মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেনীয় সৈন্যরা আবারও জাপোরিজিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গোলাবর্ষণ করেছে। এর ফলে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানী রাখার স্থান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গতকাল এনারগোদারের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের প্রেস সার্ভিস এ তথ্য জানিয়েছে। এ কেন্দ্রটিতে বিপর্যয় ঘটলে মুক্ত হওয়া ডনবাস এলাকার পাশাপাশি সমগ্র ইউক্রেনই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মৃত্যু হতে পারে হাজারও বেসামরিক নাগরিকের। তারপরেও সেখানে হামলা করে রাশিয়ার ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে কিয়েভের সরকার।
‘রাতে, ইউক্রেনীয় সশস্ত্র ইউনিটগুলো উরাগান এমএলআরএসের ২২০ মিমি রকেট ব্যবহার করে হামলা চালায়,’ তারা রিপোর্ট করেছে। পাওয়ার ইউনিটের কাছে যাওয়ার সময়, রকেটটি সাবমিনিশন (বড় রকেটের ভেতরে থাকা আরও ছোট ছোট রকেট) ছেড়ে দেয়, প্রেস সার্ভিস জানিয়েছে। ‘ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে পারমাণবিক জ্বালানীর জন্য স্টোরেজ সুবিধার এলাকা এবং বিকিরণ পরিস্থিতির কম্পিউটার-সহকারী পর্যবেক্ষণের জন্য স্টেশন অন্তর্ভুক্ত ছিল,’ তারা বলে। ‘প্রশাসনিক ভবন এবং স্টোরেজ সুবিধার সংলগ্ন অঞ্চলগুলি প্রজেক্টাইলের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,’ রিপোর্টে বলা হয়েছে। ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গোলাগুলির ফলে এনারগোদারের জাপোরিজিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এলাকায় যে সমস্ত আগুন লেগেছিল, তা নিভিয়ে দেয়া হয়েছে, জাপোরিজিয়া অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের কাউন্সিল সদস্য ভøাদিমির রোগভ রোববার নিয়েছেন।
ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু কেন্দ্র জাপোরিজিয়া এখানে হামলা হলে বড় বিপর্যয় হতে পারে বলে বারবার দুই দেশকেই সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেখানে একাধিক বার হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সেনারা। জাপোরিজিয়া পরমাণু কেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ইউক্রেনের সরকারি পোষিত সংস্থা এনারগোয়াটম। তারা জানিয়েছে, ‘গত কাল তিনটি হামলা চলেছে এই এলাকায়। একেবারে চুল্লির কাছাকাছি বোমা পড়েছে।’ এনারগোয়াটম জানিয়েছে, এ ভাবে হামলা চললে যে কোনও সময় হাইড্রোজেন চুঁইয়ে বেরোতে শুরু করবে। তেজস্ক্রিয় পদার্থও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাতে আগুন ধরে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
খেরসনে রুশ হামলায় ৪ শতাধিক ইউক্রেনীয় সেনা নিহত : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ শনিবার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, খেরসন অঞ্চলে একটি অস্থায়ী ইউক্রেনীয় সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়ার হামলায় ৪০০ জনেরও বেশি ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। ‘রাশিয়ান এরোস্পেস বাহিনী দ্বারা পরিচালিত বিমান হামলা এবং আর্টিলারি ইউনিট দ্বারা পরিচালিত আক্রমণগুলি ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর ৪৬ তম এয়ারবর্ন ব্রিগেডের অস্থায়ী ঘাঁটিতে আঘাত করে। এতে ৪০০ জনেরও বেশি জাতীয়তাবাদী সেনা নিহত হয়,’ তিনি বলেছিলেন।
কোনাশেনকভের মতে, রাশিয়ার বিমান হামলায় খেরসন অঞ্চলে ইউক্রেনের ৭০ জনেরও বেশি সেনা নিহত হয়েছে। ‘খেরসন অঞ্চলে আন্দ্রেয়েভকা, লোজোভয়ে এবং ডলগোভয়ে বসতিগুলির কাছে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর ৬৩তম যান্ত্রিক ব্রিগেডের ১০৫ তম ব্যাটালিয়নের যুদ্ধ অবস্থানে রাশিয়ান মহাকাশ বাহিনীর উচ্চ-নির্ভুল হামলায় ৭০ জনেরও বেশি জাতীয়তাবাদী নিহত এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছে,’ তিনি যোগ করেছেন।
