শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
রাতুল আর ফারিয়ার দুই বছরের সংসার। বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় ফারিয়া টের পেয়েছে রাতুল মানুষ হিসেবে বেশ সহজ সরল প্রকৃতির হলেও স্বামী হিসেবে অসাধারণ। স্ত্রীর প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব রাতুলের। আজ সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তল্লাট কাঁপানো বৃষ্টি যাকে বলে। দুপুরের দিকে রাতুল ফারিয়াকে বললো- ‹চলো বৃষ্টিতে ভিজি।› ফারিয়ার তখন মন খারাপ ছিল। কারণ তার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড কাজ করছিল না। অনেক ট্রাই করার পর সুফল আসেনি। তাই মন খারাপ।
এই মন খারাপের সময় রাতুলের বৃষ্টিবিলাসের নিমন্ত্রণকে ভালো লাগেনি বলে মুখের উপর না করে দিয়েছে। তারপরও বারবার রাতুল অনুরোধ করে গেল বৃষ্টিতে ভেজার। না, রাজী হয়নি ফারিয়া। এত অনুরোধ করার পরও স্ত্রীর নাখোশ আলামত দেখে বিরক্ত হল। সেই বিরক্ত ক্রমান্বয়ে রাগে পরিনত হয়। তারপরও ফারিয়ার টনক নড়েনি। জিদ্দি কণ্ঠে রাতুলকে বলল, ‹তোমার ইচ্ছে হলে তুমি ভেজো। আমি পারব না।› রাতুল রেগে থাকলেও ফারিয়াকে বৃষ্টিতে ভেজাতে রাজী করাতে বলল, ‹তুমি যদি এখন আমার সঙ্গে বৃষ্টিতে না নামো, তাহলে আমি ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করব।› বলেই রাতুল ছাদের সিঁড়ি ডিঙিয়ে হনহন করে উপরে চলে গেল। ফারিয়া দেখেও না দেখার ভান করে রইল কেবল। তার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড কাজ করছে না, তাই মাথা নষ্ট।
পাঁচ মিনিট পার হল। বাইরে মেঘের গুড়ুমগুড়ুম শব্দ আর বজ্রপাত হচ্ছে অনর্গল। রাতুলকে মনে পড়ল ফারিয়ার। আত্মহত্যা করবে বলে সে যে ছাদে গেল! হঠাৎ ভয় হল ফারিয়ার। রাতুল সরল প্রকৃতির। যদি সত্যি সত্যি কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে! শঙ্কিত মন নিয়ে ছাদে গেল ফারিয়া। ছাদের সিঁড়ি ঘরের কাছে আসতেই দেখে রাতুল ঘাপটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে। কি ব্যাপার, তুমি ছাদে যাওনি? তুমি না আত্মহত্যা করবে, তো এখানে কেন? ইয়ে মানে...! আমাকে ভয় দেখাতে আত্মহত্যার নাটক করেছো, না? উঁহু। আমি আত্মহত্যা করতেই এসেছি বাইরে এখন বজ্রপাত হচ্ছে তো, তাই যেতে সাহস পাচ্ছি না। বজ্রপাতটা থামুক, দেখবে সত্যি সত্যি আমি ছাদ থেকে লাফ দিয়েছি দেখে নিও। হা হা হা।
ফারিয়ার হাসিতে লজ্জা পেল রাতুল। ফারিয়া মনে মনে ভাবে- এই মানুষটি কত সরল। বজ্রপাতের ভয়ে আত্মহত্যা করতে পারছে না কি পাগলরে বাবা!
ফারিয়ার ননস্টপ হাসি দেখে রাতুল লাজুক কণ্ঠে বলল, ‹হাসবে না বলছি একদম। চুপ করো।› তবুও ফারিয়ার হাসিতে সিঁড়িঘর মেতে ওঠে। সব অভিমত মুছে ফারিয়া বলল, ছাদে চলো। বৃষ্টিতে ভিজি।› রাতুল উৎফুল্ল হয়ে বলল, ‹সত্যি বলছো তো!
তারপর দুজনে মনের সুখে বৃষ্টিতে ভিজতে ছাদে চলে এল। ওদের রোমাঞ্চকর এই আগমনে যেন শ্রাবণধারা দ্বিগুণ বাড়ল। কি সুন্দর দেখাচ্ছে ঝুমঝুম বৃষ্টির সেই দৃশ্যটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।