Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষের কবিতায় ভিন্ন এক রবীন্দ্রনাথ

শহিদুল ইসলাম নিরব | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার প্রিয় কবি। তাঁর ছোট গল্পগুলো ও শেষের কবিতা উপন্যাসটি প্রায় সবটুকু মুখস্থ বলতে পারি। তাঁর শেষের কবিতা যতবার পড়েছি মুগ্ধ হয়েছি। সব সময় নতুন মনে হয়েছে। তিনি একজন নোবেল বিজয়ী কবি। যে বিজয় তাঁর হয়েছিলো ১৯১৩ সালে, গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থটি ইংরেজিতে ‘সং অফারিংস’ (Song Offerings) অনুবাদের জন্যে । কিন্তু যদি তাঁর নোবেল পুরস্কারকে বাদ দিয়েও চিন্তা করা হয় তাহলেও কোনোভাবেই বাংলা সাহিত্যে রবি ঠাকুরের অবদান অস্বীকার করার সাহস কারো নেই বা কোনো যুগে কেউ তা করতেও পারবে না। বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি একমাত্র মহাকাব্য ছাড়া। গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, গান ইত্যাদির প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর আসন পাকা করে তবেই ইহলোক ত্যাগ করেন।
শিলং পাহাড়ের পথে বিপরীতমুখী দুটি গাড়ির পরস্পর আকস্মিক দুর্ঘটনায় পরিচয় হয় বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার অমিত রায় ও লাবণ্যর। নির্জন পাহাড়ের সবুজ অরণ্য ঘেরা দুর্লভ অবসরে দুজন দুজনকে দেখে মুগ্ধ হয়। যার পরিণতি দাঁড়ায় শেষ পর্যন্ত ভালোবাসায়। যেখানে নির্ধারিত ছিল যে লাবণ্য বই পড়বে আর পাশ করবে, এমনি করেই তাঁর জীবন কাটবে। সে হঠাৎ দেখতে পেল সে-ও ভালোবাসতে পারে। আর অমিত যেখানে মেয়েদের কাছে সোনার রঙের দিগন্ত রেখা- ধরা দিয়েই আছে, তবু ধরা দেয় না। রুচির তৃঞ্চা মিটিয়ে কত সুন্দরি মেয়েদের পাশ কাটিয়ে এসেছে এতকাল। সেই বন্দি হলো লাবণ্য প্রেমে। শিলংয়ের পাহাড়ি পথে ঘুরে ঘুরে ওদের বেশ ভালোই সময় কাটে- গান গেয়ে, আবৃত্তি শুনে, পাখি দেখে। প্রকৃতি যেন ওদের ভালোবাসার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে। এমন সময় অমিত লাবণ্যকে বিয়ে করতে অস্থির হয়ে উঠে। কিন্তু লাবণ্যর মন তাতে সায় দেয় না। লাবণ্য ও অমিতের মধ্যে তখন শুরু হয় ব্যক্তিত্বের সংঘাত। অনেক তর্ক-বিতর্ক, মান-অভিমানের পর অমিত লাবণ্যর ভালোবাসা যখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে দুলছে হঠাৎ করেই তখন ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। এবং সেই সময় অমিতের বোন সিসি ও তাঁর বন্ধু কেতকী শিলং এসে উপস্থিত হয়। কেতকীর সঙ্গে বিলেতে থাকার সময় অমিতের একটা গভীর মুগ্ধতার সম্পর্ক ছিল এবং সে সময়টাতে অমিত কেতকীকে ভালোবেসে যে আংটি পরিয়েছিল, লাবণ্যর সঙ্গে অমিতের বিয়ের খবর শুনে কেতকী সে আংটি খুলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শিলং ছেড়ে চেরাপুঞ্জি চলে যায়। অমিত যে আংটিটি লাবণ্যকে পরিয়ে ছিল সেটিও সে খুলে দেয় অমিতের হাতে। অমিত কি করবে ভেবে পায় না। লাবণ্যর পরামর্শে অমিত চেরাপুঞ্জি যায় কেতকীদের ওখানে। কদিন পর ফিরে এসে দেখে লাবণ্য চলে গেছে শিলং ছেড়ে। কোনো ঠিকানা রেখে যায়নি। এক সময় অমিত ফিরে যায় কলকাতায়। তারও কিছুকাল পরে অমিতের সঙ্গে বিয়ে হয় কেতকীর। এর মধ্যে লাবণ্যর একটি চিঠি আসে অমিতের কাছে। (অসমাপ্ত)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেষের কবিতায় ভিন্ন এক রবীন্দ্রনাথ
আরও পড়ুন