Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেনের পূর্ব প্রদেশের নিয়ন্ত্রণে রাশিয়ার অগ্রাভিযানের মঞ্চ তৈরি

লুহানস্ককে স্বাধীন ঘোষণা : রুশ সেনাদের অভিনন্দন পুতিনের সেভারস্কের দিকে এগোচ্ছে এলপিআর বাহিনী :: লিসিচানস্কে ২ হাজার ইউক্রেনের সৈন্য ও ১০ দিনে ১৭০ বিদেশী ভাড়াটে সৈন্য নিহত :: খের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব প্রদেশের শেষ ঘাঁটি এখন রাশিয়ার হাতে। রোববার লুহানস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দখল করা প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের জন্য কেবল একটি বড় জনসংযোগকে উৎসাহিত করতে পারে না বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রের উন্নয়নও হতে পারে যা সামনের সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধের জন্য মঞ্চ তৈরি করতে পারে।

ইউক্রেন স্বীকার করেছে যে, তার সৈন্যরা তার যমজ শহর সিভিয়েরোডোনেৎস্ক থেকে প্রত্যাহার করার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে লিসিচানস্ক শহর থেকে প্রত্যাহার করেছে। কিয়েভ বলেছিল যে, পশ্চাদপসরণ ছিল জনশক্তি সংরক্ষণের একটি প্রচেষ্টা, কারণ এটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে, আর মস্কো এটিকে একটি বড় বিজয় বলে ঘোষণা করে।

লিসিচানস্কের পতন সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের শিরোনামকে প্রাধান্য দিয়েছিল, কারণ পুতিন লুহানস্ক দখলের জন্য সেনা এবং ইউক্রেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সাথে এক বিরল টেলিভিশন মুখোমুখি বৈঠক করেন। এটি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রচারিত ভিডিও এবং মহাকাশে রাশিয়ান মহাকাশচারীদের তোলা ফটোতে উদযাপন করা হয়।

ক্রেমলিনের বাহিনী ইতোমধ্যেই প্রতিবেশী দনেটস্কে আরো অগ্রসর হতে চেয়েছিল, যেটি লুহানস্কের সাথে ডনবাস নামে পরিচিত শিল্প অঞ্চল গঠন করেছিল, তাই রাশিয়ান বিজয়ের ভবিষ্যতের জন্য ক্যাপচারের অর্থ কী হতে পারে তার দিকে মনোযোগ ছিল। ভূ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাইকেল এ. হরোভিটজ বলেন, ‘সিভিয়ারোডোনেৎস্ক এবং লিসিচানস্কের ক্ষতি উল্লেখযোগ্য, কিন্তু ইউক্রেনের পশ্চাদপসরণ করার সিদ্ধান্ত কিইভকে কিছুটা সময় দেয় এবং মানবিক ক্ষতি এড়াতে সহযোগিতা করে যা দুটি শহর হারানোর ক্ষতির চেয়েও গুরুতর’। তিনি যোগ করেছেন, ‘ভূমিতে যুদ্ধ এখনও জয় থেকে অনেক দূরে’।

লিসিচানস্কের পতন রাশিয়াকে পূর্বের শিল্প কেন্দ্রস্থলের অর্ধেকের ওপর নিয়ন্ত্রণ দেয় যেখানে কয়েক মাস ধরে তার যুদ্ধ কেন্দ্রীভূত ছিল। লন্ডনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা গবেষণার পরিচালক নীল মেলভিন বলেছেন, যদিও মস্কো এটিকে এমনভাবে বিবেচনা করতে পারে, ইউক্রেনের প্রত্যাহার এখন পর্যন্ত রাশিয়ার জন্য একটি কৌশলগত অগ্রগতির পরিমাণ নয়।

