মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থ এবং দেশটির আঁকা ‘লাল রেখা’ উপেক্ষা করে ন্যাটো দেশগুলো ইউক্রেন সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। এই নীতি পারমাণবিক শক্তির মধ্যে সংঘর্ষের কারণ হতে পারে। গতকাল এ মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই রিয়াবকোভ। এদিকে, মেলিটোপোল শহরে একটি ইউক্রেনীয় মানববিহীন আকাশযান বা ড্রোন ভূপাতিত করেছে রুশ সেনা।
রুশ গণমাধ্যম ইজভেস্টিয়ার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে রিয়াবকোভ বলেন, রাশিয়া প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে। যখন দেশটির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে, তখন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া। চীনকে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আলোচনায় বাধ্য করার মার্কিন প্রচেষ্টার বিষয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি এই পদক্ষেপটিকে বিপরীতমুখী হিসাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এ ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা উভয়েরই পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য ফলাফলের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা থাকা উচিত। যদিও বর্তমান অস্থিরতার মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি বেশি, তবে এটিকে কৃত্রিমভাবে স্ফীত করা উচিত নয়, রিয়াবকভ সতর্ক করেছেন। তিনি পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি বৃদ্ধির জন্য কিয়েভ সরকার এবং তার পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকদের দোষারোপ করেছেন। উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার রেড লাইন উপেক্ষা করা এবং রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার জন্য ন্যাটোর ধ্বংসাত্মক পথকে অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং আরও কোনো উত্তেজনা রোধে প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
মেলিটোপোলে ইউক্রেনের ড্রোন ভূপাতিত : জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান কাউন্সিলের সদস্য ভøাদিমির রোগভ বলেছেন, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী রোববার রাতে মেলিটোপোল শহরে একটি ইউক্রেনীয় মানববিহীন আকাশযান বা ড্রোন ভূপাতিত করেছে। ‘(ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির) জেলেনস্কির জঙ্গিরা আবারও নাৎসিদের থেকে মুক্ত হওয়া শহরে শান্তিপূর্ণ জীবনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে,’ তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন। ‘রাশিয়ান বিমান প্রতিরক্ষা নোভি মেলিটোপোল জেলায় একটি যুদ্ধ ড্রোনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়েছে,’ রোগভ যোগ করেছেন। জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা মুক্ত করা হয়েছে কিন্তু এর প্রশাসনিক কেন্দ্র, জাপোরোজিয়ে শহর, কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অঞ্চলটিতে রাশিয়ার পরিচালনা সংস্থাগুলো অস্থায়ীভাবে মেলিটোপোলে অবস্থিত।
সেভাস্তোপলের বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলা নস্যাৎ : ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী রোববার সেভাস্তোপলের বেলবেক সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলার চেষ্টা করেছিল। তবে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সে আক্রমণকে প্রতিহত করে। শহরের গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছেন। ‘আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইয়েভপাটোরিয়া থেকে বেলবেকের দিকে আসা নতুন লক্ষ্যবস্তুগুলোকে ধ্বংস করেছে। সবাইকে শান্ত থাকার জন্য একই অনুরোধ জানাচ্ছি,’ তিনি লিখেছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে, ক্রিমিয়া এবং সেভাস্তোপল বেশ কয়েকবার আক্রমণ করা হয়েছে। এর আগে, ব্ল্যাক সি ফ্লিট সদর দফতরের বিরুদ্ধে আরেকটি হামলা চালানো হয়েছিল। সেখানে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা একটি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছিল। তবে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্বাধীনতা দিবসে ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে রাশিয়া : ইউক্রেনের ৩১তম স্বাধীনতা দিবস আগামী ২৪ আগস্ট। একই দিনে রুশ হামলার ছয় মাসও পূর্ণ হবে। দিনটিতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ভয়াবহ হামলার আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, খুব খারাপ কিছু করতে পারে রাশিয়া। আমাদের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য সাংঘাতিক হামলার পরিকল্পনা করছে মস্কো। এ অবস্থায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, সম্প্রতি আক্রমণের তীব্রতা অনেকটাই বাড়িয়েছে রুশ সেনারা। জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে নতুন করে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে রাশিয়া। এছাড়া খারকিভেও লাগাতার গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে দেয়া এক ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের সকলকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, এই সপ্তাহে রাশিয়া বিশেষভাবে কুৎসিত ও খারাপ কিছু করার চেষ্টা করতে পারে। তবে ইউক্রেনীয়রা মস্কোকে হতাশা ও ভয় ছড়ানোর কোনো ধরনের সুযোগ দেবে না।
ক্রিমিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে একইভাবে ক্রিমিয়াতে আক্রমণ চালিয়ে তা নিজেদের দখলে নিয়েছিল রাশিয়া। তবে তিনি দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ধরিয়ে দেয়ার জন্যই হামলা করবে রাশিয়া। কিন্তু রুশ হামলায় ভয় পাবে না কিয়েভ। বরং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে ইউক্রেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ইউক্রেন সীমান্তে বড় ধরনের মিসাইল ও সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে রাশিয়া। বিষয়টিকে বড়সড় হামলা চালানোর প্রস্তুতি বলেই মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনহুব খারকিভের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য করে সতর্কাবার্তায় লেখেন, ঘরে থাকুন এবং সতর্কতা অবলম্বন করুন! সূত্র : রয়টার্স, সিএনবিসি, তাস, বিবিসি নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।