খারকভ অঞ্চলে ইউক্রেনীয় রকেট লঞ্চার প্লাটুন নির্মূল : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী গত দিনে ওলখা এবং মার্কিন-নির্মিত একাধিক হিমারস রকেট লঞ্চার সিস্টেমে সজ্জিত একটি ইউক্রেনীয় প্লাটুনকে নির্মূল করেছে। ‘ওলখা এবং ইউএস-নির্মিত হিমারস সিস্টেমে সজ্জিত একাধিক রকেট লঞ্চারের একটি ইউক্রেনীয় প্লাটুন খারকভ অঞ্চলের পিয়াতিগোরস্কয় বসতির কাছে ধ্বংস হয়ে গেছে,’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পাঁচটি এমএলআরএস গ্র্যাড প্লাটুনের ফায়ারিং পজিশন, তিনটি প্লাটুন অপারেটিং গভোজডিকা স্ব-চালিত আর্টিলারি মাউন্ট, একটি প্লাটুন অপারেটিং গিয়াটসিন্ট-বি বন্দুক এবং চারটি প্লাটুন অপারেটিং ডি-৩০ হাউইৎজার কামান ধ্বংস করা হয়েছিল।’
ইউক্রেনে ন্যাটোর সরবরাহকৃত ৪৫ টন অস্ত্রশস্ত্র ধ্বংস : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ গতকাল জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র এবং আর্টিলারি সৈন্যরা নিকোলায়েভ অঞ্চলের ৪৫ হাজার টন যুদ্ধাস্ত্র ধ্বংস করেছে। এগুলো ন্যাটো দেশগুরোর দ্বারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সরবরাহ করা হয়েছিল। ধ্বংস হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে একটি বুক-এম ১ মিসাইল লঞ্চার (চাসভ ইয়ার গ্রামের কাছে, ডিপিআর), পাঁচটি গোলাবারুদ ডিপোর পাশাপাশি নিকোলায়েভ অঞ্চলের ভোজনেসেনস্কের কাছে একটি গোলাবারুদ ডিপো ছিল বলে সূত্র জানিয়েছে, যেখানে সম্প্রতি ৪৫ হাজার টন গোলাবারুদ মজুদ রাখা হয়েছিল। এর সবই ন্যাটো দেশগুলো দ্বারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সরবরাহ করা হয়েছিল।
রাশিয়ার সাহায্যে ১ লাখ সেনা পাঠাতে চায় উত্তর কোরিয়া : ইউক্রেনে আক্রমণ জোরদার করার জন্য উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম জং উনের সহায়তার প্রস্তাব বিবেচনা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এক লাখ সৈন্যের বিনিময়ে পুতিন পিয়ংইয়ংকে জ্বালানি ও শস্য দিতে ইচ্ছুক বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। উত্তর কোরিয়া ‘কূটনৈতিক চ্যানেলের’ মাধ্যমে স্পষ্ট করেছে যে, যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ‘মেরামতের’ পাশাপাশি মস্কোর পক্ষে ‘ভারসাম্য বজায় রাখার’ জন্য তারা ইউক্রেনে একটি বিশাল যুদ্ধবাহিনী সরবরাহ করতে প্রস্তুত।
রুশ বার্তা সংস্থা রেগনাম জানায়, দোনবাসের পুতিনপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্কে নতুন এই বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে। সম্প্রতি অঞ্চল দুটিকে ‘স্বাধীন দেশ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন কিম। ক্রেমলিনপন্থী সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া তার ১ লাখ সৈন্যকে ডনবাসে স্থানান্তর করতে প্রস্তুত। এর বিনিময়ে উত্তর কোরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দেশটিকে জ্বলানি এবং শস্য সরবরাহ করা হবে।
মস্কোর শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ইগর কোরোটচেঙ্কো বলেছেন, ‘কিম জং উন যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তা মেনে নিতে আমাদের লজ্জার কিছু নেই। উত্তর কোরিয়ার ১ লাখ স্বেচ্ছাসেবক যুদ্ধে অংশ নিতে প্রস্তুত আছে।’ তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়ার স্বেচ্ছাসেবকরা যদি তাদের আর্টিলারি সিস্টেম, কাউন্টার ব্যাটারি ওয়ারফেয়ারের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার এবং উত্তর কোরিয়ায় তৈরি বৃহৎ ক্যালিবার মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম নিয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে চায়, তাহলে তাদের স্বাগত জানানো উচিত। সূত্র : আল জাজিরা, ডেইলি মেইল, রয়টার্স, তাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।