মেলভিন যোগ করেছেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার এবং রাশিয়ার দ্রুত ইউক্রেনের গভীরে ঠেলে দেওয়ার প্রমাণ থাকা দরকার, এ ধরনের দাবির সত্যতা পাওয়ার জন্য। এটিও আসে যখন ইউক্রেন অন্যত্র অগ্রগতি করছে, ধীরে ধীরে দখলকৃত দক্ষিণে একটি পাল্টা আক্রমণের দিকে গড়ছে এবং গত সপ্তাহে কৃষ্ণ সাগরের একটি মূল ফাঁড়ি ছেড়ে যেতে রাশিয়ানদের বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ইউক্রেন কিছু অঞ্চল হারিয়েছে এবং রাশিয়া যাতে উল্লেখযোগ্য গতি গড়ে তুলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে’।
এরপর কী হতে পারে? : মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আক্রমণের আগে আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিল এমন একটি খনিজ-সমৃদ্ধ অঞ্চল ডনবাসের পুরোটা নেওয়া কয়েক মাস ধরে ক্রেমলিনের লক্ষ্য ছিল। সাম্প্রতিক সপ্তাহ পর্যন্ত এর বাহিনী একটি আর্টিলারি ব্যারেজের পেছনে ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি লাভ করেছে। কিন্তু যুদ্ধের শুরুতে বিব্রতকর পরিস্থিতির পর পুতিন এখন সম্ভবত ইউক্রেনে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সামরিক কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে, প্রতিবেশী দোনেৎস্ক প্রদেশে গভীর আক্রমণ চালানোর জন্য লুহানস্কের দখল মস্কোকে আরো শক্ত ঘাঁটি দেবে। কিংস কলেজ লন্ডনের যুদ্ধ অধ্যয়নের অধ্যাপক মাইকেল ক্লার্ক বলেছেন, ‘লুহানস্ক চলে গেছে, কিন্তু রাশিয়া ডনবাস পাবে না যতক্ষণ না এটি ডোনেৎস্কের বাকি অংশ নেয়’।

ইউক্রেনীয় সৈন্যরা সম্ভবত দোনেৎস্কের সেøাভিয়ানস্ক এবং ক্রামতোর্স্ক শহরের দিকে প্রত্যাহার করতে পারে, যেখানে পরবর্তী যুদ্ধ ঘটবে। ক্লার্ক বলেছেন, তারা রাশিয়ান জ্বালানি ও গোলাবারুদের দোকানে আক্রমণ করার জন্য পশ্চিমা সরবরাহকৃত অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ান লাইনের পেছনে আরো গভীরভাবে আঘাত করছে।

মার্কিন ভিত্তিক সামরিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার বলেছে যে, রাশিয়ান বাহিনী সম্ভবত লিসিচানস্ক থেকে মাত্র ১৫ মাইল পশ্চিমে সিভার্সক শহরের দিকে অগ্রসর হবে। এটি আরো বলেছে যে, রাশিয়ানরা সেøাভিয়ানস্ক বা বাখমুত শহরে আরো উল্লেখযোগ্য আক্রমণ চালাতে পারে। সেøাভিয়ানস্কে রোববার ভারী গোলাবর্ষণে ছয় জন নিহত হয়েছে, সম্ভবত রাশিয়ার পরবর্তী টার্গেট ইঙ্গিত করে।
তবে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, পুতিন পরামর্শ দিয়েছেন যে, সৈন্যরা লিসিচানস্কে যুদ্ধ করেছে তারা বিশ্রামের জন্য কৌশলগত বিরতি নিতে পারে এবং ‘তাদের যুদ্ধের ক্ষমতা বাড়াতে পারে’। তবে দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করা আরো দুঃসাধ্য হবে, হরোভিৎজ বলেছেন।

লুহানস্ক স্বাধীন, রুশ সেনাদের পুতিনের অভিনন্দন : ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলে ‘বিজয়ী; হওয়ার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন দেশটির সেনাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। সোমবার এক বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু পুতিনকে এ অঞ্চলে যুদ্ধের অগ্রগতি সম্পর্কে ব্রিফিং দেন। বৈঠকটি রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়। বৈঠকে শোইগু বলেন, ‘১৯ জুন থেকে শুরু করে স্বঘোষিত রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী লুহানস্কের (এলপিআর) পিপলস মিলিশিয়া বাহিনীর ২য় কর্পস ও দক্ষিণের বাহিনীর সহায়তায় রুশ সেনাবাহিনী সাফল্যের সঙ্গে অভিযান চালিয়েছে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী লুহানস্কের সকল অঞ্চলকে স্বাধীন করেছে’।

