Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানি ঘিরে হুমকির মুখে জননিরাপত্তা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের চোরাচালান ও ব্যবহার ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে কুমিল্লায়। চিহ্নিত ক্যাডার বা পেশাদার সন্ত্রাসীই নয়, দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এখন সাধারণ পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। কুমিল্লায় খুন-খারাবি থেকে শুরু করে ছিনতাই, ডাকাতি, দস্যুতা, সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐে ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। কুমিল্লার বেশ ক’টি সীমান্ত রুট ছাড়াও মিয়ানমার হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম থেকে অবাধে আসছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। আবার স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্র বেচাকেনা ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার হচ্ছে। কুমিল্লায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার যে হারে বাড়ছে, ভবিষ্যতে বিষয়টি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
দিন দিন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা বাড়ছে কুমিল্লায়। ক্ষুদ্রাকৃতি বা বহনযোগ্য এসব আগ্নেয়াস্ত্র এখন সন্ত্রাসী, ডাকাত, ছিনতাইকারী থেকে শুরু থেকে রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের হাতেও শোভা পাচ্ছে। কুমিল্লায় থানা পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি গত দশ মাসে দেশি-বিদেশি বিপুল পরিমাণ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র শতাধিক রাউন্ড গুলি, অর্ধশত কার্তুজ উদ্ধারসহ অর্ধশত অস্ত্র ব্যবসায়ী, অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, ডাকাত আটক করেছে। আবার দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান বের করে অস্ত্র ব্যবসায়ীদেরও আটক করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের বেশির ভাগই বিদেশি। কুমিল্লায় অস্ত্রবাজ ও অস্ত্র ব্যবসায়ীর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। অস্ত্র বেচাবিক্রি ছাড়াও একটি চক্র ছিনতাই, সংঘর্ষসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে আগ্নেয়াস্ত্র ভাড়া দিয়ে থাকে। কুমিল্লা নগর ও বাইরের বিভিন্ন এলাকায় এখন তরুণ, যুবক ও রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র শোভা পেয়ে থাকে। ছোট-বড় কোনো ঘটনা ঘটলেই ওদের হাতে দেখা যায় দেশি-বিদেশি পিস্তল, রিভলবার, এলজি, পাইপগানের মতো আগ্নেয়াস্ত্র। সময়ের ব্যবধানে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার এখন ওদের জন্য নিছক তুচ্ছ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত থেকে কুমিল্লার অন্তত ৩০টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঘটছে। ভারতীয় অস্ত্রের পাশাপাশি চীন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে মিয়ানমার হয়ে আসা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এখন কুমিল্লার অস্ত্র ব্যবসায়ীদের নাগালে। আবার স্থানীয়ভাবে দেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে পিস্তল, লোকাল গান বা এলজি ও পাইপগান। দামে কম হওয়ায় দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদাও বেশি।
গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ ১০ মাসে কুমিল্লার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে থানা পুলিশ, র‌্যাব ও ডিবি পুলিশ বিভিন্ন উপজেলা ও নগরীর কয়েকটি এলাকা থেকে নানা ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র, শতাধিক রাউন্ড গুলিসহ অন্যান্য উপাদান উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছেÑ দেশি পিস্তল ছয়টি, বিদেশি পিস্তল ২৯টি, দেশি রিভলবার আটটি, বিদেশি রিভলবার পাঁচটি, লোকাল গান বা এলজি ২০টি, পাইপগান ১৩টি, শার্টার গান দুইটি, রাইফেল ও বন্দুক একটি করে। এ ছাড়াও এসব অস্ত্রের সাথে ১৩৪ রাউন্ড গুলি এবং ৫০টি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
কুমিল্লায় অগণিত অস্ত্রবাজ যেমন রয়েছে, তেমনি অস্ত্র চোরাচালান ব্যবসায় সক্রিয় ২০টিরও বেশি সিন্ডিকেট। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গত ১০ মাসে অর্ধশতাধিক অবৈধ অস্ত্র বহনকারী, বিভিন্ন ঘটনা ও সংঘর্ষে জড়িত অস্ত্রবাজ ও ব্যবসায়ী আটক হয়েছে। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে অস্ত্র চোরাচালান ব্যবসায়ীরা। সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি ও মানবাধিকার সংগঠক আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘কুমিল্লা মূলত ভারত সীমান্ত ঘেঁষা একটি জেলা। এখানকার সীমান্তের চিহ্নিত অস্ত্র চালানের প্রবেশপথগুলো অরক্ষিত থাকার কারণেই ভারত থেকে কুমিল্লার অভ্যন্তরে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অহরহ আসছে। আর মজুদও বাড়ছে। রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক বিভিন্ন ঘটনায় এখন অস্ত্র প্রদর্শন বা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়াটা মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্ত্র চোরাচালানের সাথে জড়িত এখানকার মূল হোতাদের চিহ্নিত করে অস্ত্রবাজ ও ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে তাদের আইনের আওতায় আনতে না পারলে ভবিষ্যতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার জননিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেবে।’
আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে বগুড়ায় ইজতেমা সমাপ্ত
বগুড়া অফিস
মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বগুড়া জেলা ইজতেমা। লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল গোটা ইজতেমা ময়দান। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই জনস্রোত ছিল ইজতেমা মাঠমুখি। নারী পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ মোনাজাতে অংশ নিয়েছিল। ইজতেমা মাঠ ছাড়িয়ে মহাসড়ক এবং আশে পাশের ফাঁকা স্থান, বাড়ি ছাদ, বিভিন্ন স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান চত্বরেও মানুষের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। শনিবার বেলা ১২টায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথমবারের মত জেলা পর্যায়ে ইজতেমা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে বগুড়ায় শুরু হয়েছিল জেলা ইজতেমা। শহরের চারমাথার অদুরে ঝোপগাড়িতে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে ৯ একর জমির উপর তিনদিনব্যাপী এই আঞ্চলিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার ফজর নামাজের পর বয়ান করেন কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বি মাওলানা মালেক, সকাল ১০টায় বয়ান করেন ইঞ্জি. আনিসুর রহমান। সাড়ে ১১টায় বয়ান করেন কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বি মাওলানা ফারুক, তিনিই বেলা ১২টায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। মোনাজাতে দেশ জাতির মঙ্গল কামনাসহ মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবৈধ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