Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেরসনের যুদ্ধ ইউক্রেনের জন্য আরো বিপর্যয় আনতে পারে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইউক্রেন তার দক্ষিণের খেরসন ওব্লাস্ট অঞ্চল রাশিয়ার কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এই বিজয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে এবং পরাজয় ইউক্রেনকে বিশাল এলাকা ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারে। যদিও ইউক্রেনের আঞ্চলিক সামরিক গভর্নর দিমিত্রো বাত্রির জানিয়েছেন, যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় বাহিনী খেরসন ওব্লাস্ট সীমান্তের ৪৪টি শহর ও গ্রাম মুক্ত করেছে। তবে, রাশিয়ার সামরিক বিশ্লেষক ভøাদিসøভ সিরিগিন বলেছেন, তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। সিরিগিন বলেন, ‘খেরসন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। একমাত্র প্রশ্ন হল, শহরটি কি কার্যকর ও অক্ষত থাকবে নাকি আমরা মারিউপোলের যুদ্ধের মতো কিছু দেখতে পাব?’

ইউক্রেনের আশাবাদিতা সত্ত্¡েও বিশেষজ্ঞরা খেরসন ওব্লাস্ট আক্রমণকে দেশটির জন্য একটি বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হামলা চালানোর সিদ্ধান্তটি ইউক্রেন এত বড় প্রচেষ্টার জন্য প্রস্তুত কিনা, তা নিয়ে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের এবং কিছু বিশ্লেষকদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করেছে। ডেইলি বিস্ট উল্লেখ করেছে যে, খেরসনে ব্যর্থ হওয়া ইউক্রেনের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে এবং কারণ তার এই ‘মর বা মার’ আক্রমণ পশ্চিমা সহায়তা সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে, যথেষ্ট দ্রুত সহজলভ্য হবে না।

গোয়েন্দা তথ্য বলছে যে, খেরসন ওব্লাস্ট রাশিয়ার সাথে যোগ দেবে কিনা, তা নিয়ে একটি প্রতিকী গণভোট সেপ্টেম্বরের কোনো এক সময় দখলকৃত এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে। একবার রাশিয়া তার বিজিত অঞ্চলগুলোর অধিগ্রহণ সম্পন্ন করলে, সেগুলো পুনরায় দখল করা একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রচেষ্টা হয়ে উঠবে। কারণ, রাশিয়ান সামরিক মতবাদ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়; এমনকি প্রচলিত আক্রমণের বিরুদ্ধেও।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং দেশটির প্রতি মার্কিন সমর্থনের কঠোর সমালোচক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ডগলাস ম্যাকগ্রেগর এমাসের শুরুর দিকে দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভ-এ মতামত দিয়েছিলেন যে, ইউক্রেন তার অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার আশা করতে পারে না এবং তারা আরো বেশি হারাতে পারে। তিনি বলেন, ‘দনবাসের সাথে সাথে খেরসন এবং জেপোরেজাই অঞ্চলের ভবিষ্যত নির্ধারিত হয়ে গেছে। মস্কো ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ান এবং রুশভাষী দুটি শহর খার্কফ ও ওদেসা এবং সংলগ্ন অঞ্চলগুলিকেও সুরক্ষিত করতে পারে।’

এমাসের শুরুতে সিভিরোদোনেৎস্ক এবং লিসাইচানস্ক’র পতনের পর থেকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা শক্ত হয়েছে, তবে রাশিয়া এখনও সুরক্ষিত আঞ্চলিক রাজধানী বাখমুত এবং দোনেৎস্কের শহরগুলির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইএসডব্লিউ) সতর্ক করে বলেছে যে, রাশিয়া সেপ্টেম্বরে পরিকল্পিত গণভোটের আগে দোনেৎস্ক ওব্লাস্টে যতটা সম্ভব জায়গার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।

ম্যাকগ্রেগর ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, এই আক্রমণগুলি যুদ্ধকে গ্রীষ্মব্যাপি প্রলম্বিত করবে। এবং তারপর যদি না, জেলেনস্কি রাশিয়ার সাথে চিরস্থায়ী সংঘর্ষের জন্য বাইডেনের পরিকল্পনায় সম্মতি দেন, তাহলে একটি আলোচনার মাধ্যমে এর নিষ্পত্তি সম্ভব হতে পারে। যদি ম্যাকগ্রেগর সঠিক হন এবং রাশিয়া ওদেসা অধিগ্রহন করে, তাহলে রাশিয়া প্রায় নিশ্চিতভাবেই তার অন্যতম লক্ষ্য ক্রিমিয়া এবং ক্রিমিয়ার সাথে রাশিয়ার দখলকৃত বিচ্ছিন্নতাবাদী রোমানিয় অঞ্চল ত্রান্সনিস্ত্রিয়ার সাথে একটি স্থল সেতু সুরক্ষিত করতে সক্ষম হবে, এবং আরো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সূত্র : দ্য উইক।



 

Show all comments
  • Raihan Afridi ৪ আগস্ট, ২০২২, ৪:১৩ এএম says : 0
    আমেরিকা ও তার মিত্ররা উপর উপর যতই হুংকার ছাড়ুক তাদের পায়ের নিচের মাটি যে সরতে শুরু করেছে তা সচেতন মানুষদের আর বুঝতে বাকি নেই। এখনো সময় আছে পশ্চিমাদের শোষণ নীতি থেকে বের হওয়ার। সৎ উদ্দেশ্যে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময় এসেছে পশ্চিমাদের।
    Total Reply(0) Reply
  • Kanai Lal Bhattacharjee ৪ আগস্ট, ২০২২, ৪:১৪ এএম says : 0
    যুদ্ধ কখনোই ভালো কিছু বয়ে অানে না। বিশ্বের যে কোন অঞ্চলের একটা যুদ্ধ পুরো বিশ্বে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবেই। নগর পুড়লে কি দেবালয় এড়ায়? সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahfuz Bhuiyan ৪ আগস্ট, ২০২২, ৪:১৪ এএম says : 0
    পৃথিবীতে সকল মানব সৃষ্ট দুর্যোগের জন্য দায়ী হচ্ছে পশ্চিমা শক্তি। পশ্চিমাদের উচিত শিক্ষা হওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Nobel Khan ৪ আগস্ট, ২০২২, ৪:১৬ এএম says : 0
    আগে দেশের সব সমস্যা-সংকটের জন্য দায়ী ছিলো বিএনপি-জামাত; আর এখন রাশিয়া এবং ইউক্রেইন!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন-রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