শোইগু আরো জানান, ‘গোরস্কি কলড্রন’ নামে পরিচিত লিসিচানস্ক ও সেভেরোদনেৎস্ক শহরকে ২ সপ্তাহের মধ্যে ঘিরে ফেলা হয়। তিনি দাবি করেন, যুদ্ধে ইউক্রেনের ৫ হাজার ৪৬৯ সেনা নিহত হয়েছে। লুহানস্কের বীরদের বিশ্রাম নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পুতিন আরো বলেন, ‘পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, পূর্ব ও পশ্চিমের সেনাদলসহ অন্যান্য সামরিক ইউনিটকে এখন তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে’। ‘আমি আশা করি লুহানস্কের মত সবখানেই আমাদের অভিযান সফল হবে’ যোগ করেন পুতিন। পুতিন একইসঙ্গে এলপিআরের মিলিশিয়া বাহিনীকে ‘বীরত্ব’ দেখানোর জন্য প্রশংসা করেন। ‘আমি আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছি’ যোগ করেন পুতিন।

লিসিচানস্কে ২ হাজার ইউক্রেনের সৈন্য নিহত : রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এসময় প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন, লিসিচানস্কের যুদ্ধে প্রায় ২ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত এবং ৫ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিককে মুক্ত করার জন্য একটি আক্রমণ সফল প্রমাণিত হয়েছে। লিসিচানস্ক এবং সেভেরোডোনেটস্কের কাছে গর্স্কি কলড্রনে [ইউক্রেনীয়] বাহিনীকে ঘিরে রাখতে এবং ধ্বংস করতে দুই সপ্তাহ লেগেছিল। শোইগু উল্লেখ করেন, ‘বৃহৎ এলপিআর শহরগুলোর মধ্যে একটি লিসিচানস্কের মুক্তির সাথে গত রোববার অপারেশনটি সম্পন্ন হয়। আক্রমণের সময় ৬৭০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর মোট হতাহতের সংখ্যা ৫,৪৬৯ এ দাঁড়িয়েছে, যার পরিমাণ অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

তার মতে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ১৯৬টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সাঁজোয়া যান, ১২টি বিমান, একটি হেলিকপ্টার, ৬৫টি ড্রোন, ছয়টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, ১৬৬টি ফিল্ড আর্টিলারি টুকরো এবং মর্টার এবং ২১৫টি গাড়ি হারিয়েছে। ‘শত্রুরা লিসিচানস্কে ৩৯টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সাঁজোয়া যান, ১১টি আর্টিলারি টুকরো এবং মর্টার রেখে গেছে’ রাশিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী যোগ করেছেন।

শোইগু আরো বলেন যে, শহরটিকে মাইনমুক্ত করা, মানবিক সরবরাহ এবং বেসামরিক নাগরিকদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে।
সেভারস্কের দিকে এগোচ্ছে এলপিআর বাহিনী : এলপিআর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভøাদিসøাভ দেনেগো সোমবার বলেছেন, লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) বাহিনী ইতোমধ্যেই দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের (ডিপিআর) সেভারস্কে অগ্রসর হচ্ছে।

