Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পেলোসির তাইওয়ান সফরে জেগে উঠেছে চীনা জাতিয়তাবাদ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২২, ১০:১৫ এএম

বেইজিংয়ের হুমকি-ধমকি ও সতর্কতা উপেক্ষা করে গত সপ্তাহে তাইওয়ান সফর করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তার এই সফরের মধ্য দিয়ে চীনের জাতীয়তাবাদ নতুন করে জেগে উঠছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- এই সফর চীনের জনগণের কাছে দেশটির শাসকদের জাতীয়তাবাদের ঝান্ডা তুলে ধরার সুযোগ করে দেবে। কারণ, বেইজিং নিজেদের মানুষের কাছে দুর্বল হিসেবে দেখতে চায় না।

পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে স্বশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানের চারপাশে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। মার্কিন জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তার তাইপে সফরের পর থেকে উস্কানিমূলক এই মহড়া চালিয়ে আসছে চীন। গত রোববার পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকার কথা থাকলেও যা এখনো চলমান রেখেছে জিন পিং প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জলবায়ুসহ সবধরনের সহযোগিতা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে বেইংজিং। আর তাইওয়ানকে শাস্তি দিতে দেশটির অঞ্চলটির ওপর চাপিয়ে দিয়েছে একঝাঁক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা।

তবে তাইওয়ানের কৃষিপণ্যের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা এবারই প্রথম নয়, ২০২১ সালে চীন কীটপতঙ্গ পাওয়ার অভিযোগ তুলে আনারস আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল। তবে এ পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।

আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির ২০ তম জাতীয় কংগ্রেস। যেখানে নতুন করে দলটির শীর্ষ পদের দায়িত্ব বুঝে নিবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও পার্টির সভাপতি শি জিন পিং।

জাপানের টোকিও-ভিত্তিক চীন বিশ্লেষক এবং কানাডার ম্যাকডোনাল্ড-লরিয়ার ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো স্টিফেন নাগি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘এটি (পেলোসির তাইওয়ান সফর) তাকে (জিন পিং) একটি বেকায়দা অবস্থানে ফেলে দিয়েছে।’

এই বিশ্লেষক বলেন, জিন পিংকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে হবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে মহড়া চালানোর কারণে অর্থনৈকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেইজিং। সামরিক খরচ ছাড়াও ওই জলসীমা দিয়ে আমদানি-রপ্তানিও বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চীনের অভ্যন্তরে জাতীয়তাবাদী শক্তির কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন জিন পিং। কারণ, জাতিয়তাবাদীরা ‘এক চীন নীতি’ লঙ্ঘন করায় উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পক্ষে। প্রয়োজনে অঞ্চলটিতে সামরিক আগ্রাসন চালানোরও দাবি করছেন তারা। তবে সেই পথে আপাতত না হাঁটলেও মহড়া চালিয়ে তাদের সামাল দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া কোন উপায় নেই বেইজিংয়ের হাতে।

চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবো-তে ব্যবহারকারীরা হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একত্রিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড থেকেও বের হয়ে আসার জন্য চাপ বাড়ছে জিন পিং প্রশাসনের ওপর।

সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীন। তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনের কারণে জলবায়ু চুক্তি শর্ত না মানার হুমকি দিচ্ছে দেশটি। যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক পদক্ষেপকে পক্ষাঘাগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