বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঈদের সরকারি ছুটির ৪ দিনে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শিশু নবজাতক সহ ৭০ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ব বৃহত সরকারী এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রোগীদের ভরসা ছিল কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্স। সিনিয়র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বেশীরভাগই হাসপাতালে না আসায় চিকিৎসাধীন ২ শিশু ও ১১ নবজাতক সহ এ বিপুল সংখ্যক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ ছুটি ভোগকারী চিকিৎসকদের বেশীর ভাগই বরিশাল নগরীর স্থায়ী বাসিন্দা। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সিনিয়র চিকিৎসকগন যদি মানবিক বিবেচনায় দিনে অন্তত একবারও হাসপাতালে এসে মুমূর্ষ রোগীদের দেখতেন, তবে হয়ত কিছু মানুষের জীবন রক্ষা সম্ভব হত।
এমনকি ঈদের বন্ধে সিনিয়র চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৮৩ জন । এছাড়া একই সময়ে বেশ কয়েকজন রোগী পালিয়েও গেছেন। তবে এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালে গড় মৃত্যুর হার স্বাভাবিকই আছে। চিকিৎসার অভাবে কোন অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
ভর্তি রেজিস্ট্রার থেকে জানা যায়, গত ৭ জুলাই শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ নবজাতক এবং ৩ জন শিশু সহ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই দিনে নতুন ৩শ ৫১ জন রোগী ভর্তি হলেও চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১শ ৫১ জন। স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র নিয়েছেন আরো ৩২ জন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন ৩৮ জন। পালিয়ে গেছে ৩ জন। চিকিৎসাধীন ছিলো ১ হাজার ৭৩ জন রোগী।
৮ জুলাই ২শ ৯৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও ২শ ২৫ জন ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চিকিৎসাধীন ১ হাজার ৪৩ জনের মধ্যে এদিন ৮ নবজাতক সহ ১৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র নিয়েছেন ৮৩ জন রোগী। অন্য বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন ২৯ জন এবং পালিয়েছেন ১৩ জন রোগী।
ঈদের সরকারি বন্ধের প্রথম দিন ৯ জুলাই হাসপাতালটিতে ৩শ ৪৬ জন রোগী ভর্তি হলেও ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি গেছেন ২শ ৪৫ জন। স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র নিয়েছেন ১শ ১৬ জন। অন্য বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন ২১ জন। চিকিৎসাধীন ১ হাজার ১২ জন রোগীর মধ্যে সেদিন ৫ নবজাতক ও ২ শিশুসহ ১৭ রোগীর মৃত্যু হয়।
ঈদের দিন, ১০ জুলাই হাসপাতালটিতে দুই নবজাতক সহ ৬ জন রোগীর মৃত্যু হয় চিকিৎসাধীন অবস্থায়। নতুন ৩০৫ জন রোগী ভর্তি হলেও ছাড়পত্র দেয়া হয় ১শ ৩৭ জন রোগীকে। তবে স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র নেন আরো ১শ ৬২ জন। অন্য হাসপাতালে যায় ২৩ জন এবং পালিয়ে যায় ২ জন রোগী।
ঈদের পরদিন, ১১ জুলাই হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ নবজাতক সহ ১৪ রোগীর মৃত্যু হয়। এদিন ৪শ ১৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও সুস্থ হওয়ায় ছাড়পত্র দেয়া হয় ১শ ৬৫ জনকে। স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র নেন ১শ ৫ জন। অন্য বেসরকারি হাসপাতালে যান ৩১ জন এবং পালিয়ে যান ৩ জন রোগী।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ঈদের ছুটির ৪ দিনে তার হাসপাতালে গড় মৃত্যুর হার স্বাভাবিকই ছিল। ঈদের বন্ধে মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী ও প্রসূতি, শিশু বিভাগ এবং জরুরী বিভাগ সহ পুরো হাসপাতাল অন্য ধর্মাবলম্বী চিকিৎকদের দিয়ে সচল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়ে কোথাও কোন সমস্যা হয়নি বলেও দাবী করেন তিনি। তবে বৃহত এ হাসপাতালে নিজস্ব চিকিৎসকের মাত্র ২২৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৪৭ জন। ঈদের স্বাভাবিক বন্ধে হাসপাতালের নিজস্ব চিকিৎসকদের তেমন কেউ ছুটি নেয়নি বলে পরিচালক জানান। তবে মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত চিকিৎসকগনের ছুটির বিষয়টি কলেজ কতৃপক্ষের বলে সে বিষয়েঢ কিছু বলতে পারেননি তিনি ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।