তিনি রাশিয়ার টিভি চ্যানেল ওয়ানের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এখন আমরা ইতোমধ্যেই সেভারস্কে চলে যাচ্ছি। এটি এলপিআর শহরের সবচেয়ে কাছের শহর, যা লিসিচানস্কের সাথে সাংগঠনিকভাবে যুক্ত। এখন আমাদের পিপলস মিলিশিয়াকে এদিকে অগ্রসর হওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই এখনও সময় হয়নি শিথিল হওয়ার’। ডিনেগো আরো বলেছেন যে, এলপিআর বাহিনীও খারকভ অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রোববার রাশিয়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন যে, কিয়েভের কাছ থেকে শেষ বড় এলপিআর শহর লিসিচানস্ক এবং বেশ কয়েকটি প্রতিবেশী সম্প্রদায় এলপিআরের পিপলস মিলিশিয়ার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা প্রধানের অগ্রাধিকার যেসব কাজ : প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স কলে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নির্ধারিত সমস্ত কাজ সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। রাশিয়ান সামরিক কর্মীদের জীবন ও স্বাস্থ্য এবং বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা শীর্ষ অগ্রাধিকারের কাজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন।

অপারেশনের সম্ভাবনা : প্রতিরক্ষা প্রধান বলেছেন, লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিকের অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করার পরে রাশিয়ান সৈন্যরা তাদের অভিযান বন্ধ করতে যাচ্ছে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘সর্বোচ্চ কমান্ডার-ইন-চিফ-এর নির্ধারিত কাজগুলো সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে’।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য অগ্রাধিকার : শোইগু বলেন, ‘আমাদের জন্য আজকে প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে সামরিক কর্মীদের জীবন ও স্বাস্থ্য এবং বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা’। রাশিয়ান প্রতিরক্ষা প্রধান রাশিয়ান সৈন্যদের ফোকাস করার জন্য কাজ এবং নির্দেশাবলী নির্দিষ্ট করেননি।

১০ দিনে ১৭০ বিদেশী ভাড়াটে সৈন্য নিহত : শোইগু বলেছেন, ‘রুশ সেনাবাহিনী এবং [ডনবাস] জনগণের প্রজাতন্ত্রের ইউনিটগুলোর সফল অগ্রযাত্রার ফলে [ইউক্রেনে] দেশে কাজ করা বিদেশী ভাড়াটে এবং ব্যক্তিগত সামরিক কোম্পানিগুলোর কর্মীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে’। বিশেষ করে, শুধুমাত্র গত দশ দিনেই ১৭০ জন ভাড়াটে নিহত হয়েছে এবং অন্য ৯৯ জন যুদ্ধ অভিযানে অংশ নিতে অস্বীকার করেছে এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড ত্যাগ করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় জুনের মাঝামাঝি রিপোর্ট করে যে, ৩ হাজার ২২১ বিদেশী ভাড়াটে এবং সামরিক বিশেষজ্ঞ ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রয়ে গেছে যখন ইউক্রেনে তাদের প্রবাহ ‘শুধু থেমে যায়নি বরং আসলে বিপরীত পথে চলছে’।

মানবিক দিক : শোইগু বলেছেন, রাশিয়ান সৈন্যরা মুক্ত শহরগুলোর জনসংখ্যাকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে এবং ‘রাশিয়ান সেনাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে শান্তিপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে’। এছাড়াও, মস্কো কালো এবং আজভ সাগরে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা প্রদান করে। শোইগু বলেন, ‘আমরা বেসামরিক সমুদ্রগামী জাহাজ চলাচলের জন্য দুটি মানবিক করিডোর স্থাপন করেছি। মারিউপোল বন্দরের পানিসীমায় খনি বিপদ সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা হয়েছে’। রাশিয়ান সেনা প্রকৌশলীরা মাইন উপস্থিতির জন্য দোনেৎস্ক এবং লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিকের ৩,৭০০ হেক্টর মুক্ত অঞ্চলে চিরুনি দিয়ে ৪৬,৩৭৯টি বিস্ফোরক উন্মোচন ও নিষ্ক্রিয় করেছেন।

