মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চলতি মাসে আফগানিস্তানে বন্যায় ১৮২ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও আড়াইশো মানুষ। প্রবল বর্ষণের পর মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় আফগান প্রদেশগুলোতে সৃষ্ট বন্যায় এই হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে।
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, চলতি মাসে আফগানিস্তানে বন্যায় ১৮২ জন নিহত এবং ২৫০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৩ হাজার ১০০টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং হাজার হাজার গবাদি পশু নিহত হয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানের পক্ষে একা এই বন্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আর তাই পুরো বিশ্ব, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ইসলামিক দেশগুলোকে আমাদের সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করছি।’
আফগানিস্তান চলতি বছর বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুগছে। যার মধ্যে খরাসহ গত জুন মাসে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পের ঘটনাও রয়েছে। শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পে এক হাজার জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
২০ বছর পর ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। এছাড়া তালেবানের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর থেকে দেশটি আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
অবশ্য বৈশ্বিক মানবিক সংস্থাগুলো কয়েক মাস ধরে আফগানিস্তানে সহায়তা প্রদান করেছে। কিন্তু এসব সংস্থা সতর্ক করেছে, হাজার হাজার গৃহহীন এবং আশ্রয় বা বিশুদ্ধ পানির সংকটজনিত মানবিক বিপর্যয় এড়াতে তাদের আরও কাজের সুযোগ এবং তহবিল প্রয়োজন।
আলজাজিরা বলছে, আফগানিস্তানের মধ্য লোগার প্রদেশের খোশি জেলায় সাহায্য কর্মীরা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে শক্তিশালী বন্যার কারণে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে ফসলের ক্ষেত কাদায় ভরে গেছে এবং মৃত পশুর মৃতদেহ স্তূপ হয়ে পড়ে আছে।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা জানিয়েছে, জেলায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কমপক্ষে ছয় শিশুসহ ২০ জন নিহত হয়েছে এবং আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।
ইউনিসেফ আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান অ্যান কিন্ড্রাচুক বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর বলেছেন, ‘মানুষ সবকিছু হারিয়েছে... তারা রাতারাতি সবকিছু হারিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘(লোকেরা) নিশ্চিত নয় যে পরবর্তীতে কী হবে, তারা এই শীতে কীভাবে খাবে, তাদের জীবিকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।’
গ্রীষ্মকালে প্রায়ই উত্তর এবং পূর্ব আফগানিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত হয়, যার ফলে প্রতি বছর শত শত মানুষ মারা যায়। গত বছর রাজধানী কাবুল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার (১২০ মাইল) উত্তর-পূর্বে প্রত্যন্ত কামদেশ জেলায় বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া নিখোঁজ হয় আরও বহু মানুষ।
এর আগে ২০২০ সালে পারওয়ান প্রদেশের রাজধানী চারিকর শহরের বড় অংশজুড়ে বন্যার কারণে উত্তর ও পূর্ব আফগানিস্তানে কমপক্ষে ১০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল।
এছাড়া প্রতিবেশী পাকিস্তানে কয়েক ডজন জেলা প্রবল বৃষ্টির পর সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে গেছে। গত জুনের মাঝামাঝি থেকে দেশটিতে কমপক্ষে ৪৩৭ জন নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার লোককে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বন্যা এবং মুষলধারে বৃষ্টির কারণে প্রতি বছর অসংখ্য আফগান নাগরিক মারা যায়। বিশেষ করে দরিদ্র গ্রামীণ এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত বাড়িগুলো প্রায়ই ধসে পড়ার ঝুঁকিতে থাকে। সূত্র : আলজাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।