলবে।
দ্য প্রিন্ট বলছে- তাইওয়ানকে শাস্তি দিতে গিয়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশের পিঠে ছুরি বসাচ্ছে চীন। এটা অদূরদর্শী পদক্ষেপ। জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো। যার পেছনে কার্বন নিঃসরণ দায়ী। কিন্তু চীন নিঃসরণ না কমিয়ে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত দেশের পাশে ঋণ ও অর্থ সহায়তা নিয়ে যাচ্ছে। তবে দেশগুলো চীনের এমন পদক্ষেপ ধরতে পারছে, যারপরনাই বেইজিংয়ের দ্বিচারিতায় হতাশা ব্যক্ত করছে দেশগুলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।