খেরসন অঞ্চলে নতুন সরকার গঠন : আঞ্চলিক সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন সোমবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, খেরসন অঞ্চলে একটি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। ‘রাশিয়ান আঞ্চলিক সরকারি সংস্থাগুলোর অভিজ্ঞতা অধ্যয়ন করার পর, খেরসন অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান ভøাদিমির সালদো খেরসন অঞ্চলে একটি নতুন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেন, শুধুমাত্র খেরসন অঞ্চলের বাসিন্দাদের থেকে নয়, রাশিয়ান বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেও সেরা লোকদের এবং পরিচালক নিয়োগ করেন’।

সের্গেই ইয়েলিসিয়েভ যিনি এর আগে রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তিনি মন্ত্রিসভার প্রধান হবেন। তার ডেপুটিদের মধ্যে রাশিয়ান নাগরিক এবং খেরসন অঞ্চলের বাসিন্দারা থাকবেন। খেরসন অঞ্চলটি দক্ষিণ ইউক্রেনে অবস্থিত এবং ক্রিমিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মার্চের মাঝামাঝি বলেছিল যে, রুশ সেনারা এ অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এপ্রিলের শেষ দিকে সেখানে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন গঠন করা হয়। আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ পরে রাশিয়ায় যোগদানের পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

অভিযানকালে প্রয়োজনীয় সব সরবরাহ পাচ্ছে রুশবাহিনী : রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসভ মঙ্গলবার বলেছেন, ইউক্রেনে তাদের বিশেষ সামরিক অভিযানের সময় রাশিয়ান সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় সব সরবরাহ পাচ্ছে।

‘প্রচুর নিষেধাজ্ঞার চাপের মধ্যে চার মাস ধরে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান চলছে। এসময় আমাদের সেনাবাহিনী সমস্ত প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাচ্ছে, কারণ উদ্যোগগুলো তাদের কাজ নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি রাশিয়ান স্টেট ডুমার একটি পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে একথা উল্লেখ করেন। ‘অস্ত্র এবং গোলাবারুদ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রতিরক্ষা শিল্প এবং সহযোগিতার চেইনে জড়িত উদ্যোগগুলোর কার্যকারিতাকে প্রবাহিত করার প্রয়োজন রয়েছে, যা সরকারের সংশোধনীগুলোর লক্ষ্য’। সূত্র : তাস, এনবিসি।



 

Show all comments
  • স্মৃতির পাতা ৬ জুলাই, ২০২২, ৬:২৩ এএম says : 0
    Entire Europe will soon come under Putin rule. US will be packed out of Europe to North America quickly
    Total Reply(0) Reply
  • Muslim Uddin Mizan ৬ জুলাই, ২০২২, ৬:২৩ এএম says : 0
    ইউক্রেনের পরিণতি যা হবার হয়ে গেছে,এ যুদ্ধে রাশিয়া জিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিণতি হবে ভয়াবহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Golam Mostofa Khan ৬ জুলাই, ২০২২, ৬:২৩ এএম says : 0
    আমেরিকার চামচার কঠিন পরিনতি ভোগ করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Morshed Alam ৬ জুলাই, ২০২২, ৬:২৩ এএম says : 0
    আমেরিকা, পশ্চিমারা মুসলিম রাস্ট্রের নিরীহ মাুনষদের যে পরিনতি করেছে তা থেকে সহজেই অনুমেয় কি হতে পারে। কারন, তারা শিখিয়ে গেছে কিভাবে নিরীহদের ধ্বংস করতে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Zakaria MA ৬ জুলাই, ২০২২, ৬:২৪ এএম says : 0
    যাদের কারনে পৃথিবীর এ অবস্থা,তাদের কৃতকর্মের বিচার বিশ্ববাসী কি দেখতে পাবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed Numan ৬ জুলাই, ২০২২, ৬:২৪ এএম says : 0
    ইউরোপ আমেরিকা তাদের ঘটিবাটি ব্যবহার করেও রাশিয়াকে থামাতে পারবে না। যদি আমেরিকার শক্তি থাকতো এতোদিনে রাশিয়াকে কব্জা করে ফেলতো। যদি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে জয়ী হয় তাহলে আমেরিকার কপালে দুঃখ থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেনের রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