নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বৃষ্টির সহায়তা নিয়েও সেন্ট লুসিয়া টেস্ট পঞ্চম দিনে নিতে পারল না বাংলাদেশ। নুরুল হাসান সোহান ছাড়া আর কেউ দেখাতে পারলেন না লড়াইয়ের মানসিকতা। ৫০ মিনিটের মধ্যে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে দিয়ে অনায়াসে জিতে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফের ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হলো বাংলাদেশ।
গতপরশু রাতে ড্যারেন স্যামি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের পাঁচ ঘণ্টা পর শুরু হয় খেলা। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট পঞ্চম দিনে নিতে আড়াই ঘণ্টায় ৩৮ ওভার কাটিয়ে দিতে হতো সফরকারীদের। এর ধারে কাছেও যেতে পারেনি তারা। তবে সোহানের বিস্ফোরক ফিফটিতে এড়াতে পারে ইনিংস ব্যবধানে হারের চোখ রাঙানি। ৪০ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সোহান। টেস্টে এটি তার তৃতীয় ফিফটি, তিনটিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থানেক ৬০ রান নিয়ে। ১৮৬ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস।
১৩ রানের ছোট লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে কেবল ১৭ বলে। দ্বিতীয় টেস্ট ১০ উইকেটে জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেন্ট লুসিয়ায় অসাধারণ সেঞ্চুরি ও সিরিজে ছয় উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন কাইল মেয়ার্স। ১৪৬ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরাও তিনিই। ২০১৮ সালে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ একইভাবে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হয় বাংলাদেশ। এবার অনেক আশা নিয়ে এসেও সেই ব্যর্থতার বৃত্তেই আটকে থাকল দল। রাখতে পারল না উন্নতির ছাপ। ব্যাটিং, টেকনিক আর মানসিকতা নিয়ে এক গাদা প্রশ্নের জন্ম দিয়ে শেষ করল হতাশায় ভরা টেস্ট সিরিজ।
তবে সেন্ট লুসিয়া টেস্টটা শুধুই আরেকটি হার নয়, সংখ্যার দিক দিয়ে আলাদা একটা তাৎপর্য আছে এর। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের যে এটি শততম হার! ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলল ১৩৪টি ম্যাচ। এর মধ্যে ১০০টিতেই হারল তারা। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১৬টি টেস্টে, ড্র হয়েছে বাকি ১৮টি। ১৩৪ ম্যাচ খেলেই ১০০ হার—টেস্ট ইতিহাসে আর কোনো দলের এত কম ম্যাচ হারের শতকের রেকর্ড নেই।
বাংলাদেশের আগে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ১০০ হারের রেকর্ডটি ছিল নিউজিল্যান্ডের। ৮ ডিসেম্বর ১৯৯৫ সালে শুরু হওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট হেরে ‘শতক’ পূর্ণ করেছিল কিউইরা। ওই সময়ের মধ্যে তারা খেলেছিল ২৪১টি টেস্ট। তার মধ্যে ৩৩টিতে জয় ছিল তাদের। শততম হারের আগে সবচেয়ে বেশি জয়- এমন রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার। ১৮৭৭ সালে ইতিহাসের প্রথম টেস্টের প্রায় ১০০ বছর পর ১৯৭৮ সালে যখন শততম হার আসে অস্ট্রেলিয়ার, এর মধ্যে খেলা ৩৭৪টি টেস্টের ১৭০টিই জিতেছিল তারা।
হারের রেকর্ড গড়া বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল অভিষেক টেস্টেই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ২০০১ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বৃষ্টির সৌজন্যে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম ড্র করেছিল বাংলাদেশ। তবে ওই ম্যাচের পর থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হেরেছিল টানা ২১টি টেস্ট ম্যাচ। টেস্টে টানা হারের রেকর্ড সেটিই। যেখানে বাংলাদেশ এগিয়ে পরিষ্কার ব্যবধানে, এ তালিকায় দুইয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের টানা হারের রেকর্ডটি ১১ ম্যাচের। এ তালিকায় চার নম্বরেও আছে বাংলাদেশ, ২০০৭ থেকে ২০০৮-০৯ মৌসুম পর্যন্ত বাংলাদেশ হেরেছিল ৯টি ম্যাচ। এ ছাড়া দুইবার টানা ৮টি ম্যাচ হারের রেকর্ড আছে তাদের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট লুসিয়া টেস্ট দিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে ধবলধোলাইয়ের রেকর্ডে নিজেদের অব¯’ান আরেকটু ‘পোক্ত’ হলো বাংলাদেশের। এ নিয়ে ৩৫ বার ২ ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ। কাছাকাছি থাকা জিম্বাবুয়ে ২ ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছে ১৮ বার। এমনিতে ৩ ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ খেলে খুবই কম। তবে এখন পর্যন্ত খেলা ৩টি ৩ ম্যাচের সিরিজের ২টিতেই বাংলাদেশ হেরেছে সবকটি ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ২৩৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস: ৪৫ ওভারে ১৮৬ (তামিম ৪, জয় ১৩, শান্ত ৪২, বিজয় ৪, লিটন ১৯, সাকিব ১৬, সোহান ৬০, মিরাজ ৪, ইবাদত ০, শরিফুল ০, খালেদ ০; রোচ ৩/৫৪, আলজেরি ৩/৫৭, ফিলিপ ০/২৩, সিলস ৩/২১, মেয়ার্স ০/২১)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৪০৮ ও দ্বিতীয় ইনিংস : (লক্ষ্য ১৩) ২.৫ ওভারে ১৩/০ (ব্র্যাথওয়েট ৪*, ক্যাম্পবেল ৯*; ইবাদত ০/৯, খালেদ ০/৪)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০ উইকেটে জয়ী। সিরিজ : ২ ম্যাচে ২-০তে জয়ী উইন্ডিজ
ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও সিরিজ : কাইল মেয়ার্স
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।