Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাশিয়ায় তুরস্কের রফতানি ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

এ বছর বিদেশে ৬০০ কোটি ডলারের প্রকল্প পেয়েছে তুর্কি ঠিকাদাররা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর অনেক দেশ রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং ক্রেমলিনের সাথে তাদের সম্পর্ক কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, তুরস্ক সেই সম্পর্ক আরো গভীর করেছে। এমনকি তারা রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে গর্ব করছে। এদিকে, তুর্কি ঠিকাদাররা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশের বাইরে ৫৯৪ কোটি ডলার মূল্যের মোট ১৫৬টি প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে।
তুরস্কের পরিবহনমন্ত্রী আদিল কারাইসমাইলোগ্লু শুক্রবার টুইটারে একটি পোস্টে রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে গর্ব করেছেন। তিনি মে থেকে জুলাই পর্যন্ত রাশিয়ায় পাঠানো যানবাহনের মাসিক গড় সংখ্যায় ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি সম্পর্কে দেশের মেরিটাইম জেনারেল ডিরেক্টরেটের ঘোষণাটি পুনঃটুইট করেছেন। তুরস্ক এবং রাশিয়া প্রতি মাসে তাদের মধ্যে ৮,২১৩টি যানবাহন পণ্যবাহী জাহাজের মাধ্যমে লেনদেন করেছে - যা জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসিক গড় ৫,২০৮ থেকে বেশি।

অফিসিয়াল তুর্কি পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট বা তুর্কস্ট্যাট অনুসারে, সামগ্রিকভাবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০২২ সালের প্রথমার্ধে রাশিয়ায় তুরস্কের রফতানি ২৯১ কোটি ডলার ছুঁয়েছে। ব্লুমবার্গ বিশ্লেষণ অনুসারে এটি আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আঙ্কারা ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের নিন্দা করলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় অনুমোদন দেয়নি বা দেশটির আকাশসীমা বন্ধ করেনি। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক গভীরতর হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, কারণ তুরস্কের পাঁচটি ব্যাংক রাশিয়ার মির পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার শুরু করেছে।

এদিকে, তুর্কি ঠিকাদাররা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশের বাইরে ৫৯৪ কোটি ডলার মূল্যের মোট ১৫৬টি প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে। সোমবার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মতে, এর আগে বছরের প্রথম সাত মাসে বিদেশে তুর্কি কোম্পানিগুলোকে দেয়া প্রকল্পগুলোর গড় আকার ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলারের। ১৯৭২ থেকে জুলাই ২০২২ এর মধ্যে তুর্কি ঠিকাদাররা ১৩১টি দেশে ১১ হাজারেরও বেশি প্রকল্প হাতে নিয়েছে যার মোট মূল্য ৪৫ হাজার ৯৬০ কোটি ডলার।

২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো ১ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল এবং ২০১৫ সালে তুর্কি কোম্পানিগুলোকে দেয়া চুক্তির মূল্য ২৮৫টি প্রকল্পের সাথে ৮ হাজার ৩৪০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ। ১৯৭২ সাল থেকে তুর্কি কোম্পানিগুলো যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে তার ১৪ শতাংশই ছিল আবাসন প্রকল্প, যা তুরস্কের ব্যবসার প্রধান ক্ষেত্র। ১৩.৩ শতাংশ ছিল মহাসড়ক, সেতু এবং টানেল নির্মাণ এবং ৮.৫ শতাংশ ছিল জ্বালানি প্ল্যান্ট নির্মাণ প্রকল্প।

গত চার দশকে রাশিয়া তুর্কি ঠিকাদারদের জন্য সবচেয়ে বড় বাজার। স্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলো রাশিয়ায় ১৯৭২ থেকে জুলাই ২০২২ এর মধ্যে ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা বিদেশের সব প্রকল্পের মধ্যে ২১ শতাংশ। এর পরে রয়েছে তুর্কমেনিস্তান (৪ হাজার ৯৯০ কোটি ডলার), ইরাক (৩ হাজার ১৭০ কোটি ডলার) ও লিবিয়া (২ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার)। কাজাখস্তান (২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার) এবং সউদী আরব (২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলার) তুর্কি ঠিকাদারদের জন্য অন্যান্য প্রধান বাজার ছিল।
২০২১ সালে, ৪০টি তুর্কি কোম্পানি ইএনআর-এর মর্যাদাপূর্ণ শীর্ষ ২৫০টি আন্তর্জাতিক ঠিকাদার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে, যেখানে ৭৮টি চীনা এবং ৪১টি আমেরিকান সংস্থা এই তালিকায় রয়েছে। শীর্ষ ২৫০ ঠিকাদারদের মোট আন্তর্জাতিক আয় ছিল ৪২ হাজার ৪০ কোটি ডলার এবং এতে তুর্কি কোম্পানির অংশ ছিল ৪.৪ শতাংশ বা ১ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। সূত্র : হুরিয়েত ডেইলি নিউজ, বিজনেস ইনসাইডার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেনের রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