গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
দীর্ঘদিন ধরে নেতিবাচক খবরের শিরোনামে থাকা অগ্রণী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বিগত দুই মাস ধরে পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ আদায়, নতুন গ্রাহক খোঁজা, পুরনো গ্রাহকদের মাঝে যারা ভালো ব্যবসা করছেন তাদের দ্রুতগতিতে সেবা প্রদানসহ নানা কার্যক্রমে হাত দিয়েছেন ব্যাংকটির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শামস-উল-ইসলাম। যার ফলে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এই ব্যাংকটি।
ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত এমডি দায়িত্ব নেয়ার পরেই ১০০ দিনের একটি কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল ব্যাংকটির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে। পরিচালনা পরিষদের অনুমোদনক্রমে সেই কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে ব্যাংকটি।
১০০ দিনের কর্মসূচির সাফল্য জানা যায় অগ্রণী ব্যাংকের আদায় বিভাগ সূত্রে। শামস-উল-ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পরে গত দুই মাসে প্রায় ১৩শ’ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছেন। যেখানে তার আগের চার মাসে যথাক্রমে আদায় ছিল মে মাসে ১৪৩ কোটি টাকা, জুন মাসে ২০০ কোটি, জুলাই মাসে ২১৫ কোটি টাকা, আগস্ট মাসে ২৩৫ কোটি টাকা। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পরেই দু’মাসে প্রায় দ্বিগুণ আদায় করেছেন। এছাড়াও চলতি প্রান্তিকে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিনগুণ। জুন প্রান্তিকে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল মাত্র ১১০ কোটি টাকা। আর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর দু মাসের দায়িত্ব পালন শেষে শামস-উল-ইসলাম ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা করেছেন প্রায় ৩২০ কোটি টাকা।
ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখা ব্যবস্থাপকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়িত্ব নেয়া পরেই শাখা ব্যবস্থাপকদের বিভিন্ন বৈঠকে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ১০টি ঋণ প্রস্তাব প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করলে নতুন উদ্যোক্তা চাই সাতজন। যদি তা না পারেন তবে ঋণ প্রস্তাব প্রেরণেরই দরকার নেই। যার ফলে শাখা ব্যবস্থাপকরা তরুণ ও ভালো উদ্যোক্তা খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার ক্যারিয়ার শুরু করেছেন অগ্রণী ব্যাংক দিয়ে। ফলে অগ্রণী ব্যাংকের বেশিরভাগ কর্মকর্তা কর্মচারী তার পরিচিত। এমনকি অর্ধেকের বেশি কর্মকর্তাকে নামে চিনেন। ফলে তিনি কোন কর্মকর্তার স্বভাব কেমন তা ভালো করেই জানেন। আর তিনি সিদ্ধান্ত নেন খুব দ্রুত। ফলে ব্যাংকটি এগিয়ে যেতে সময় লাগবে না বলে বিশ্বাস করেন অধিকাংশ কর্মকর্তা।
অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শামস-উল-ইসলাম অর্থনীতির সুষম বন্টনে বিশ্বাসী। তার মতে প্রতি বছর জিডিপির হার বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে না। ফলে তিনি কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য ঋণের সুষম বন্টন চান। তিনি ম্যানেজারদের এই পরামর্শ দিয়েছেন যে, এমন উদ্যোক্তা তৈরি করুন যাকে আপনাদের স্যার বলতে হবে না, তারাই আপনাদের স্যার বলে সম্বোধন করবেন। আর যাদের ঋণ দিয়ে আদায়ের জন্য গিয়ে স্যার বলে সম্বোধন করতে হবে তাদের ঋণ দেয়া কমিয়ে দিন। কারণ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করে আর ব্যাংকাররা টাকার ব্যবসা করে। কোনো গ্রাহককে ঋণ দেয়ার আগে তিনদিন সময় নিয়ে ভাবুন তাকে আপনার পকেটের টাকা হলে ঋণ দিয়ে আদায় করতে পারতেন কিনা?।
অগ্রণী ব্যাংকের নবনিযুক্ত এমডি খেলাপি ঋণ আদায়ের চেয়ে অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে বেশি প্রাধান্য দিতে বলেছেন ম্যানেজারদের। কারণ খেলাপি ঋণের জামানত আছে যা বিক্রি করলে দু’দিন পর হলেও ব্যাংকের টাকা ফেরত আসবে। আর অবলোপনকৃত ঋণ ব্যাংকের হিসাব থেকে বাদ গেছে এই ঋণ আদায় করে দিলে ব্যাংকের তথা সরকারের ভাবমূর্তি বেড়ে যাবে।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক বলেন, ব্যাংকের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখন উন্নতির দিকে। খুব শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে অগ্রণী ব্যাংক।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শামস-উল-ইসলাম বলেন, আমি অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেছি, স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে যদি আমাকে ২৪ ঘণ্টার মাঝে ১৮ ঘণ্টা শ্রমও দিতে হয় তাও দিতে রাজি আছি। আমার মূল লক্ষ্য অগ্রণী ব্যাংক তার ৮০ এর দশকের সুনাম ফিরে পাক। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। যেমন ঋণের সুষম বন্টন, যে এলাকার ডিপোজিট সেই এলাকার লোকজনের মাঝেই ঋণ বিতরণ করার নির্দেশনা দিয়েছি। সর্বোপরি আমাদের চিরতরুণ অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের সহায়তায় খুব শীঘ্রই অগ্রণী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমার বিশ্বাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।